বাংলার খবর
৪-৬ সপ্তাহ নির্বাচন পিছনো যায় কিনা, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমিশনকে জানানোর নির্দেশ হাইকোর্টের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজল: রাজ্যের উদ্বেগজনক করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে ৪ কর্পোরেশনের ভোট চার থেকে ছয় সপ্তাহ পিছনো যায় কিনা- সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনকে জানানোর নির্দেশ দিল প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি অজয় কুমার মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ।
শুধু তাই নয়, ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে বলেও শুক্রবার জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে ভোট পিছিয়ে দেওয়া বা বন্ধ করার ক্ষমতা কার আছে, সেই নিয়ে টানাপোড়েনে জড়িয়ে পড়ে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে কমিশনের কোর্টে বল পাঠিয়ে দাবি করা হয় ভোট পিছিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের। আবার কমিশনের পক্ষে থেকে দায় চাপানো হয় রাজ্য সরকারের ঘাড়ে। সেই নিয়ে গতকালের শুনানিতেই দুই পক্ষকেই তিরস্কৃত করেছিলেন বিচারকরা। প্রধান বিচারপতি রীতিমতো বিস্ময় প্রকাশ করে বলেছিলেন, ‘আইন তৈরি হয়েছে ২৭ বছর।
তারপরও দুই পক্ষের কারও নিজেদের অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা নেই। ব্যাপারটা খুবই বিস্ময়কর।’ কিন্তু শুক্রবারে শুনানিতে, ২০১৮ সালে সুপ্রিমকোর্টে ভারতী রেড্ডি বনাম কর্ণাটক রাজ্য সরকার এবং অন্যান্যদের মামলার উদাহরণ টেনে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি পরিষ্কার জানিয়ে দেন ভারতীয় সংবিধানের ২২৬ ধারা অনুযায়ী ভোট পিছিয়ে দেওয়ার বা স্থগিত করার ক্ষমতা নির্বাচন কমিশনের আছে। নির্দেশে আরও বলা হয়েছে, মামলাকারী আইনজীবীরা যাবতীয় নথি কমিশনে জমা করতে পারেন। অবশ্যই যদি কমিশন সেটি চায়। অর্থাৎ কোথায় কী কোভিড পরিস্থিতি, কোন জেলায় কী অবস্থা, তা মামলাকারীরা কমিশনের সামনে তুলে ধরতেই পারেন।
এবং আদালত শুক্রবার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, পুরভোট মামলার নিষ্পত্তি হয়ে হয়েছে। তাই আদালতকে জানানোর আর বিশেষ কিছু প্রয়োজন নেই। গোটা বিষয়টি নিয়ে এবার নির্বাচন কমিশনই সিদ্ধান্ত নেবে। আগামী ২২ জানুয়ারি চন্দননগর, আসানসোল, শিলিগুড়ি এবং বিধান নগর পুরসভার ভোট। উদ্বেগজনক করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভোট হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যে কোভিডবিধি বেঁধে দেওয়া হয়েছে, তা কোনও রাজনৈতিক দলই মানছে না বলে অভিযোগ ওঠে। তাই বিভিন্ন মহল থেকে নির্বাচন বন্ধের দাবি উঠতে থাকে। এই চার কর্পোরেশনের ভোট পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন বিমল ভট্টাচার্য।
সেই মামলার শুনানিতেই নির্বাচন ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ অর্থাৎ এক থেকে দেড় মাস পিছিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশনকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিল আদালত। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে রাজ্য নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত না নিলে, আদালত হস্তক্ষেপ করবে। এখন দেখার নির্বাচন পিছনোর ব্যাপারে কী সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। তবে পুরভোট নিয়ে হাইকোর্টের নির্দেশের পরই তৎপরতা শুরু হয়েছে কমিশনে। আজই আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন কমিশনের কর্তারা। ভোট পিছনো নিয়ে আগামিকাল, শনিবার সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।