বাংলার খবর
প্রেমিকার অন্যত্র বিয়ে ঠিক হতেই হায়দরাবাদে আত্মঘাতী প্রেমিক, উত্তেজনা ডোমজুড়ে
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রেমিকার বিয়ে অন্যত্র ঠিক হয়ে যাওয়ায় অবসাদে আত্মঘাতী প্রেমিক। সোমবার রাতে প্রেমিক জাহিরুদ্দিন শেখ (২৭) হায়দরাবাদে আত্মহত্যা করেন। এই খবর রাতেই ডোমজুড়ের কোলড়া মধ্যপাড়ায় প্রেমিকের বাড়িতে পৌঁছায়। এরপর প্রেমিকের বাড়ির লোকজন এবং গ্রামবাসীরা প্রেমিকার বাড়িতে চড়াও হয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় বলে অভিযোগ। বাদ যায়নি স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানের বাড়িও। পরে ডোমজুড় থানার পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় প্রেমিকের বাড়ির লোকজন ডোমজুড় থানায় মেয়ের দাদার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করলে পুলিশ আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা শুরু করেছে।
ডোমজুড়ের কোলড়া মধ্যপাড়ার বাসিন্দা শেখ জাহিরুদ্দিনের সঙ্গে পাশের গ্রাম নতিবপুরের পারভিন খাতুন (২০) এর দীর্ঘদিনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু গত কয়েক মাসে তাঁদের সম্পর্কে চিড় ধরে। কর্মসূত্রে জাহিরুদ্দিন হায়দরাবাদে একটি সোনার দোকানে কাজ করতেন। সেখান থেকে মাঝে মাঝে পারভিনের সঙ্গে ফোনে কথাও বলতেন। এই নিয়ে মেয়েটির দাদা শেখ সফিউদ্দিন আপত্তি জানায় বলে অভিযোগ। তিনি ফোনে জাহিরুদ্দিনকে নানাভাবে হুমকি দিতেন, যাতে তাঁর বোনের সঙ্গে তিনি কোনও সম্পর্ক না রাখেন।
গত রবিবার পারভিনের পরিবারের লোকজন তাঁর অন্যত্র বিয়ে ঠিক করেন। বিয়ের কেনাকাটাও শুরু করে পরিবার। এই খবর জাহিরুদ্দিনের কাছে পৌঁছালে সোমবার রাতেই সে নিজের ফ্ল্যাটে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করেন বলে জানা গিয়েছে। তাঁর মৃত্যুর খবর গ্রামে চাউর হতেই জাহিরুদ্দিনের পরিবারের লোকজন এবং গ্রামবাসীদের একাংশ পারভিনের বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর চালায়। এমনকি বিয়ের জন্য তৈরি সোনার গয়না, কাপড়-জামা এবং টাকাপয়সা লুঠ করে নেওয়া হয়। এমনকী,গ্যাস সিলিন্ডার খুলে বাড়িতে আগুন লাগানো হবে বলে হুমকি দেওয়া হয় বলেও ছেলের বাড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ডোমজুড় থানার পুলিশ। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরপরই গ্রামবাসীরা চড়াও হয় কোলড়া এক নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানের বাড়িতে। সেখানে ইটপাটকেল ছোড়া হয়। বাড়ির পাশাপাশি স্কুটারে ভাঙচুর করা হয় বলেও অভিযোগ। সেখানেও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। জাহিরুদ্দিনের পরিবারের লোকজন পারভিনের দাদা শেখ শামসুদ্দিনের বিরুদ্ধে ডোমজুড় থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ একটি আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলা শুরু করেছে।
পারভিনের মা জানিয়েছেন, তাঁদের মেয়েকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করতেন জাহিরুদ্দিন। তাই গত রবিবার অন্য জায়গায় মেয়ের বিয়ের পাকা দেখা হয়। বাড়িতে সোনার গহনা এবং দামি কাপড় কেনাকাটা করে রাখা ছিল। সোমবার রাতে তাঁদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় জাহিরুদ্দিনের পরিবারের লোকেরা। তবে জাহিরউদ্দিনের পরিবার পারভিনের সঙ্গে তাঁদের ছেলের সম্পর্ক ছিল বলেই দাবি করেছেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, দু’জনের মধ্যে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বিয়ে অন্যত্র ঠিক হয়ে যাওয়ায় অবসাদে আত্মহত্যা করেছেন জাহিরুদ্দিন। স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান জানিয়েছেন, এটা একেবারে ব্যক্তিগত ব্যাপার। তিনি চেয়েছিলেন বসে মিটিয়ে দিতে। কিন্তু যেভাবে তাঁর বাড়ি, গাড়িও ভাঙচুর করা হয়েছে, তার জন্য তিনি ডোমজুড় থানায় অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন।