তীব্র হচ্ছে অর্থনৈতিক সঙ্কট, ১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখবে শ্রীলঙ্কা
Connect with us

আন্তর্জাতিক

তীব্র হচ্ছে অর্থনৈতিক সঙ্কট, ১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রাখবে শ্রীলঙ্কা

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: প্রবল অর্থনৈতিক সঙ্কটে ভুগছে ভারতের প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কা। চিনের থেকে ঋণ নিয়ে দেউলিয়া অবস্থা কলম্বোর। একদিকে ঋণের বোঝা অন্যদিকে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিতে জর্জরিত শ্রীলঙ্কার জনগণ। এই অবস্থায় মরার উপর ফের খাঁড়ার ঘা হিসেবে বিদ্যুৎ সঙ্কটের বোঝা চাপতে চলেছে শ্রীলঙ্কানদের উপরে।

বুধবার এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে জানা গিয়েছে, অর্থনৈতিক সংকটে জর্জরিত শ্রীলঙ্কায় এবার পরিস্থিতি সামাল দিতে দিনে ১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখবে সরকার। শুধু তাই নয়, হাইড্রোইলেক্ট্রিসটি এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় জ্বালানির ঘাটতি দেখা দেওয়ায় সরকারের তরফে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যারফলে এবার থেকে সারাদিনে গড়ে ১০ ঘণ্টা করে বন্ধ করে রাখা হবে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা।

এদিকে গত ১৯৪৮ সালের পর ২০২২ সালে এসে ফের ব্যাপক অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশ। একদিকে ঋণ নিয়ে দেউলিয়া অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রার অভাবে ক্রমাগত দৈনন্দিন জিনিসের দাম বৃদ্ধিতে বিপর্যস্ত প্রায় ২২ মিলিয়ন শ্রীলঙ্কান নাগরিক। যদিও টানা ১০ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ রাখার বিষয়ে মুখ খুলেছেন রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ সংস্থার আধিকারিক। তিনি জানিয়েছেন, জেনারেটরগুলিতে কোনও তেল নেই। এই অবস্থায় পরিস্থিতি সামাল দিতে তাঁরা দিনে অন্তত ১০ ঘণ্টা বৈদ্যুতিক ব্যবস্থার কাটছাঁট করতে চলেছে। এটি আগামী মাসের শুরু থেকেই করা হবে বলে জানা গিয়েছে। শ্রীলঙ্কার ৪০ শতাংশেরও বেশি বিদ্যুত হাইড্রো থেকে উত্পাদিত হয়। তবে এবছর সেভাবে বৃষ্টি না হওয়ায় বিদ্যুৎ উৎপাদনে পর্যাপ্ত জলের ঘাটতি রয়েছে। এছাড়াও শ্রীলঙ্কায় সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় কয়লা ও তেল থেকে। উভয়ই আমদানি করা হয়। কিন্তু সরবরাহের জন্য দেশের কাছে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা নেই বলে সরবরাহ কম রয়েছে এখন।

Advertisement

আরও পড়ুন: অস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের সঞ্চালক খেলেন চর

এদিকে, প্রধান জ্বালানি খুচরা বিক্রেতা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন সিলন পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন (সিপিসি) জানিয়েছে, কমপক্ষে দুই দিনের জন্য দেশে কোনও ডিজেল থাকবে না। সিপিসি পেট্রোল স্টেশনগুলিতে দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষারত গাড়ি চালকদের আমদানিকৃত ডিজেল আনলোড এবং বিতরণ করার পরই তেল শেষ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে বছরের শুরু থেকে পেট্রল ৯২ শতাংশ এবং ডিজেলের ৭৬ শতাংশ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জ্বালানির দামও ক্রমাগত বাড়ানো হয়েছে। সরকার এলপি গ্যাস এবং কেরোসিনের সর্বশেষ চালানের জন্য ৪৪ মিলিয়ন ডলার পেতে ১২ দিন সময় নিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন: চিনে সংক্রমণের গ্রাফচিত্র ঊর্ধ্বমুখী, ১ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন সাংহাইতে

Advertisement

কলম্বো ২০২০ সালের মার্চ মাসে একটি বিস্তৃত আমদানি নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল যাতে বিদেশী ঋণের জন্য $৫১ বিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন হয় বৈদেশিক মুদ্রা বাঁচাতে। কিন্তু এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে এবং দাম বেড়েছে। অনেক হাসপাতাল রুটিন সার্জারি বন্ধ করে দিয়েছে, এবং সুপারমার্কেটগুলিকে চাল, চিনি এবং দুধ সহ প্রধান খাবার রেশন করতে বাধ্য করা হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে শ্রীলঙ্কা সরকার বলছে যে, তাঁরা ভারত ও চিনের কাছ থেকে আরও ঋণ চাওয়ার সময় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের কাছ থেকে একটি বেলআউট চাইছে। কোভিড -19 মহামারীর দ্বারা সৃষ্ট সঙ্কট আরও তীব্র হয়েছিল।