এই রাজ্যেই রয়েছে দেশের প্রথম সুরা মিউজিয়াম 'অল অ্যাবাউট অ্যালকোহল
Connect with us

বাংলার খবর

এই রাজ্যেই রয়েছে দেশের প্রথম সুরা মিউজিয়াম ‘অল অ্যাবাউট অ্যালকোহল

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : মিউজিয়াম কথাটা শুনলেই আমাদের প্রথমেই মনে আসে ইতিহাসের সাক্ষী বহনকারী প্রাচীন পুরা ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সংগ্রহশালাকেই। তবে এই ধারণাটা এবার কিছুটা বদলে ফেলার সময় এসে গিয়েছে। শুধু প্রাচীন প্রত্নতাত্ত্বিক জিনিসপত্রই নয়, এবার মিউজিয়ামে পাওয়া যাবে মদ! দেশে প্রথম তৈরি হল সুরা তথা মদের মিউজিয়াম।

গোয়ার রাজধানী পানাজি থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরে ক্যান্ডোলিনে মদের এই মিউজিয়াম গড়ে তুলেছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী নন্দন কুড়চারকর। গোয়ায় বেড়াতে গিয়ে মদের গ্লাসে চুমুক দেননি, এমন পর্যটকের সংখ্যা হাতেগোনাই। বিশেষ করে গোয়ার বিখ্যাত ‘ফেনি’ পান করননি, এমন মানুষ নেই বললেই চলে। এই ফেনি দেশীয় মদ হলেও এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে গোয়ার দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য, আভিজাত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস। ২০১৬ সালে ফেনিকে হেরিটেজ ড্রিঙ্কসের স্বীকৃতিও দিয়েছে সরকার। আর ফেনি-সহ বিভিন্ন মদের ইতিহাসকেই সকলের সামনে তুলে ধরবে গোয়ায় নবনির্মিত এই সুরা মিউজিয়াম ‘অল অ্যাবাউট অ্যালকোহল’। নিজের বাড়ির চারটি ঘরকে নিয়েই মদের এই মিউজিয়াম গড়ে তুলেছেন ব্যবসায়ী নন্দন। আর এই সংগ্রহশালার প্রত্যেকটা ঘর জুড়েই রয়েছে সারি সারি মদের বোতল। যা আসলে একটি মদের ইতিহাসের আঁতুড়ঘর বলাই চলে।

রাশিয়া, স্কটল্যান্ড, জার্মানি সহ বিভিন্ন দেশে এই ধরনের অ্যালকোহল মিউজিয়াম থাকলেও সেখানে মদের ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়নি। তবে গোয়ার এই মিউজিয়ামে সুরার সেই ইতিহাসকে তুলে ধরা হয়েছে। বিশেষ করে গোয়ার সংস্কৃতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিকভাবে জড়িত ফেনির ইতিহাসকে। গোয়ার এই অ্যালকোহল মিউজিয়ামে পাওয়া যাবে পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করে নানান প্রজন্মের ফেনি। এছাড়া ষোড়শ শতকে ফেনির পেগ মাপতে ব্যবহৃত পুরনো মাটির পাত্রও এখানে দেখতে পাওয়া যাবে। বিশেষভাবে তৈরি ফেনি কতটা মাতাল করতে সক্ষম তা মাপার জন্যও এই সংগ্রহশালায় রয়েছে বিশেষ স্কেল। এছাড়া মদ ঢালার কাঠের পাত্র থেকে শুরু করে কাচের নানা ধরনের সুরাপাত্ররও দেখা মিলবে এই সংগ্রহশালায়। ফেনি ছাড়াও আরও বেশ কিছু দুষ্প্রাপ্য মদের সংগ্রহ ও তাঁদের ইতিহাসও সযত্নে রাখা রয়েছে এই মিউজিয়ামে। এই সংগ্রহশালার কর্ণধার নন্দন বলেছেন, ‘গোয়ার মানুষ নেশা করার জন্য মদ খায় না। তাদের মদ খাওয়ার নেশা নেই। গোয়ানিজদের কাছে মদ খাওয়াটা একটা শিল্প। এখানে মদ পরিবেশন করাটা আপ্যায়ন ও আতিথেয়তার একটা অঙ্গ। আর এই ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে বাঁচিয়ে রাখতেই একটা অ্যালকোহল মিউজিয়ামের প্রয়োজন বলে আমার মনে হয়েছিল।’ দেশের প্রথম অ্যালকোহল মিউজিয়ামের সিইও আর্মান্দো দুয়ার্ত জানিয়েছেন, শ্যাম্পেন, ভদকা যদি কোনও দেশের ঐতিহ্যের স্মারক হতে পারে, তা হলে গোয়ার ফেনি নয় কেন? সেই চিন্তা ধারা থেকেই এই মিউজিয়াম তৈরি করা হয়েছে।

Advertisement

প্রতিদিন দুপুর তিনটে থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত খোলা থাকে এই মিউজিয়াম। সুরার ইতিহাসকে জানা ও ঘুরে দেখার পাশাপাশি এই মিউজিয়ামে মদ চেখে দেখারও বন্দোবস্ত রয়েছে। তাই সুরাপ্রেমীদের কাছে এর থেকে ভালো বা সেরা পীঠস্থান আর অন্য কিছু হতে পারে বলে মনে হয় না। তাই কখনও গোয়ায় বেড়াতে গেলে অবশ্যই ঘুরে আসতে পারেন ‘অল অ্যাবাউট অ্যালকোহল’-এ।

Continue Reading
Advertisement