দেশের খবর
বাংলাদেশে হিংসার ঘটনায় শেখ হাসিনাকে চরমপন্থী বলে আক্রমণ তসলিমার
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দুর্গাপুজোর অষ্টমীর দিন থেকে অশান্ত বাংলাদেশ। বিভিন্ন জায়গায় দুর্গা প্রতিমা ভাংচুর, বিভিন্ন মন্দিরে ভাংচুর, আগুন ধরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি অনেক জায়গায় সংখ্যালঘু মানুষকে মারধর, তাঁদের বাড়ি-ঘর ভাংচুর লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে। এমনকি ইস্কন মন্দিরের এক পুজারিও দুষ্কৃতিদের মারে নিহত হয়েছেন। সংখ্যালঘুদের ওপর এই অত্যাচারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই ভারত-সহ সারা বিশ্বজুড়েই নিন্দার ঝড় বইতে শুরু করেছে। পশ্চিমবঙ্গেও এই ঘটনার প্রতিবাদে সরব হয়েছেন বুদ্ধিজীবী থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দলগুলি।
বিভিন্ন দেশ থেকে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি করা হয়েছে। বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ পথে নেমে প্রতিবাদে শামিল হয়েছেন। বাদ যাননি বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তথা সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন। হিংসার খবর ছড়াতেই ফেসবুক, টুইটার-সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে এই হিংসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন তিনি। এবার তাঁর আক্রমণের কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা নিয়ে তাঁর লেখা ‘লজ্জা’ কাব্যগ্রন্থের প্রসঙ্গ টেনে এনে তিনি বলেছেন, ‘এই ঘটনা বিশ্বের সামনে বাংলাদেশের লজ্জা। বাংলাদেশে বারবারই আক্রান্ত হয়েছেন সংখ্যালঘুরা। কিন্তু কোনও ক্ষেত্রেই তারা আজ পর্যন্ত বিচার পাননি।’ অবিলম্বে হাসিনা সরকারের কাছে সংখ্যালঘু মানুষদের নিরাপত্তা এবং দুষ্কৃতিদের কঠোর শাস্তির দাবী জানিয়েছেন তিনি।
২৮ বছর আগে বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালিদা জিয়া সরকার তাঁর লেখা ‘লজ্জা’ বইটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিল। সাহিত্যিক তসলিমা নাসরিন এদিন হাসিনার উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আপনি যদি নিরপেক্ষ হন, তাহলে লজ্জা বইটি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে দিচ্ছেন না কেন?’ হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাসলিমা। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করে তিনি বলেছেন, ‘ভারতীয়দের অনেকেই বিশ্বাস করেন যে শেখ হাসিনা খুব ভালো এবং উনি নিরপেক্ষতায় বিশ্বাসী। কিন্তু আমি তেমনটা মনে করিনা।
শেখ মুজিবুর রহমানের মেয়ে বলেই হাসিনাকে ভারতীয়রা পছন্দ করেন। হাসিনা সেইসব ইসলামিক চরমপন্থীদেরই শাস্তি দিয়েছেন, যারা তাঁর বিরুদ্ধাচরণ করেছে। হাসিনা আসলে চরমপন্থীদের সাহায্য করেন। কেউ যদি ওঁর বিরুদ্ধাচরণ করেন তাহলেই তাঁকে জেলে যেতে হয়। তাই বেশিরভাগ প্রগতিশীল মানুষ বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যান। তাঁরা হাসিনাকে ভয় পান। ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের সংবিধানে নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার কথা বলেছিলেন হাসিনা। কিন্তু চরমপন্থীদের খুশি করার জন্য তিনি তেমনটা করেননি।’ যদিও এই ঘটনায় বাংলাদেশ সরকার পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে। ইতিমধ্যেই এই হিংসার ঘটনায় পাঁচ দিনে সাড়ে চারশো জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রশাসনকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।