১০ উইকেটে বিরাট হারের লজ্জা! বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম জয় পাকিস্তানের
Connect with us

খেলা-ধূলা

১০ উইকেটে বিরাট হারের লজ্জা! বিশ্বকাপে ভারতের বিরুদ্ধে প্রথম জয় পাকিস্তানের

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কথাতেই আছে ‘আনলাকি থার্টিন’। সেই তেরোর গাঁটেই আটকে গেল ভারত। বিশ্বকাপের মঞ্চে ১২ ম্যাচ অপরাজিত থাকার পর ১৩তম ম্যাচে পাকিস্তানের কাছে হারল ভারত। বিশ্বকাপের মঞ্চে পাকিস্তানের কাছে এটাই প্রথম হার ভারতের। তাও আবার ১০ উইকেটে লজ্জার হার।

ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং- এদিন সব বিভাগেই ভারতকে বলে বলে টেক্কা দিলেন বাবর আজম, শাহিন আফ্রিদিরা। ম্যাচে দুই দলের অধিনায়কই অর্ধশতরান করলেন। কিন্তু ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলা হল না বিরাট কোহলির। টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমেছিল ভারত। ম্যাচের প্রথম বলেই রোহিত শর্মাকে (০) ফিরিয়ে দেন শাহিন আফ্রিদি। এই পাক পেসারই ইতিহাস রচনার শুরুটা করে দিয়েছিলেন। রান পাননি অপর ওপেনার লোকেশ রাহুলও। তৃতীয় ওভারেই ৮ বলে ৩ রান করে আফ্রিদির বলে বোল্ড হন তিনি। বাঁ-হাতি পাক পেসারের সুইং বুঝতেই পারলেন না ভারতীয় ওপেনার।

৬ ফুট ৪ ইঞ্চির এই পেসারকে সামলাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হল ভারতের তারকাখচিত ব্যাটিং লাইনআপকে। সেই ধাক্কা সামলে ওঠার আগেই ষষ্ঠ ওভারে ৮ বলে ১১ রান করা সূর্যকুমার যাদবও হাসান আলির শিকার হয়ে ফিরে যান। ৩১ রানের মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে যথেষ্ট চাপে পড়ে যায় ভারত। শুরুর এই ধাক্কা গোটা ম্যাচেই আর কাটিয়ে উঠতে পারল না ভারত। এরপর বিরাট এবং ঋষভ পন্থ মিলে দলকে টেনে তোলার দায়িত্ব নেন। দু’জনের জুটি ভালোই এগোচ্ছিল। অর্ধশতকও পূর্ণ করে ফেলেন বিরাট। তখনই পন্থকে ফিরিয়ে ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা জুটিকে ভাঙেন সাদব খান।

Advertisement

৩০ বলে দু’টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৩৯ রান করে শাদাব খানের বলে তাঁর হাতেই ক্যাচ তুলে আউট হন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। বিরাট-পন্থের জুটিতে ওঠে ৫৩ রান। পন্থ ফিরতেই সাজঘরের দিকে ইশারা করে রবীন্দ্র জাদেজাকে নামানোর ইঙ্গিত দেন বিরাট। ক্রিজে বাঁ-হাতি, ডান হাতি জুটি বজায় রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তিনি। তবে এদিন জাদেজাও (১৩) খুব বেশি রান করতে পারেননি। তাঁকেও ফেরালেন হাসান আলি। তবে দর্শকদের মন ভরালেন কোহলি। শেষে ৪৯ বলে ৫ বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৫৭ রান করে প্যাভিলিয়নে ফেরেন বিরাট। আবারও পাকিস্তানের ত্রাতা হয়ে উঠলেন সেই আফ্রিদি। ভারতকে লড়াই করার মতো রানে পৌঁছে দিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক।

২০ ওভারে ৭ উইকেটে ১৫১ রান তোলে ভারত। শেষের দিকে ৮ বলে ১১ করেন হার্দিক পাণ্ডিয়া। ভুবনেশ্বর কুমার ৪ বলে ৫ রান করে অপরাজিত থেকে যান। ৪ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ৩ উইকেন্ড নিলেন ম্যাচের সেরা আফ্রিদি। দু’টি উইকেট পেয়েছেন হাসান আলি। একটি করে উইকেট পেয়েছেন শাদাব খান এবং হ্যারিস রউফ। অতীত পরিসংখ্যান বলছিল এখনও অবধি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ১৬০ এর নিচে রান করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একবারও জিততে পারেনি ভারত। রবিবার সেই ধারা অব্যাহত রইল। ১৩ বল বাকি থাকতেই কোনও উইকেট না খুইয়ে পাকিস্তানকে ঐতিহাসিক জয় এনে দিলেন দুই ওপেনার বাবর আজম এবং মহম্মদ রিজওয়ান।

 

Advertisement

সর্ব শক্তি দিয়ে চেষ্টা করেও ব্যর্থ বুমরা, শামি, ভুবনেশ্বররা। বরুণ চক্রবর্তী এবং রবীন্দ্র জাদেজাদেরও অনায়াসে মাঠের বাইরে পাঠালেন বাবররা। এদিন ভারতীয় বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করলেন দুই পাক ওপেনার। ৫৫ বলে হাফ ডজন বাউন্ডারি ও ৩ ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৭৯ রান করে অপরাজিত থেকে যান রিজওয়ান। অপরদিকে অধিনায়ক বাবর ৫২ বলে ৬ বাউন্ডারি ও জোড়া ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৮ রানে অপরাজিত থেকে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়লেন। বিশ্বকাপের মঞ্চে গোটা বিশ্ব যেন এক অন্য পাকিস্তানকে দেখল। রবিবার ভারতের বিরুদ্ধে এই ঐতিহাসিক জয়ের পর বাবর, আফ্রিদিদের অভিনন্দন জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। টুইটারে সহকর্মীদের সঙ্গে টেলিভিশনে ভারত-পাক ম্যাচ দেখার ছবি পোস্ট করে প্রাক্তন অধিনায়ক ইমরান লিখেছেন, ‘পাকিস্তান দলকে অভিনন্দন। বিশেষত, বাবর আজম, যিনি সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। রিজওয়ান ও শাহিন আফ্রদিও অসাধারণ পারফরমেন্স করল।

তোমাদের সবার জন্য গোটা দেশ গর্বিত।’ এই হারের জন্য পাকিস্তানকে সব রকম কৃতিত্ব দিয়েছেন ভারত অধিনায়ক বিরাট কোহলি। তবে এখনই তিনি ভেঙে পড়তে রাজি নন। ম্যাচ শেষে বিরাট বলেছেন, ‘আমরা এখনই আতঙ্কিত হচ্ছি না। প্রতিযোগিতা সবে শুরু হল। এটাই শেষ নয়। এখনও অনেক ম্যাচ বাকি আছে। নিজেদের পরিকল্পনামতো খেলতে পারেনি আমরা। শুরুতেই তিন উইকেট পড়ে যাওয়ায় কাজটা কঠিন হয়ে গিয়েছিল। পাকিস্তান আমাদের সব বিভাগেই হারিয়ে দিয়েছে। আমাদের আরও ১০ থেকে ২০ রান বেশি করা দরকার ছিল। কিন্তু ওদের বোলারদের দুরন্ত বোলিং আমাদের সেটা করতে দেয়নি।’

Advertisement