রাজনীতি
তৃণমূলে ফিরলেন সব্যসাচী দত্ত, বিধানসভায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিমের হাত থেকে নিলেন দলীয় পতাকা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ২০১৯ সালে পুজোর আগেই দলীয় নেতৃত্বের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করে তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। ২ বছর ৪ দিন পর আরও একটা দুর্গাপুজোর আগে আবার পুরনো দলে ফিরলেন। আজ বিধানসভায় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং ফিরহাদ হাকিমের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দিলেন বিধান নগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তৃণমূলে যোগ দিয়ে সব্যসাচী বলেন, ‘ভুল বোঝাবুঝির জন্য দল ছেড়েছিলাম।
আমায় আবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রহণ করেছেন। পার্থদা, ববিদা গ্রহণ করেছেন। আমি কৃতজ্ঞ। দল যে ভাবে বলবে সে ভাবে কাজ করব।’ তবে তৃণমূল সূত্রে খবর, এখনই দলের কোনও দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না সব্যসাচী দত্তকে। গত কয়েক দিন ধরেই সব্যসাচী দত্তের তৃণমূলে ফেরা নিয়ে জল্পনা জোরালো হয়েছিল। বৃহস্পতিবার দুপুরেই অবশ্য তা স্পষ্ট হয়ে যায়। স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, তিনিই সব্যসাচীকে দলে ফিরিয়ে নেওয়ার কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার বিধানসভায় বিধায়ক পদে শপথ নেওয়ার আগেই তিনি ঘনিষ্ঠমহলে বলেন, ‘আমি আজই ওকে নিয়ে নিতে বলেছি।’ মমতার সেই ঘোষণার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই সব্যসাচী বিধানসভায় আসেন। বেলা ৩টে নাগাদ তৃণমূলে যোগ দেন। বিজেপি রাজ্য সম্পাদক পদে ছিলেন সব্যসাচী। খড়দহে নির্বাচনে দলের পক্ষ থেকে তাঁকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।
তাই তাঁর দল ছাড়ায় বিজেপি যে আরও অস্বস্তিতে পড়ে গেল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। বিধানসভা নির্বাচনে বিধাননগরে সুজিত বসুর কাছে হারার পর থেকেই প্রকাশ্যে দল বিরোধী মন্তব্য করছিলেন সব্যসাচী দত্ত। এই দুর্গাপুজো নিয়েও বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের সঙ্গে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি। এ বছর পুজো হবে কি না তা নিয়ে বিজেপি দোলাচলে থাকায় সব্যসাচী দত্ত সংবাদমাধ্যমকে জানান, ‘গতবার ভোট ছিল তাই পুজো হয়েছে। এ বার ভোট নেই তাই পুজোও নেই।’ লখিমপুরে তৃণমূল সহ বিরোধী দলগুলোকে ঢুকতে না দেওয়ার প্রতিবাদে যোগী সরকারের বিরুদ্ধেও সরব হয়েছিলেন সব্যসাচী দত্ত। তাই নিয়ে আবারও দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তর্কে জড়িয়ে পড়েন তিনি।
মঙ্গলবার দিলীপ যোগী আদিত্যনাথের সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন জানিয়ে বলেছিলেন, ‘১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন সঠিক পদক্ষেপই করেছে।’ বুধবার সব্যসাচী বলেন, ‘কোনও আন্দোলনকে দমিয়ে দেওয়া পদ্ধতি হতে পারে না। এটা গণতান্ত্রিক দেশ, এ তো তালিবান শাসন নয়।’ বুধবার সব্যসাচী ওই মন্তব্য করার পর থেকেই তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা জোরদার হয়েছিল। যদিও বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য এই দলবদলকে গুরুত্ব দিতে নারাজ। তিনি বলেন, ‘উনি যেচেই বিজেপিতে এসেছিলেন। আমরা ওঁকে ডাকিনি। ফলে আজ তিনি চলে যাওয়াতেও আমাদের কিছু বলার নেই। কারণ, বিজেপি নেতা-নির্ভর নয়, কর্মী-নির্ভর দল।’
বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং বলেছেন, ‘যেদিন মুকুল রায় চলে গেলেন সে দিনই আমাদের ভেবে নেওয়া উচিত ছিল যে সব্যসাচী দত্ত আর আমাদের সঙ্গে থাকবেন না। কারণ সব্যসাচী ও মুকুল একই মুদ্রার এপিঠ আর ওপিঠ। তা সত্ত্বেও আমাদের দল একটু উদার, তাই মরা মানুষ নিয়েও আমরা চিন্তা-ভাবনা করে থাকি। আমাদেরও এবার চিন্তা করার সময় এসেছে, যাতে এই ধরনের লোককে আর গুরুত্ব না দেওয়া হয়।’