বাংলার খবর
শরীরে অসহ্য যন্ত্রণা, চিকিৎসা করাতে সোজা ডাক্তারের চেম্বারে হনুমান

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: শরীর খুবই অসুস্থ , ভীষণ যন্ত্রণা হচ্ছে। তাই চিকিৎসা করাতে সোজা চলে এলেন ডাক্তারবাবুর চেম্বারে। শুধু তাই নয়, ইশারা করে দেখিয়ে দিল চোখের সমস্যা । শরীরের আর কোথায় অসুবিধা সেটাও দেখিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে রোগী কোনও মানুষ নয়, খোদ হনুমান।
জানা গিয়েছে, ডাক্তারের চেম্বারে আসা ওই হনুমানটির শারীরিক অসুস্থতার বিষয়টি বুঝতে পেরে এরপর ওই ডাক্তারবাবু পশু চিকিৎসকের সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করে ওষুধ দেন। ওষুধ নিয়ে টানা প্রায় দুঘণ্টা বেডে শুয়ে থাকল হনুমানটি। এমনই ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার সিমলাপালের দুবরাজপুর গ্রামে গ্রামীন চিকিৎসক অনিমেষ পালের চেম্বারে।
এদিন দুপুর বারোটা নাগাদ ডাক্তার পালের চেম্বারে গিয়ে দেখা গেল মাঝবয়সি একটি হনুমান রোগীদের বসার আসনে শুয়ে আছে। তখন ডাক্তারবাবু অন্যান্য রোগীদের দিব্যি চিকিৎসা করছেন। সাধারণ মানুষ গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দিচ্ছেন। কেউবা এনেছেন কলা, কেউবা আপেল। কিন্তু কোন কিছুই খাচ্ছেনা হনুমানটি। বারবার চোখ এবং মাথায় হাত দিয়ে কিছু একটা বোঝাতে চাইছে।
আরও পড়ুন: সংসার বাঁচাতে নিজের শখ-আহ্লাদ বিসর্জন, পথে নেমেছে জীবন্ত দুর্গা
এ বিষয়ে গ্রামীণ চিকিৎসক অনিমেষ পাল বলেন , ”হনুমানটিকে চেম্বারে দিকে আসতে দেখে ভয়ে আমি দরজা বন্ধ করে দিই। এরপর হনুমানটি চেম্বারে পাশেই একটি জলের ট্যাপ খুলে জল খায় ,তারপর ট্যাপটি যথারীতি বন্ধ করে দেয়। যা দেখে উপস্থিত অন্তত কুড়ি জন মানুষ হতবাক।এখান থেকে এসে হনুমানটি বারবার আমার দরজায় ধাক্কা মারতে থাকে। দরজা না খোলায় রাগে পাশাপাশি সাইকেল গুলোকে উল্টিয়ে দেয়। এরপর দরজা খুলতেই হনুমানটি রোগীদের ভিড় ঠেলে সরাসরি আমার টেবিলের উপর আমার মুখোমুখি বসে। ঔষধের খাপ নিয়ে আমাকে ইশারা করে দেখায় ওষুধ দাও।”
শুধু তাই নয় চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখায় চোখে যন্ত্রণা হচ্ছে এমন কিছু। খবর পেয়ে অনেকেই বিভিন্ন রকমের ফল খেতে দেয় হনুমানটিকে। কিন্তু কোনও ফল না খেয়ে ইলেকট্রিক ফ্যানের নিচে বাতাসে চুপচাপ শুয়ে থাকে সে।
একবার ইশারা করে ফ্যানের স্পিড বাড়াতে বলে। পরে পশু চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চিকিৎসক চোখে আই ড্রপ দেন। ব্যথানাশক অষুধ হনুমানটি নিজেই খেয়ে নেয়। পরে খবর পেয়ে বনদপ্তরের কর্মীরা ঘটনাস্থলে যান ,দুবরাজপুরের বিট অফিসার ডাক্তার বাবুর চেম্বার এ এলে হনুমানটি মোটরসাইকেলে চেপে বিট বাবুর সাথে ফরেস্ট অফিসে চলে যায়। কিন্তু যন্ত্রণা বাড়তে থাকায় ফের হনুমানটি বিকেল পাঁচটা নাগাদ ডাক্তার বাবুর চেম্বার এ একইভাবে শুয়ে থাকে।
আরও পড়ুন: বিয়ে বাড়িতে এসে মর্মান্তিক পরিণতি, তিস্তা থেকে উদ্ধার যুবতীর দেহ
এই বিষয়ে সারেঙ্গা রেঞ্জ অফিসার সুরজিৎ কুমার মজুমদার জানান, হয়তো এই প্রখর রোদে এই হনুমানটি অসুস্থ বোধ করেছিল বা জল খাবার জন্য দুবরাজপুর এলাকায় ঐ চিকিৎসকের চেম্বারে ঢুকে পড়েছিল। বর্তমানে হনুমাটিকে দুবরাজপুর বিট এলাকার থেকে সারেঙ্গা রেঞ্জে আনার পর চিকিৎসা করিয়ে বর্তমানে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে হনুমানটিকে। পরে তাকে জঙ্গলে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।