বাংলার খবর
আচার্য বিলের ভোটাভুটিতে কারচুপির অভিযোগ শুভেন্দুর, পাল্টা কটাক্ষ পার্থর

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সোমবারই বিধানসভায় রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় আইন সংশোধনী বিল পাশ হয়ে গেল। রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য করতে চেয়ে পাশ হয় বিল। সোমবার ভোটাভুটির মাধ্যমে পাশ হয় এই বিল। বিলের পক্ষে ভোট পড়েছে ১৮২টি। বিপক্ষে ভোট পড়েছে ৪০টি। এরপরই এই ভোটাভুটিতে কারচুপির অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির ৫৭ জন বিধায়ক। সেখানে এই বিলের বিরুদ্ধে ভোট পড়েছে ৪০টি। বাকি ১৭জন বিজেপি বিধায়ক তাহলে কোথায় ভোট দিলেন! এই নিয়েই উঠতে শুরু করেছে প্রশ্ন। আর তাতেই শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, আচার্য বিল পাশ হওয়া নিয়ে বিধানসভার ভোটাভুটিতে ‘ছাপ্পা ভোট’ পড়েছে। এদিন বিধানসভায় শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, ‘এই বিল বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়নি। আমাদের ৭ জন বিধায়ক নির্বাসিত হয়েছেন। কিন্তু আমাদের আপত্তি নথিভুক্ত করেছি৷ সংখ্যায় জোরে ওরা এই বিল পাশ করিয়েছে। এখানেও ছাপ্পা ভোট পড়েছে। কারচুপি হয়েছে। আমরা গোটা বিষয়টা আগামী সোমবার রাজ্যপালকে জানাবো। সেইসঙ্গে ওঁনাকে অনুরোধ করব, এই বিলে যেন উনি সই না করেন। এবং বিলটি কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পাঠান। আমি এখনই বলে দিচ্ছি, রাজ্যপাল বিলে সই করবেন না৷’
শুভেন্দুর এই ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেছেন, বিজেপি আগে নিজের ঘর সামলাক। বিজেপির যে ১৭ জন বিধায়ক ভোট দেননি, তাঁরা মুখ্যমন্ত্রীর আচার্য হওয়ার প্রস্তাবেই আস্থা রেখেছেন। এদিন পার্থ চট্টোপাধ্যায় নাম না করে শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে বলেছেন, ‘ধর্নায় না বসে, বাইরে গরম গরম বুলি না দিয়ে আগে নিজের দলের বিধায়কদের সামলান। যিনি বিরোধী দলনেতা হবেন তিনি তাঁর দলের নেতা, দলের বিধায়কদের নেতা। সেখানেই তো নিয়ন্ত্রণ নেই। ৪০ কেন, আরও একটু ঝাঁকালে আরও নিচে নেমে আসবে সংখ্যাটা। বাংলার মানুষ চায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই শিক্ষাব্যবস্থা এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থাকুক। তাহলে শিক্ষাক্ষেত্রে আরও উন্নতি হবে। বিজেপির বিধায়কদের তো কোনও জ্ঞানই নেই। এদিন বিধানসভায় অনেকেই স্কুল শিক্ষা নিয়ে বক্তব্য রাখলেন। বিষয়বস্তু সম্পর্কে তাঁদের জ্ঞান এতই কম যে বলতে হয়, বিরোধিতা করতে, হয় তাই করছেন। যাঁরা আজ ভোট দিল না, এটা ১৭ নয়, আরও বেশিও হতে পারে। কেন যে তাঁরা ভোট দিল না সেটা ওদের গবেষণা করার বিষয়। ওরা গবেষণা করুক। আমাদের তো আরও অনেক বিল আছে, তখন আরও গবেষণা হবে।’
যে ১৭ জন বিজেপি বিধায়ক আচার্য বিলের বিপক্ষে ভোট দেননি, তাঁরা কি তাহলে মুখ্যমন্ত্রীর রাজ্যের সমস্ত সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসার প্রস্তাব মেনে নিলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘যে ১৭ জন ভোট দিলেন না বা উপস্থিত হলেন না তাঁরা দলের প্রতি অনাস্থা দেখালেন কিনা তা বিরোধী দলনেতা বা মনোজ টিগ্গার মতো যাঁরা দল পরিচালনা করেন, তাঁরাই বলতে পারবেন। ওদের দাবি, বিধানসভায় নাকি ওদের ৫৭ জন বিধায়ক উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু ভোট পড়েছে ৪০টি। যে ১৭ জন ভোট দিলেন না, তার মানে তো এটাই ধরে নিতে হবে যে তাঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আচার্য করার প্রস্তাবেই আস্থা রাখলেন।’