বাংলার খবর
টার্গেট ৩৬! রাজ্যে নতুন ১৯ লোকসভা আসনে শক্তি বৃদ্ধির পরিকল্পনা বিজেপির

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ২০২৪ এর লোকসভা ভোটের প্রস্তুতি ইতিমধ্যেই শুরু করে দিয়েছে দেশের বিরোধী দলগুলো। পিছিয়ে নেই বিজেপিও। কিছুদিন আগেই রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী জানিয়েছিলেন আগামী লোকসভা নির্বাচনে বাংলা থেকে ৩৬ টি আসন জিতবে বিজেপি। অর্থাৎ গতবারের থেকে দ্বিগুণ। গত ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যে ১৮ টি আসন জিতেছিল বিজেপি। তবে আগামী লোকসভা নির্বাচনে কোন ৩৬টি আসনকে টার্গেট করেছে বিজেপি, তা অবশ্য নির্দিষ্ট করে বলতে পারেননি নন্দীগ্রামের বিধায়ক। তবে বিজেপির অন্দরের খবর, শুভেন্দু অধিকারীর বাবা অর্থাৎ সাংসদ শিশির অধিকারীর কেন্দ্র কাঁথিকে বাদ রেখেই আপাতত এগোচ্ছে গেরুয়া শিবির। কারণ খাতায় কলমে এখনও শিশির অধিকারী তৃণমূলেরই সাংসদ।
ইতিমধ্যেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ দেশের অন্যান্য বিরোধী দল গুলোও ২৪ এর নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। পিছিয়ে নেই বিজেপিও। তবে একটু অন্যরকম ভাবে এবং একেবারে অংক কষেই প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি। জানা গিয়েছে, দেশের মধ্যে ১৪৪ টি না জেতা কেন্দ্রকে এবার টার্গেট করেছে বিজেপি। এই সমস্ত কেন্দ্রগুলিতে নিজেদের শক্তি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। শুধু তাই নয়, যে আসন গুলো জেতার জন্য কঠিন, সেগুলোকেও আলাদা করে চিহ্নিত করে বাদ দেওয়া হয়েছে।
২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে গোটা দেশে বিজেপি ৩০৩ আসনে জিতেছিল। তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ থেকে জিতেছিল ১৮টিতে। কিন্তু বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর সেই আসন থেকে তৃণমূল প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহা জেতায় ইতিমধ্যেই আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রটি বিজেপির হাতছাড়া হয়েছে। ব্যারাকপুর থেকে বিজেপির টিকিটে জেতা অর্জুন সিংও সম্প্রতি তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। তবে খাতায়-কলমে তিনি এখনও বিজেপির সাংসদ। তাই বর্তমানে রাজ্যে বিজেপির ১৭ জন সাংসদ রয়েছেন।
আগামী লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের ১৯টি আসনকে টার্গেট করেছে বিজেপি। আর সেই আসনগুলোতে শক্তি বৃদ্ধির জন্য ১৩ জন মন্ত্রীকে নিয়ে একটি দলও তৈরি করা হয়েছে। সেই হিসেবেই রাজ্যে ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনে ৩৬ আসন জেতার লক্ষ্য নিয়েছে বিজেপি।
রাজ্যে মোট লোকসভা আসন সংখ্যা হচ্ছে ৪২ টি। বিজেপির টার্গেট ৩৬ টি হলেও যে ছ’টি কেন্দ্রকে তারা বাদ দিয়েছে সেগুলো হল বহরমপুর, জঙ্গিপুর, মুর্শিদাবাদ, বসিরহাট এবং বারাসত, কাঁথি। তবে রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় মাহাতো জানিয়েছেন, প্রাথমিকভাবে কাঁথিকে বাদ রাখা হলেও, দ্বিতীয় পর্বে কাঁথিকে হয়তো তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
যে ছ’টি আসনকে বাদ রাখা হয়েছে সেই সবকটি আসনে বিজেপি প্রাপ্ত ভোটের হার খুব একটা বেশি ছিল না। মুর্শিদাবাদের তিনটি আসনে কংগ্রেস এবং বাকিগুলোতে তৃণমূলের থেকে তারা অনেকটাই পিছিয়ে ছিল। তবে গত বিধানসভা নির্বাচনে কাঁথি লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত বিধানসভাগুলিতে ভালো ফল করেছিল বিজেপি। সাতটির মধ্যে চারটি পেয়েছিল বিজেপি। কাঁথি উত্তর, কাঁথি দক্ষিণ, ভগবানপুর এবং খেজুরি। বাকি তিনটিতে দ্বিতীয় স্থানে ছিল বিজেপি। তারা সাতটি বিধানসভা মিলিয়ে পেয়েছিল ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯৬ ভোট। সেখানে তৃণমূল পেয়েছিল ৭ লাখ ৬ হাজার ৪৪২টি ভোট।বিজেপির এগিয়ে রয়েছে ২৯ হাজার ১৫৪ ভোট। গত লোকসভা নির্বাচনে কাঁথিতে তৃণমূল পেয়েছিল ৫০.৩০ শতাংশ ভোট। বিজেপি পেয়েছিল ৪২.৪০ শতাংশ ভোট। তৃণমূল প্রার্থী শিশির অধিকারী জিতেছিলেন ১ লাখ ১১ হাজার ৬৬৮ ভোটে।তাই কাঁথিকে যে বিজেপি টার্গেট করবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই।