খেলা-ধূলা
শাহরুখের ব্যাটেই হাসি ফুটল প্রীতির মুখে! পঞ্জাবের কাছে হেরে প্লে-অফ কঠিন করল নাইটরা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ক্রিকেটে একটা কথা খুবই প্রচলিত আছে- ‘ক্যাচেস উইন ম্যাচেস’। শুক্রবার দুবাইতে একাধিক ক্যাচ মিসই ডুবিয়ে দিল কলকাতা নাইট রাইডার্সকে। পঞ্জাব কিংসের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে হেরে প্লে-অফে উঠার রাস্তা আরও কঠিন করে ফেলল নাইটরা। ম্যাচের প্রথম ওভারেই মায়াঙ্ক আগারওয়ালের সহজতম ক্যাচ ফেললেন নাইট অধিনায়ক ওইন মর্গ্যান। কখনও মর্গ্যান, কখনও দীনেশ কার্তিক। আর শেষ ওভারে হাতের ক্যাচ ফেলে পঞ্জাবকে জিতিয়ে দিলেন রাহুল ত্রিপাঠী।
একবার নয়, তিন থেকে চারবার হাতের ক্যাচ ফেলে পঞ্জাব কিংসের জয়ের রাস্তাটা সহজ করে দিল কেকেআরের ক্রিকেটাররা। তিন বল বাকি থাকতেই ৫ উইকেটে ম্যাচ জিতল প্রীতি জিন্টার দল। সেইসঙ্গে প্লে-অফের আশাও জিইয়ে রাখল কেএল রাহুল অ্যান্ড কোম্পানি। আর নাইটদের এদিনের হারের ফলে ১১ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলল দিল্লি ক্যাপিটালস। শুক্রবার টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পঞ্জাব অধিনায়ক রাহুল। গত দুই ম্যাচের মতো এদিনও নাইটদের ওপেনিং জুটি বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি।
মাত্র ৭ রান করেই তৃতীয় ওভারে অর্শদীপ সিংয়ের দ্বিতীয় বলেই বোল্ড হয়ে যান শুভমন গিল। নাইটদের পরিত্রাতা হিসেবে ফের দেখা দিলেন দুই রাইজিং স্টার বেঙ্কটেশ আইয়ার এবং রাহুল ত্রিপাঠী। আগের ম্যাচগুলিতেও যে ভাবে তাঁরা দ্বিতীয় উইকেটে রান তুলেছিলেন, এই ম্যাচেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রাথমিক ধাক্কা সামলে কেকেআর-কে বড় রানের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন দু’জনে। ব্যাট হাতে এদিনও অনবদ্য ছিলেন দুরন্ত ফর্মে থাকা বেঙ্কটেশ। দ্বিতীয় উইকেটে দুজনের পার্টনারশিপে উঠল ৭২ রান।
এর পরই ২৬ বলে ৩৪ রান করে দলীয় ৯০ রানের মাথায় পঞ্জাব স্পিনার রবি বিষ্ণোইয়ের বলে আউট হন রাহুল। গত ম্যাচগুলোর মতো এদিনও দুরন্ত ব্যাটিং করলেন নিতীশ রানাও। চার নম্বরে নেমে আগেও দায়িত্ব নিয়ে খেলতে দেখা গিয়েছে বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যানকে। পঞ্জাবের বিরুদ্ধেও তিনি বেঙ্কটেশের সঙ্গে জুটি বেঁধে ফের দায়িত্ব নিয়ে খেললেন। প্রথম দু’ম্যাচে রান করার পর মাঝের দু’টি ম্যাচে রান পাননি বেঙ্কটেশ। কিন্তু পঞ্জাব ম্যাচে আবারও জ্বলে উঠল মধ্যপ্রদেশের এই অলরাউন্ডারের ব্যাট। পঞ্জাবের প্রত্যেক বোলারকেই একাধিকবার বাউন্ডারির বাইরে পাঠালেন।
যে ছন্দে ছিলেন, তাতে শতরানও পেয়ে যেতে পারতেন। কিন্তু অতিরিক্ত আক্রমনাত্মক হতে গিয়ে সেই বিষ্ণোইয়ের কাছেই পরাস্ত হলেন তিনি। তবে আউট হওয়ার আগে নিজের অর্ধশতরান পূর্ণ করেন। ৪৯ বলে করা বেঙ্কটেশের ৬৭ রানের ইনিংস সাজানো ছিল ৯ বাউন্ডারি ও এক ওভার বাউন্ডারিতে। তিনি যখন আউট হন তখন নাইটদের রান ১৪.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১২০। তাঁর জায়গায় নামা নাইট অধিনায়ক মর্গ্যান (২) এদিনও ব্যর্থ। তিনি কবে রান পাবেন সেই নিয়ে কুইজের প্রশ্ন হতে পারে। প্রাক্তন অধিনায়ক দীনেশ কার্তিককেও (১১) এদিন দ্রুত ফিরিয়ে দেন অর্শদীপ।
শেষে নিতীশ রানার ১৮ বলে দু’টি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে করা ৩১ রান নাইটদের ২০ ওভারের শেষে ৭ উইকেটে ১৬৫ রানে পৌঁছে দেয়। জবাবে ব্যাট করতে নেমে তিন বল বাকি থাকতেই ম্যাচ জিতে নেয় পঞ্জাব। দুই ওপেনার কেএল রাহুল এবং মায়াঙ্ক আগারওয়াল ৭০ রানের পার্টনারশিপ করে পঞ্জাবের জয়ের রাস্তাটা সহজ করে দিয়েছিলেন। ২৭ বলে তিনটি করে বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৪০ রান করেন মায়াঙ্ক। তাঁকে ফিরিয়ে পঞ্জাব শিবিরে প্রথম ধাক্কাটা দেন বরুণ চক্রবর্তী। নিকোলাস পুরানকেও (১২) দ্রুত ফিরিয়ে দেন বরুণ। এইডেন মার্করাম (১৮) ও দীপক হুডাও (৩) নারিন ও শিভম মাভির শিকার হয়ে ফেরেন। তবে একটা দিক ধরে রেখেছিলেন রাহুল। শেষ বেলায় কিছুটা চাপে পড়ে গিয়েছিল পঞ্জাব।
কিন্তু প্রীতি জিন্টার দলের শাহরুখ খানের একটা ঝোড়ো ইনিংসই বলিউড বাদশা শাহরুখ খানের দলের হার নিশ্চিত করে দিল। এবারই পঞ্জাব কিংসে আসা শাহরুখ খান ৯ বলে একটি বাউন্ডারি ও জোড়া ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ২২ রানে অপরাজিত থেকেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। শেষ ওভারে পঞ্জাবের জয়ের জন্য দরকার ছিল মাত্র ৫ রান। আইয়ারের দ্বিতীয় বলে রাহুল আউট হয়ে গেলেও হার এড়াতে পারেনি কেকেআর। ৫৫ বলে ৪ বাউন্ডারি ও দুই ওভার বাউন্ডারির সাহায্যে ৬৭ রানের অধিনায়কোচিত ইনিংস খেলে ম্যাচের সেরা হয়েছেন রাহুল। হেরেও ১২ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থান ধরে রেখেছে নাইটরা। সমসংখ্যক ম্যাচ খেলে ১০ পয়েন্ট নিয়েই পঞ্চম স্থানে রয়েছে পঞ্জাব।
