খড়্গপুর আইআইটি থেকে অধ্যাপিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, ভাগ্নির মৃত্যুতে হতবাক মন্ত্রী
Connect with us

বাংলার খবর

খড়্গপুর আইআইটি থেকে অধ্যাপিকার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, ভাগ্নির মৃত্যুতে হতবাক মন্ত্রী

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: এবার মানসিক অবসাদের শিকার হয়ে আত্মঘাতী হলেন খোদ রাজ্যের মন্ত্রীর ভাগ্নি! বুধবার পশ্চিম মেদিনীপুরের খড়্গপুর আইআইটির ক্যাম্পাসের কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হল সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রের ভাগ্নি স্বাগতা ভট্টাচার্যের (৩৬) ঝুলন্ত দেহ। গলায় দড়ি দিয়েই আত্মঘাতী হয়েছেন তিনি।

গত নভেম্বরে খড়্গপুর আইআইটিতে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি হাসপাতালের অ্যানাটমি বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। চিকিৎসক তথা রাজ্যের মন্ত্রীর ভাগ্নির এই চরম পরিণতিতে শোকস্তব্ধ গোটা খড়্গপুর শহরের চিকিৎসক মহল। কী কারণে স্বাগতা আত্মহত্যা করলেন, তা স্পষ্ট নয়। তবে মানসিক অবসাদের কারণেই তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। ভাগ্নির এই করুণ পরিণতির কথা জানতে পেরেই সেখানে ছুটে যান মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র। গোটা ঘটনায় তিনিও হতবাক।

স্বাগতার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুকের রথনালি এলাকায় হলেও কর্মসূত্রে তিনি প্রেমবাজারের আইআইটি আবাসনের বিআর-৯ নম্বর কোয়ার্টারে থাকতেন। বুধবার সকালে সেখান থেকেই স্বাগতার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে খড়্গপুর থানার পুলিশ। মৃতদেহ পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তের জন্য। হাসপাতালে আসেন মৃতার ভাই সায়ন্তন, পিসিমা সোমা ভট্টাচার্য, খড়্গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকার, খড়্গপুর হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান হেমা চৌবে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তমলুকের বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্রর ভাগ্নি স্বাগতার বাবা ভবানী ভট্টাচার্যও পেশায় একজন চিকিৎসক। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বাগতার বিয়ে হয়েছিল। পরে পারিবারিক বিবাদে স্বামীর সঙ্গে তাঁর বিচ্ছেদ হয়। কলকাতার পিজি হাসপাতালে তিন বছর কাজ করার পর সম্প্রতি খড়্গপুরে এসেছিলেন তিনি। আইআইটির কোয়ার্টারে মা তপতী ভট্টাচার্যকে নিয়ে থাকতেন স্বাগতা। বুধবার সকালে বাজারে গিয়েছিলেন তপতী। ঘর ফাঁকা পেয়ে তখনই আত্মহত্যা করেন স্বাগতা। তাঁর মা বাজার থেকে ফিরে এসে দেখেন ঘরের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ। অনেক ডাকাডাকির পরও মেয়ের কোনও সাড়া না পাওয়ায় মোবাইলে ফোনও করেছিলেন। স্বাগতা ফোন না তোলায় পড়শিদের ডাকেন তপতী। খবর দেওয়া হয় ক্যাম্পাস চত্বরের হিজলি ফাঁড়িতেও। পুলিশ এসে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে গলায় ওড়নার ফাঁস দেওয়া অবস্থায় স্বাগতার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়। মৃতদেহ উদ্ধার করে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় পুলিশ।

স্বাগতার এক সহকর্মী জানিয়েছেন, মাসখানেক ধরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। সেই কারণেও আত্মহত্যা করে থাকতে পারেন তিনি। ভাগ্নির অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে সেচমন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্র বলেছেন, ‘এই ঘটনা আমার কাছে অত্যন্ত বেদনার এবং মর্মান্তিক। অধ্যাপিকা হিসাবে আমার ভাগ্নির সুনাম ছিল। পিজি থেকে এমবিবিএস এবং এমডি পাশ করেছিল। ওখানেই তিন বছর কাজ করার পর খড়্গপুর আইআইটিতে যোগ দেয়। হঠাৎ করে এমনটা হওয়ার কোনও কারণ খুঁজে পাচ্ছি না। কোনও মানসিক অবসাদ ছিল না কি না, জানার চেষ্টা করব। আইআইটি কর্তৃপক্ষ ও বোনের সঙ্গেও কথা বলব। ওদের বাড়িতে আমার যাতায়াত একটু কম ছিল। তবে ওর বিয়েতে গিয়েছিলাম। সাময়িক ভাবে কোনও অবসাদ তৈরি হয়েছিল কি না, তা বোঝা মুশকিল। গত ভাইফোঁটায় যখন ওর মায়ের কাছে ফোঁটা নিতে গিয়েছিলাম তখন ওর সঙ্গেও কথা হয়েছিল। কখনই মানসিক অবসাদের কথা জানতে পারিনি। কোথা থেকে কী যে হয়ে গেল, কিছুই বুঝতে পারছি না।’

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.