বাংলার খবর
চোখের জল, গান স্যালুটে চিরবিদায় নিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: চোখের জল, গান স্যালুটে চিরবিদায় নিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তাঁর এই আকস্মিক প্রয়াণ সবক্ষেত্রের মানুষ, ভক্ত, গুণমুগ্ধ এমনকি শত্রুদের মনকেও নাড়া দিয়ে গেল। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী সকাল ১০টা থেকে রবীন্দ্র সদনেই রাখা ছিল সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের দেহ।
দলীয় কর্মী, সমর্থকদের পাশাপাশি, বাম, কংগ্রেস, বিজেপি- সব দলের নেতৃত্বরাই হাজির হয়েছিলেন। রবীন্দ্র সদনে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে গেলেন বিজেপির দিলীপ ঘোষ, নিশীথ প্রামাণিক, রাহুল সিনহা, জিতেন্দ্র তিওয়ারি-সহ একাধিক নেতা। বামেদের পক্ষ থেকে মালা দিয়ে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করলেন, সূর্যকান্ত মিশ্র, সুজন চক্রবর্তী, রবীন দেব। তেমনি মদন মিত্র, অতীন ঘোষের মতো সহকর্মীরাও শ্রদ্ধা জানালেন। শ্রদ্ধা জানাতে রবীন্দ্র সদনে গিয়েছিলেন শতাব্দী রায়। বন্ধ, সহকর্মীকে শেষবারের মতো দেখতে বেলা পৌনে ১টার সময় রবীন্দ্র সদনে পৌঁছেছিলেন মুনমুন সেন।
শায়িত সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতেও দেখা গেল তাঁকে। রাজনীতির পাশাপাশি খেলার ময়দানের সঙ্গেও তাঁর একটা ঘণিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল। সময় পেলেই মোহনবাগানের খেলা দেখতে মাঠে চলে যেতেন। তাই এদিন ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগান ক্লাবের পক্ষ থেকেও মালা ও ক্লাবের পতাকা দিয়ে সম্মান জানানো হয় সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে। এরপর দুপুর দু’টো নাগাদ তাঁর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বিধানসভায়। সেখানে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী সহ তৃণমূল ও বিজেপি বিধায়করা শেষ শ্রদ্ধা জানান প্রয়াত মন্ত্রীকে। বিধানসভায় আধঘণ্টা রাখার পর তাঁর নিথর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় বালিগঞ্জের বাড়ি এবং প্রাণের প্রিয় ক্লাব একডালিয়া এভারগ্রীনে।
এতদিনের কাছের মানুষটিকে শেষ বারের মতো দেখতে পরিবার-পরিজনের পাশাপাশি ভিড় জমিয়েছিলেনন তাঁর অসংখ্য অনুগামী। এরপর বিকেল চারটে নাগাদ কেওড়াতলা শ্মশানের উদ্দেশ্যে শেষ যাত্রা শুরু হল। প্রিয় ‘সুব্রতদা’কে এগিয়ে দিতে পায়ে পায়ে চলল গোটা দক্ষিণ কলকাতা।সকলের চোখে মুখে এক অদ্ভূত বিষন্নতা। আলোর উৎসবের মাঝে হঠাৎ করেই যেন অন্ধকার নামল শহরের। কেওড়াতলা মহাশ্মশানে গান স্যালুটের মাধ্যমে শেষ বিদায় নিলেন সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তার আগে শ্মশানে গিয়েই শ্রদ্ধা জানালেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর চোখেমুখেও স্বজন হারানোর যন্ত্রণা। এক বারের জন্যও দেখা গেল না মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। বৃহস্পতিবারই তিনি জানিয়েছিলেন, সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মৃতদেহ তিনি দেখবেন না। সেইমতো গোটা দিনই নিজেকে ঘরবন্দী করে রাখলেন।