বাংলার খবর
শীতের হাত থেকে পথ কুকুরদের বাঁচাতে অভিনব উদ্যোগ নিলেন রায়গঞ্জ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী স্বপ্না পোদ্দার

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কথায় বলে, মানুষ চাইলে কী না পারে। ফেলনা প্লাস্টিকের বোতল দিয়েই পথ কুকুরদের আস্তানা বানালেন রায়গঞ্জ পুরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্বপ্না পোদ্দার। স্বপ্না নিজেই একজন কলেজ ছাত্রী। প্লাস্টিক হল পরিবেশ দূষণ।
তাই স্বপ্না নিজেই প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে একটি ঘর তৈরি করলেন। যাতে শীতের সময় পথ কুকুররা কষ্ট না পায়। প্লাস্টিকের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে দূষণ যখন দিনের পর দিন বাড়ছে, তখন সেই ব্যবহার হয়ে যাওয়া প্লাস্টিকের বোতল গুলোকে পুণরায় ব্যবহার করেই পথ কুকুরদের জন্য ঘর বানানোর অভিনব উদ্যোগ নেন স্বপ্না। এমন উদ্যোগকে সফল করতে তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে এক পশুপ্রেমী সংস্থা ‘পিপলস ফর অ্যানিম্যাল’। শীতের রাতে পথ কুকুরদের খুব কষ্ট হয়। নতুন বাচ্চাসহ তারা বিপদে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ায়। তাই এমন উদ্যোগ বলে জানিয়েছেন স্বপ্না।
শনিবার রায়গঞ্জ তুলসীপাড়ার বাড়িতে বসে স্বপ্না বলেন, ‘প্লাস্টিকের কারণে পরিবেশ দূষণ কমাতে এবং এই শীতের রাতে পথ কুকুরদের কথা মাথায় রেখেই আমি এই উদ্যোগটা নিয়েছি। শীতে মানুষই ঘরে ঠিক করে থাকতে পারে না। আর এই পথ কুকুরগুলো থাকবে কিভাবে! কুকুরদের জন্য যতটা পারি সাহায্য করার চেষ্টা করব। এখন প্লাস্টিকের বোতল দিয়ে ঘর বানিয়েছি। যাতে রাস্তার কুকুরের শীতে কষ্ট না হয়। তাছাড়া প্লাস্টিক পরিবেশ দূষণ করে। তাই এই প্লাস্টিকের বোতলগুলিকে কাজে লাগিয়ে ঘর তৈরি করেছি।’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভিন রাজ্যের এক কিশোরীর এই উদ্যোগ দেখেই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন রায়গঞ্জ কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী স্বপ্না। ভবিষ্যতে তিনি আরও এই ধরণের ঘর তৈরি করতে চান বলেও জানিয়েছেন। এবং তাঁর এই উদ্যোগকে সফল করতে অনেকেই এগিয়ে এসেছেন বলেও জানিয়েছেন স্বপ্না।
বলেছেন, ‘এরকম আরও অনেক ঘর দ্রুত আমি তৈরি করছি। এর জন্য একটু অর্থের প্রয়োজন। তবে আমার এই উদ্যোগের কথা জেনে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। তারাই এই প্লাস্টিকের বোতল পেতে সাহায্য করছেন। কিন্তু এলাকায় এই ধরণের কুকুরের ঘর বসানোর জন্য এলাকাবাসীদের অনুমতির প্রয়োজন। অনেকেই অনুমতি দিচ্ছেন, আবার অনেকেই দিচ্ছেন না। তাই এই ব্যাপারে প্রশাসনের সাহায্য পেলে খুবই ভালো হয়। আমরা আগে পরীক্ষামূলকভাবে বিভিন্ন এলাকায় এরকম কয়েকটি ঘর লাগাব।
তাতে কুকুরগুলো থাকতে পারছে কিনা সেটা দেখেই পরবর্তীকালে এইরকম ঘরের সংখ্যা বাড়ানো হবে।’ ওই পশুপ্রেমী সংস্থার সভাপতি গৌতম তান্তিও স্বপ্নার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে সব রকম ভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দিয়েছেন। স্বপ্নার এই উদ্যোগকে সফল করতে তিনি রায়গঞ্জ পৌরসভার সমস্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, চেয়ারম্যান এবং এলাকার মানুষদের সঙ্গেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন। প্রত্যেক ওয়ার্ডের নির্দিষ্ট কোনও একটি এলাকায় শীতের হাত থেকে বাঁচাতে পথ কুকুরদের জন্য এই ঘর বসানো যায় কিনা, সেই ব্যাপারে তাঁরা প্রশাসনিক স্তরেও কথা বলবেন বলে জানিয়েছেন।