বাংলার খবর
মদ্যপ গৃহবধূর কীর্তিতে নাজেহাল অবস্থা শিলিগুড়ি থানার পুলিশের!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মদের নেশায় চুর হয়ে সারারাত ধরে পুলিশকে চড়কি নাচন নাচালেন এক মহিলা! ঘটনাটি ঘটেছে শিলিগুড়িতে। বুধবার মত্ত অবস্থায় ওই মহিলা দাবি করেন, তিনি অসমের বাসিন্দা। তাঁকে অসম থেকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে নিয়ে এসে প্রচণ্ড মারধর করা হচ্ছে। সেই শুনে শিলিগুড়ি থানার পুলিশ ওই মহিলাকে উদ্ধার করতে তাঁর বাড়ির ঠিকানা খুঁজে বার করতে তৎপর হয়ে ওঠে। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে ওই মহিলার নেশার ঘোর কাটতেই সম্পূর্ণ ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে যায় তাঁর বক্তব্য। তখন ওই মহিলা জানান, আগের দিন রাতে তিনি কী বলেছেন তাঁর কিছুই মনে নেই। তারপরই পুলিশ তদন্ত করে জানতে পারে ওই মহিলার বাড়ি শিলিগুড়িতে। এবং শ্বশুরবাড়িও শিলিগুড়িতে। ওই মহিলার নাম মাম্পি সাহা।
পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের কাছে এক মহিলাকে মত্ত অবস্থায় কেউ বা কারা ফেলে পালিয়েছে বলে খবর আসে তাদের কাছে। পুলিশ আসার আগেই এলাকার কয়েকজন বাসিন্দা ওই মদ্যপ মহিলাকে ধরে হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে দেখে স্ট্রেচারে শুয়ে ওই মহিলা চিল চিৎকার করছেন। তখনই ওই মহিলা পুলিশ এবং চিকিৎসকদের জানান, তাঁকে অসম থেকে কাজের প্রলোভন দেখিয়ে শিলিগুড়িতে ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। এবং তাঁকে বেঁধে রেখে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারেও তাঁর বাড়ি রয়েছে।
মহিলার মুখে ওই কথা শুনে রীতিমতো চিন্তায় পড়ে যায় পুলিশ। এবং কে বা কারা তাঁকে ধরে নিয়ে এসেছিল তার তদন্তে নামে পুলিশ। খতিয়ে দেখা হয় হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ। ওই মহিলা অসম থেকে এসেছেন বলে দাবি করায় শিলিগুড়ি থানার পুলিশ অসম পুলিশের সঙ্গেও যোগাযোগ করে বাড়ির ঠিকানা জোগাড়ের চেষ্টা করতে। বৃহস্পতিবার সকালে নেশার ঘোর কাটতেই মাম্পি সাহা পুলিশকে জানান, বুধবার তিনি যে সমস্ত কথা বলেছিলেন, সবই মিথ্যে। এমনকি আগে তিনি যা বলেছেন, তার কিছুই তাঁর আর মনে নেই। যা শুনে হতবাক হয়ে যান শিলিগুড়ি থানার পুলিশকর্মীরা। তার পরই পুলিশ জানতে পারে ওই মহিলার বাড়ি শিলিগুড়িতে এবং তাঁর শ্বশুর বাড়িও শিলিগুড়িতে।
অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে ওই গৃহবধূর মা ও স্বামীর খোঁজ পায় পুলিশ। তারপরই তাঁদের থানায় ডেকে পাঠানো হয়। ওই মহিলার মা অপর্না সাহা জানিয়েছেন, অনেকদিন আগেই বিয়ে হয়েছে মাম্পির। তাঁর একটি সন্তানও রয়েছে। কিন্তু মদ্যপানের অভ্যাস সে ছাড়তে পারেনি। মাঝেমধ্যেই শ্বশুরবাড়িতে গন্ডগোল করে বেরিয়ে যায়। এর আগেও এমন ঘটনা অনেকবার হয়েছে। সব শুনে ওই মহিলাকে তাঁর পরিবারের হাতে তুলে দিয়ে কোনরকমে হাঁফ ছেড়ে বাঁচে পুলিশ। নেশার ঘোরে কোনও মহিলা পুলিশকে এভাবে নাকে দড়ি দিয়ে ঘোরাতে পারে, এরকম অভিজ্ঞতা তাঁদের আগে কখনও হয়নি বলেই জানিয়েছেন শিলিগুড়ি থানার পুলিশ আধিকারিকরা।