বাংলার খবর
শিক্ষায় বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে সামিল শিক্ষক-ছাত্ররা, পিপিপি মডেল নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে দাবি শিক্ষামন্ত্রীর

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্যের সমস্ত সরকারি স্কুলের বেসরকারিকরণের খবরে গত কয়েকদিন ধরেই উত্তাল হয়ে উঠেছে রাজ্য। গত তিন দিন ধরেই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রাইভেট পাবলিক পার্টনারশিপ বা পিপিপি মডেলের কথা শোনা যাচ্ছে। এই সংক্রান্ত একটি খসড়াও রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর ইতিমধ্যেই প্রস্তুত করে ফেলেছে বলে জানা গিয়েছে।
তবে বিষয়টির এখনও রাজ্য মন্ত্রীসভার অনুমোদন পাওয়া বাকি রয়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরছে এই খসড়াটি। সেই খসড়া অনুযায়ী, স্কুল ভবন নির্মাণ থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিকাঠামোগত উন্নয়নের ক্ষেত্রে বেসরকারি লগ্নি হতে পারে। বেসরকারি ওই সংস্থা স্কুলগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকা, অশিক্ষক কর্মী নিয়োগের বিষয়টিও দেখবে। শিক্ষাক্ষেত্রে বেসরকারিকরণের প্রতিবাদ উঠেছে। অথচ শনিবার রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু পরিষ্কার জানিয়ে দিলেন শিক্ষাক্ষেত্রে পিপিপি মডেল সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না! তবে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় যে খসড়াটি ঘুরছে, তা ভুয়ো বলেও সরাসরি উড়িয়ে দিতে পারেননি ব্রাত্য বসু। শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ‘কেন পিপিপি মডেল ঘুরছে, আমি জানি না। এটি ভুয়ো কি ভুয়ো নয়, তা পরে জানাব। আমাদের দফতরে এই ধরনের কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও এই নিয়ে আমার কোনও আলোচনা হয়নি।
পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করব কিনা ভাবছি। তিন দিন ধরে বিষয়টি ঘুড়ছে। দেখতে হবে। বিষয়টি নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। এর পিছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। তবে আমরা আমাদের কাজ করে যাব।’ রাজ্য সরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বেসরকারিকরণের বিরুদ্ধে পথে নেমেছে রাজ্যে শিক্ষকদের দুই সংগঠন এবিটি এবং এবিপিটিএ। শনিবার সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে রানী রাসমণি রোড পর্যন্ত মিছিল করে তারা।এবিটি-এর সাধারণ সম্পাদক সুকুমার পাইন জানিয়েছেন, ‘সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে এনজিও এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থার কাছে দিয়ে দেওয়ার যে চক্রান্ত চলছে তার বিরোধিতায় আমরা পথে নেমেছি। এছাড়া ২০২০ জাতীয় শিক্ষানীতিকে অবিলম্বে বাতিল করতে হবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠনপাঠন শুরু করতে হবে। স্কুল ছুটদের পুণরায় স্কুলে ফেরানোর উদ্যোগ নিতে হবে। ২৮ শতাংশ বকেয়া মহার্ঘ্য ভাতা মেটাতে হবে। সর্বোপরি শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার দাবিতে এই মিছিল এবং সভা করা হয়েছে।’ শিক্ষাক্ষেত্রের বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে শনিবার গোলপার্ক থেকে হাজরা পর্যন্ত মিছিল করেছে এসএফআই কলকাতা জেলা কমিটির। তাদের দাবি, বেসরকারিকরণের মাধ্যমে নয়, সরকারি পরিকাঠামোতেই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাকে উন্নত করতে হবে। শিক্ষাব্যবস্থার বেসরকারিকরণের প্রতিবাদে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক দেবাঞ্জন দে।