বাংলার খবর
নির্বাসন তুলে নেওয়ার প্রস্তাব গৃহীত না হওয়ায় চক্রান্তের অভিযোগ শুভেন্দুর, পাল্টা জবাব ফিরহাদের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সাত বিজেপি বিধায়কের নির্বাসন প্রত্যাহারের প্রস্তাব খারিজ করে দিলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার তিনি জানান, বিজেপির আনা জোড়া প্রস্তাবে পদ্ধতিগত ভুল রয়েছে। ফলে সেই প্রস্তাব গ্রহণ করা যাবে না। তবে ভুল সংশোধন করে নতুন করে প্রস্তাব আনার সুযোগ দিয়েছেন অধ্যক্ষ। ১৪ জুন বিএ কমিটির বৈঠকে সেই প্রস্তাবের উপর আলোচনা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
কিন্তু, বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, প্রস্তাবে কোনও ভুল নেই। তিনি সকালেই খবর পেয়ে গিয়েছিলেন, সাত বিজেপি বিধায়কের সাসপেনশন প্রত্যাহারের আবেদন গৃহীত হবে না। তাঁর আরও অভিযোগ, পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে নাকি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফোন করে এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে নিষেধ করেছেন।
যদিও শুভেন্দু অধিকারীর এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ফিরহাদ হাকিম। তিনি বলেছেন, ‘যা-তা কথা বলা বিরোধী দলনেতার শোভা পায়না। বিরোধী দলনেতার একটা দায়িত্ব থাকে। বিধানসভার কার্যপদ্ধতি বিরোধী দলনেতার মেনে চলা উচিত। একটা চিঠি দিয়ে কখনও একটা রেজোলিউশন করা যায় না। স্পিকারকে সঠিক পদ্ধতিতে আবেদন করতে হয়। তাই স্পিকার ঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।’ এরপরই শুভেন্দু অধিকারীকে কটাক্ষ করে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘দলের মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী আমার সঙ্গে, পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কী কথা বলছেন এটা ওঁনার জানার কথা নয়। এইরকম কথা বলাটাই বোকামি। কোর্টে গিয়ে কী করবে! কোর্ট অনুরোধ করতে পারে। কিন্তু বিধানসভার ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে না। আইনসভার শেষকথা স্পিকার। বিজেপির এই কথায় কথায় বিধানসভাকে আদালতে টেনে নিয়ে যাওয়ার অভ্যাসটা হচ্ছে চমকদারি রাজনীতি। এইজন্যই বিজেপি বাংলায় আস্তে আস্তে নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে। বিভাজন ও চমকদারির রাজনীতি করে বাংলার মানুষের মন জয় করা যায় না।’
উল্লেখ্য, রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ বিজেপির ৭ বিধায়ককে বিধানসভায় প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার যে শাস্তি জারি রয়েছে, তা পুনর্বিবেচনা করার ভার বিধানসভার অধ্যক্ষের ওপরই ছেড়ে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। শাস্তি মুকুব করার আর্জি জানাতে সোমবারই শুভেন্দু অধিকারী এবং নির্বাসিত ৭ বিজেপি বিধায়ক বিধানসভায় আলাদা করে দু’টি মোশন আনেন।কিন্তু, সঠিক প্রক্রিয়ায় আবেদন না করার জন্য সাসপেনশন নিয়ে আনা বিজেপির দুটি মোশন গৃহীত হয়নি। আবেদনের মধ্যে পদ্ধতিগত ভুল রয়েছে, তাই তা সংশোধন করতে হবে বলে জানান অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে তিনি এও জানিয়ে দেন ,এই আবেদন খারিজ করছেন না তিনি। বরং বিরোধীদের ভুল সংশোধন করে নতুন করে প্রস্তাব আনার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে নতুন প্রস্তাব নিয়ে আগামী ১৪ তারিখ বিএ কমিটির যে বৈঠক রয়েছে, সেখানেই আলোচনা হবে।
উল্লেখ্য, গত বাজেট অধিবেশনে অশান্তির জেরে শুভেন্দু অধিকারী সহ বিজেপির ৭ বিধায়ককে বিধানসভা থেকে নির্বাসিত করেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। পরের অধিবেশন তো বটেই, বিধানসভাতেও তাঁদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। সেই মামলাতেই গত শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট স্পিকারকেই ব্যাপারটির নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলে। আদালতের এই নির্দেশের পর স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি ওঁদের আগেই বলেছিলাম যে ওঁরা আবেদন করতে পারবেন। তারপরও ওঁরা আদালতে গিয়েছিল। যার কোনও প্রয়োজন ছিল না। বিধানসভার আভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে বারবার আদালতে যাওয়ার প্রবণতা বন্ধ হওয়া উচিত।’