আন্তর্জাতিক
ব্যাঙ্ক বিক্ষোভ দমন করতে তিন দশক পর চিনের রাজপথে নামল ট্যাঙ্ক

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ছাত্র আন্দোলনকে দমন করতে ৩৩ বছর আগে বেজিংয়ের তিয়ানআনমেন স্কোয়্যারে দেখা গিয়েছিল সাঁজোয়া গাড়ি। তিন দশক পর আবারও চিনের রাজপথে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ট্যাঙ্ক। এবার ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে আমজনতার ক্ষোভকে দমন করতেই পথে নামল ট্যাঙ্ক। এবার চিনের হেনান প্রদেশের রাস্তায় ছুটলো যুদ্ধ ট্যাঙ্ক।
জানা গিয়েছে, এই বছরের এপ্রিল মাস থেকে চিনের হেনান প্রদেশের বাসিন্দারা ব্যাঙ্কে থেকে তাঁদের জমানো কোনও টাকা তুলতে পারছেন না। ব্যাঙ্ক নাকি সব টাকা ফ্রিজ করে রেখেছে বলে তাঁদের দাবি। যা নিয়ে কয়েক মাস ধরেই ক্ষোভে ফুঁসছিল তারা। এবার তারই প্রতিবাদে পথে নেমেছে বিক্ষুব্ধ জনতা। তাদের বিক্ষোভ মিছিলে স্তব্ধ হয়ে যায় হেনান, শ্যানডং প্রদেশের রাজপথ। আর সেই আন্দোলনকে প্রশমিত করতেই চিনের প্রধানমন্ত্রী শি জিনপিঙের নির্দেশে রাজপথে নামল পিপলস লিবারেশন আর্মির যুদ্ধ ট্যাঙ্ক।
সম্প্রতি ব্যাঙ্ক অফ চায়নার হেনান প্রদেশের শাখা ঘোষণা করে, আমানতকারীদের সঞ্চয় লগ্নির উৎপাদন। তাই আমানতকারীরা কোনও ভাবেই তাঁদের গচ্ছিত টাকা তুলতে পারবেন না। আর তাতেই ক্ষেপে যায় চিনবাসী। তারপরই তারা রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। আর সেই বিক্ষোভকে প্রশমিত করতেই ট্যাঙ্ক নামায় চিন সরকার। কিন্তু, চিন সরকার যুক্তি দেখিয়েছে, ব্যাঙ্কগুলো যাতে বিক্ষোভকারীদের হাতে চলে না যায়, সেই কারণেই রাস্তায় ট্যাঙ্ক নামানো হয়েছে।
হেনান প্রদেশের রাজধানী ঝেংঝাউয়ে প্রবল প্রতিরোধের চাপে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ ঘোষণা করেছিল, দফায় দফায় আমানতকারীদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়া হবে। গত ১৫ তারিখ প্রথম দফায় টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু অভিযোগ সেদিন মাত্র কয়েকজনকেই টাকা ফেরত দেওয়া হয়। কিন্তু গোটা ঘটনা নিয়ে অদ্ভুত রকম ভাবে নিশ্চুপ রয়েছে চিনা সংবাদমাধ্যমগুলো। আর তাতেই সকলের সন্দেহ, ব্যাঙ্কের কাছে আদৌ টাকা আছে তো?
অর্থনীতিবিদিরা বলছেন, ২০২২ সালের শুরু থেকেই চিনের অর্থনীতি কিছুটা থমকে গিয়েছে। আর এতে অনেকেই চিনের অবস্থা শ্রীলঙ্কার মতো হওয়ার আশঙ্কা করছেন। চিনের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি প্রকাশ্যে আসে না। কিন্তু এই সমস্ত ঘটনা দেখে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, চিনের অর্থনীতিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। জানা গিয়েছে, জুন পর্যন্ত গত ১০ মাসে সম্পত্তির দাম চিনে ক্রমশ কমেছে। এক ওয়েবসাইট দাবি করেছে, গত বছর থেকেই চিনে রিয়েল এস্টেট সেক্টরের অবনতি হতে শুরু করেছে। শুধু রিয়েল এস্টেটই নয়, চিনে বিদ্যুৎ সংকটের আশঙ্কাও তৈরি হয়েছে। যার ফলে চিনের একাধিক এলাকা দীর্ঘক্ষণ বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকছে। এমনকী, শিল্পাঞ্চলগুলোতেও বিদ্যুৎ থাকছে না। যার জেরে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।