বাংলার খবর
শহরে পোলিও আতঙ্কের মধ্যেই সকলকে সতর্ক করলেন দেশের শেষ পোলিও আক্রান্ত রুকসা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: কলকাতার মেটিয়াবুরুজে লাইভ পোলিও জীবাণু পাওয়া গিয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে গোটা শহরে। তারমধ্যেই রাজ্যবাসীর কাছে কাতর আবেদন জানালেন দেশের শেষ পোলিও আক্রান্ত রুকসা খাতুন। মেটিয়াবুরুজের ঘটনা জানতে পেরেই রুকসার কাতর আর্জি, ‘আমার বাবা-মা যে ভুল করেছিলেন, সেই ভুল যেন আর কেউ না করে ! তারা যেন ছেলেমেয়েদের পোলিও টিকা দেন।’ শুধু রুকসা নন, পেশায় জরি শিল্পী তাঁর মা সাবিরা বিবিও সকলকে অনুরোধ করেছেন, ছোট অবস্থায় তাঁরা মেয়েকে কোনও টিকা খাওয়াননি। তাই ভুল হয়ে গিয়েছে। তাঁদের মতো কেউ যেন আর ভুল না করেন। বাচ্চারা যেন পোলিওর টিকা নেয়, এই আর্জিও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১১ সালে হাওড়ার পাঁচলার শুভয়ারা সাহাপাড়ায় দেশের শেষ পোলিও আক্রান্ত ছিলেন দু’বছর বয়সী এই রুকসা খাতুন। তারপর থেকে দেশে আর কেউ পোলিও আক্রান্ত হয়নি। সেই কারণেই ২০১৪ সালে ভারতকে ‘পোলিও মুক্ত দেশ’ হিসেবে আখ্যা দেয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। কিন্তু ১১ বছর পর খোদ কলকাতায় আবারও পোলিওর জীবাণু পাওয়া যাওয়ায় রীতিমতো তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। আর সেই কথা শুনেই নিজের দুর্দশার কথা সকলকে মনে করিয়ে দিয়ে সতর্ক করলেন রুকসা।
বহুদিন ধরেই পোলিওমুক্ত দেশ হিসেবেই গণ্য ভারত। সারা বছর ধরেই দেশে চলে পোলিও টিকাকরণ। বাদ নেই এই রাজ্যও। এর মধ্যেই খোদ কলকাতায় মিলল পোলিওর জীবাণু। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কলকাতা কর্পোরেশনের ১৫ নম্বর বোরোর মেটিয়াবুরুজের নর্দমা থেকে মিলেছে লাইভ পোলিওর জীবণু। গত মার্চে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নজরদারি চলার সময়ই এই পোলিওর জীবাণু ধরা পড়ে। তবে কলকাতা কর্পোরেশন সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত ওই এলাকায় কারও পোলিও আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া যায়নি। যদিও গোটা ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে কলকাতা কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ। পোলিও যাতে ছড়িয়ে না পড়ে, তার জন্য যথেষ্ট সতর্ক স্বাস্থ্য ভবন এবং কর্পোরেশন। জানা গিয়েছে, বুধবার দুপুরে কলকাতা কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ জরুরি বৈঠকেও বসেছিল। সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষও। বিশেষজ্ঞদের ধারণা, কোনও ‘ইমিউনো ডেফিসিট’ শিশুকে পোলিও ভ্যাকসিন খাওয়ানো হয়েছিল। তার শরীরে গিয়েই ভাইরাসটি মিউটেট করে। তারপর খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগের ফলে ভাইরাসটি বাইরের পরিবেশে চলে আসে।
জানা গিয়েছিল, রুকসাকে তাঁর বাবা-মা পোলিওর টিকা খাওয়াননি। প্রথমে তাঁর সাধারণ জ্বর হয়। পরে পা ফুলতে শুরু করে। সেই দেখে তাঁকে প্রথমে গাববেড়িয়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন তাঁর বাবা-মা। সেখানে পা বেঁকে যাওয়ায় তাঁর মল পরীক্ষা করা হয়। তখনই রুকসার পোলিও ধরা পড়ে। এরপর তিনি প্রায় আড়াই মাস বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালেও ভর্তি ছিলেন।