বাংলার খবর
সাইকেলে ৩৭০০ কিমি পারি দিয়ে কেদারনাথ জয় করে ঘরে ফিরলেন বাঁকুড়ার শুভজিৎ

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ভারতবর্ষের দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে অন্যতম কেদারনাথ। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকরা কেদারনাথ ভ্রমণে আসেন। এবং সেখানে সারা বছর দেখা মেলে বাবার ভক্তদের।কেদারনাথ যাত্রা অনেকের কাছেই একটা স্বপ্ন। অর্থের অভাবে কতজনই বা যেতে পারেন সেখানে! এবার সেই অসাধ্য সাধন করেই ঘরে ফিরলেন বাঁকুড়া জেলার ছাতনা ব্লকের মেটেলা পঞ্চায়েতের হরিগ্রামের শুভজিৎ চেল।
২০ বছরের এই যুবক নিজের বাড়ি থেকে সাইকেল নিয়ে গত ১৩ মে রওনা দেন কেদারনাথের উদ্দেশ্যে। সেখানে সাইকেল নিয়ে পৌঁছান গত জুনের তিন তারিখ। সেখানে পৌঁছে ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিনি। বারাণসী, হরিদ্বার, ঋষিকেশ কেদারনাথ, তুঙ্গনাথ ও চন্দ্র শিলা হয়ে আবার সেখান থেকে সাইকেল চালিয়ে নিজের বাড়িতে ফিরলেন গত ১ জুলাই। তাঁর ৩৭০০ কিলোমিটারের সফর শেষ করতে সময় লেগেছে ৫০ দিন।
শুভজিতের এই প্রচেষ্টাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন গ্রামবাসীরা। বাড়ি ফিরে আসতেই বেজায় খুশি গ্রামের সকলেই। খুশি শুভজিতের পরিবারের সদস্যরাও। ছেলের এই কর্মকান্ডে গর্বিত তাঁরাও। গ্রামবাসীরা বলছিলেন, ‘কেদারনাথ যাত্রা সকলের কাছেই একটা স্বপ্ন। কারও সেই স্বপ্ন পূরণ হয়, আবার কারও সেই স্বপ্ন অধরাই থেকে যায়। শুভজিৎ তার অদম্য ইচ্ছা শক্তির জোরে কেদারনাথ যাত্রা সাইকেলে সম্পন্ন করেছে। আমাদের কাছে এটা অত্যন্ত গর্বের।’
তাঁর এই অভিযান নিয়ে জানাতে গিয়ে শুভজিৎ বলেন, ‘এই সফর কালীন সময়ে আমার কোনও সমস্যা হয়নি। তবে ঠান্ডা জল খেয়ে একবার সর্দি হয়েছিল। ছোট থেকেই আমার ইচ্ছা ছিল সাইকেল নিয়ে কেদারনাথ যাব। সেই ইচ্ছাকে সফল করতেই আমার এই প্রচেষ্টা।’
শুভজিতের বাবা তপন চেল বলছিলেন, ‘ওর কথাটা শুনে প্রথমে আমরা সকলেই খুব ভয় পেয়েছিলাম। আমি, ওর মা খুব নার্ভাস হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু ছেলের যাদের কাছে আমরা শেষ পর্যন্ত হার মানি। ওকে বলেছিলাম ট্রেনে বা বাসে আমি টিকিট করে দিচ্ছি। কিন্তু ও কোনও কথাই শোনেনি। বলেছিল কষ্ট করেই বাবার ধামে গিয়ে পুজো দেব। খুবই চিন্তায় ছিলাম। রোজ আমরা দিনে চার-পাঁচবার ফোন করতাম। পাড়ার লোকও বলেছিল কিন্তু। ও কারও কথাই শোনেনি। তবে ও যে নিজের লক্ষ্যে সফল হয়েছে, তাতে আমরা খুবই আনন্দিত এবং গর্বিত।’