বাংলার খবর
সাইকেলে করেই কালীঘাটে পৌঁছে মুখ্যমন্ত্রীকে আমসত্ত্ব খাওয়াল ছোট্টো সায়ন্তিকা
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: অবশেষে ইচ্ছেপূরণ হল ছোট্ট সায়ন্তিকার। বৃহস্পতিবার সকালেই মালদহের ইংরেজ বাজারের ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের মনস্কামনা পল্লীর খুদে বাসিন্দা সায়ন্তিকা দাসের সঙ্গে দেখা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সায়ন্তিকা আনা মালদহর আমসত্ত্ব পেয়েও বেজায় আপ্লুত হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আর মুখ্যমন্ত্রীর হাতে আমসত্ত্ব তুলে দিতে পেরেও আপ্লুত দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রী সায়ন্তিকাও। এদিন ছোট্ট সায়ন্তিকা ও তার পরিবারের সঙ্গে ঘন্টাখানেক আলাপচারিতাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁর বাড়ি থেকে বেরিয়ে সায়ন্তিকার বাবা প্রদীপ দাস জানিয়েছেন, সায়ন্তিকার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। তার উত্তরে সায়ন্তিকা মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছে, সে বড় হয়ে আইপিএস অফিসার হতে চায়। সায়ন্তিকার স্বপ্ন পূরণে যাতে কোনও রকম বাধা বা সমস্যা তৈরি না হয়, তার জন্য সমস্ত রকম ভাবে সাহায্য করার আশ্বাস দেওয়ার পাশাপাশি পড়াশুনা নিয়ে কোনরকম সমস্যা হলে সরাসরি তাঁকে জানানোর কথাও মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন বলে জানিয়েছেন প্রদীপবাবু। মুখ্যমন্ত্রীর আশ্বাস পেয়ে রীতিমতো অভিভূত সায়ন্তিকার বাবা প্রদীপ দাস ও মা উমা দাস। প্রদীপবাবু জানিয়েছেন, ‘গোটা বিষয়টাই এখনও আমার কাছে স্বপ্নের মতো লাগছে।’
সম্প্রতি, মালদহয় গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সেখানকার আমসত্ত্ব খাওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিলেন। সেই কথা শুনে সায়ন্তিকা মালদহ থেকে সাইকেল চালিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জন্য আমসত্ত্ব নিয়ে কালীঘাটের বাড়িতে আসার ইচ্ছা প্রকাশ করে। স্কুল পড়ুয়াদের জন্য মুখ্যমন্ত্রী যে কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী প্রকল্প শুরু করেছেন, তার জন্যই অর্থের অভাবে পড়াশোনা বন্ধ হতে চলা সায়ন্তিকার দিদিরা আবাড় পড়াশোনা করতে পারছে। সেই কারণেই, মুখ্যমন্ত্রীকে কুর্নিশ জানাতে রাজ্যের সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিধি হিসেবে এই পরিকল্পনা করে আট বছরের সায়ন্তিকা। মালদহের জেলাশাসক, পুলিশ সুপার ও অন্যান্য সরকারি আধিকারিকদের লিখিতভাবে নিজের ইচ্ছের কথাও জানায় সায়ন্তিকা। তাঁরাই সায়ন্তিকাকে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে আসতে উৎসাহ জোগান।
সেই কথা শুনে, সায়ন্তিকা ও তার পরিবারকে জরুরি ভিত্তিতে কলকাতায় নিয়ে আসার জন্য গত মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রীর দফতর থেকে মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্রকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তারপরই জেলাশাসক সায়ন্তিকার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বুধবার রাতে গৌড় এক্সপ্রেসে মালদহ থেকে শিয়ালদহ আসার ব্যবস্থা করেন। বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা নাগাদ শিয়ালদহে নামার পর সায়ন্তিকা সেখান থেকে সাইকেলে করেই আমসত্ত্ব নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে যাওয়ার জেদ ধরে। কলকাতার জনবহুল রাস্তায় যাতে সাইকেল চালাতে সায়ন্তিকার কোনও অসুবিধা না হয়, তার জন্য তাকে রীতিমতো এসকর্ট করে কালীঘাটে নিয়ে যায় কলকাতা পুলিশ।