বাংলার খবর
বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজা থেকে গ্রেফতার সুকান্ত মজুমদার, আনা হল লালবাজারে

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বিক্ষোভ আন্দোলনে উত্তপ্ত হাওড়ায় যাওয়ার পথে বিদ্যাসাগর সেতুর টোলপ্লাজা থেকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এদিন নিউটানের বাড়ি থেকে বেরনোর সময় তাকে বাঁধা দিয়েছিল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেটের আধিকারিকরা। তারপর দুপুর ২টো নাগাদ তিনি উলবেড়িয়ার অগ্নীদগ্ধ পার্টি অফিস পরিদর্শনে বের হন। কিন্তু প্রথমে তাঁকে SSKM হাসপাতের কাছে আটকায় পুলিশ। সেইখান থেকে কিছুটা পায়ে হেঁটে যাওয়ার পর আবার গাড়িতে ওঠেন তিনি। আগে থেকেই টোল প্লাজার কাছে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল। উপস্থিত ছিলেন সদর ও নর্থ ডিভিশনের ডিসি। গাড়ি বিদ্যাসাগর সেতুর টোল প্লাজায় পৌঁছালেই সুকান্ত মজুমদারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁর সঙ্গে থাকা বিজেপি কর্মীদেরও গ্রেফতার করে পুলিশ। পুলিশের গাড়িতে করেই তাঁকে লালাবাজারে নিয়ে আসা হয়। গ্রেফতার করা হয় পুরশুড়ার বিজেপি বিধায়ক বিমান ঘোষ ও আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালকেও। এরপরই সুকান্ত মজুমদারকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শহর জুড়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। লালবাজারে গেটের সামনেও বিক্ষোভ দেখান বিজেপি সমর্থকরা।
বিক্ষোভ-আন্দোলনে উত্তপ্ত হাওড়া যাওয়ার জন্য শনিবার সকালেই বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার নিউটাউনের বাড়ি থেকে বেরোতে গেলে বাধা দেয় পুলিশ। বিজেপি কর্মীরা তাঁকে বাড়ি থেকে বার করে নিয়ে এলেও পুলিশ তাঁর কনভয় আটকে দেয়। এরপরই বিধান নগর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে প্রথমে বচসা তারপরে রীতিমতো হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন বিজেপি কর্মী-সমর্থক এবং সুকান্ত মজুমদারের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা। শেষ পর্যন্ত দুপুর দু’টো নাগাদ কনভয় নিয়ে হাওড়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন সুকান্ত মজুমদার।
প্রথমে সকাল ১১টায় নিউটাউনের বাড়ি থেকে বেরিয়ে হাওড়ার উলুবেড়িয়ায় যাওয়ার কথা ছিল সুকান্ত মজুমদারের। তার আগেই পুলিশের পক্ষ থেকে তাঁকে জানানো হয় তিনি যেতে পারবেন না। তাঁর বাড়ির সামনে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে দেওয়ার পাশাপাশি মোতায়েন করা হয় পুলিশ। সেই নির্দেশকে উপেক্ষা করেই সুকান্ত মজুমদার বাড়ি থেকে বেরোতে গেলে পরিস্থিতি জটিল হয়ে ওঠে।
সুকান্ত মজুমদার অভিযোগ করেন, ‘আমি হাওড়া যেতে চাই। কিন্তু পুলিশ আমাকে বাড়িতে আটকে দিয়েছে। পুলিশ দলদাসে পরিণত হয়েছে। আমাকে আটকে দেওয়ার কোনও কারণ দেখাতে পারেনি পুলিশ। বলছে হাওড়ায় ১৪৪ ধারা জারি রয়েছে বলে আমাকে যেতে দেবে না। কিন্তু আমার বাড়িতো নিউটাউনে। হাওড়া থেকে অনেক দূরে। আমি যখন সকাল ১১ টায় বাড়ি থেকে বেরোতে গিয়েছিলাম তখন পুলিশ আমাকে আটকে দেয়। পুলিশ কোনও কাগজ বা লিখিত নির্দেশ দেখাতে পারেনি। কেন আমাকে গৃহবন্দি করে রাখতে চাইছে, বুঝতে পারছি না।’ পুলিশ তাঁকে হাওড়া যাবেন না বলে মুচলেকা দেওয়ার কথা বলেছিল বলে দাবি করেছেন সুকান্ত। এরপরই তিনি রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে সরব হয়ে বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী তিনদিন ধরে কোনও ব্যবস্থা নেননি। প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি প্রথমেই শক্ত হাতে পদক্ষেপ নিলে এরকম পরিস্থিতি তৈরি হত না। ঝাড়খন্ডেও প্রতিবাদ হচ্ছে। কিন্তু সেখানে পুলিশ প্রথম থেকেই কড়া পদক্ষেপ নেওয়ায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি।’
শনিবার সকালে উলুবেড়িয়ার মনসা তলায় অগ্নিদগ্ধ পার্টি অফিস পরিদর্শনে যান বিজেপির সর্বভারতীয় সহসভাপতি দিলীপ ঘোষ। সেখানেই তাঁর সঙ্গে যাওয়ার কথা ছিল রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এবং প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালের। সেখানে যাওয়ার পথেই বিদ্যাসাগর সেতুতে ওঠার মুখে বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেওয়ালকেও আটকে দেয় পুলিশ।