বাংলার খবর
দেওয়া হল না জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা, মর্মান্তিক পরিণতি ছাত্রের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষা মাধ্যমিক দেওয়া হল না সৌমদীপের, ব্যাঙ্গালোরের হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে সে এখন জীবন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে।
পোলবার সুগন্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতের ধূমা গ্রামের সৌমদীপ সামন্তর এবার যাদবপুর হাইস্কুল থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষা দেবার কথা ছিল।সৌম্যদীপ বরাবরই প্রথম অথবা দ্বিতীয় হত স্কুলে।টেস্ট পরীক্ষাতেও অত্যন্ত ভাল রেজাল্ট করে সে।জীবনের প্রথম বড় পরীক্ষার জন্য খুব ভালো প্রস্তুতি নিচ্ছিল সে।হঠাৎই ছন্দপতন ঘটল।ভ্যাকসিনের দ্বিতীয় ডোজ নিতে গত ২৩ ফেব্রুয়ারী সে স্কুলে যায়।পরদিন বাড়িতে পড়ার ঘরে বাল্ব লাগাতে চেয়ারে ওঠে, মাকে বলে তার পাঁ কাঁপছে।শরীর খারাপ লাগছে।চুঁচুড়ায় এক চিকিৎসককে দেখানো হয় তাকে।চিকিৎসক নিউরোলজিস্ট দেখাতে বলেন।বাড়ি ফিরে সমস্যা আরো বাড়ে।কারো সাহায্য ছাড়া দাঁড়াতে পারছিল না সে।
চন্দননগরে একজন নিউরো চিকিৎসককে দেখিয়ে এম আর আই রক্ত পরীক্ষা করিয়ে জানা যায় সৌমদীপের শরীরে এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া বাসা বেঁধেছে যা রক্তের সেল গুলোকে নষ্ট করে দিচ্ছে।তড়িঘড়ি তাকে ব্যাঙ্গালোরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ মেন্টাল হেলথ এন্ড নিউরো সাইন্স (নিমহানস) হাসপাতলে নিয়ে যাওয়া হয়।সেখানে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দেখে দ্রুত তার চিকিৎসা শুরু করেন।নানা পরীক্ষা নিরিক্ষার পর গতকাল থেকে তার প্লাজমা থেরাপি শুরু হয়।
আজ থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক পরীক্ষা।
আরও পড়ুন: BJP-র বিক্ষোভকে নজিরবিহীন বলে আক্রমণ মুখ্যমন্ত্রীর! রাজভবনে রাজ্যপাল-মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক
যেসময় পরীক্ষা কেন্দ্রে বসে পরীক্ষা দেওয়ার কথা সে সময় ছেলে হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে লড়াই করছে সৌমদীপ।কান্না ভেজা চোখ নিয়ে সৌমদীপের মা কল্পনা সামন্ত বলেন,আমি একজন আশা কর্মি।আমি লোকজনকে ডেকে ডেকে ভ্যাকসিন নিতে বলেছি।তাই কখনই বলব না আমার ছেলের ভ্যাকসিন নিয়ে এই রোগ হয়েছে।তবে যে ছটফটে ছেলে সব সময় স্ফূর্তিতে থাকত প্রাইভেট পড়তে যেত বাড়ির কাজ করত।ওকে কখনই পড়ার কথা বলতে হয়নি।
মাধ্যমিকে ভালো রেজাল্ট করবে আশা ছিল।এখন কি হবে জানিনা।সামান্য জমি থেকে যা আয় হয় আর তার ভাতা দিয়ে দুই ছেলের পড়াশোনা চলে।সৌমদীপের বাবা দিলীপ সামন্ত দাদা কল্পদীপ ব্যাঙ্গালোরে রয়েছেন।জেঠু কুশোরাম সামন্ত বলেন,ছটফটে ছেলেটার কি হয়ে গেল বুঝতে পারছি না।আমরা সব রকম ভাবে চেষ্টা করছি।সুস্থ হয়ে আগে বাড়ি ফিরুক তারপর পরীক্ষা নিয়ে ভাবা যাবে।
আরও পড়ুন: জয়েন্ট এন্ট্রান্সের জন্য বদল আনা হল উচ্চ মাধ্যমিকের রুটিনে, একনজরে দেখে নিন বদল হওয়া দিনগুলি
যাদবপুর স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুরজিৎ ঘোষ বলেন,একজন শিক্ষক হিসাবে বলব কোনো ছাত্রের মাধ্যমিক দিতে না পারা খুবই কষ্টের। অতন্ত্য মেধাবী ছাত্র সৌমদীপ।ওর অসুস্থতার খবর পেয়ে আমরা শিক্ষক শিক্ষিকারা খুবই অবাক হয়েছি।ওর পাশে আছি।এ্যাডমিট কার্ড নিতে এসেছিল তখন অনেক কথা হল।যাদবপুর স্কুলের পরীক্ষা কেন্দ্র হয়েছে সুগন্ধা হাইস্কুলে।সেখান সেন্টার ইনচার্জকে সৌমদীপের অসুস্থতার খবর দিয়েছি।ভেবেছিলাম হয়ত ব্যাঙ্গালোর থেকে পরীক্ষার আগে ফিরে আসবে তাহলে সিক রুমে বসে পরীক্ষা দেবার ব্যবস্থাও করা ছিল।শুধু ভালো ছাত্র হিসাবে না একজন ভালো মানুষ হিসাবে স্কুলের সবাই ওকে ভালোবাসে।আমরা চাই দ্রুত সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরুক সৌমদীপ।।।।