বাংলার খবর
কল্যাণীর মহিলার শরীরে মিলল চিন-হংকঙের বিরল প্রজাতির কৃমি!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বারবার জন্ডিস হচ্ছিল। এরপর গত বুধবার তথা ১১ এপ্রিল পেটে ব্যথা নিয়ে কল্যাণী কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হাসপাতালের বহির্বিভাগে দেখাতে যান নদিয়ার গয়েশপুরের বাসিন্দা বছর ৩৫ এর এক মহিলা। প্রাথমিক চিকিৎসার পর চিকিৎসকরা তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি হতে পরামর্শ দেন। চিকিৎসকদের পরামর্শে হাসপাতালের শল্য বিভাগে ভর্তি হন ওই মহিলা।
গত শুক্রবারই তিন সদস্যের এক চিকিৎসক দল ওই মহিলার অস্ত্রোপচার করেন। প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে Choledocho – Duodenostomy নামে অস্ত্রোপচার। মূলত পিত্তনালীর সঙ্গে খাদ্যনালীর সংযোগ করার সময় কিছু সমস্যা দেখতে পান চিকিৎসকরা। তখনই চিকিৎসকদের চোখ কপালে উঠে যায়। পিত্তনালী থেকে ছ’টি জ্যান্ত কৃমি বের করেন তাঁরা। কিন্তু আসল ঘটনা হল, ওই কৃমি গুলো বিরল প্রজাতির। চিকিৎসকরা বলছেন, ওই প্রজাতির কৃমির নাম ফ্যাসিওলা হেফাটিকা। কৃমিগুলো পাতার মতো দেখতে হয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা৷ যা ভারতবর্ষে বিরল বলে জানিয়েছেন কল্যাণী হাসপাতালের অধ্যক্ষ ও শল্য চিকিৎসক সুবিকাশ বিশ্বাস। সাধারণত, ইউরোপ-সহ চিন, হংকংয়ের মানুষের শরীরে এই ধরনের কৃমির দেখা মেলে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। শল্য চিকিৎসক ও কল্যাণী হাসপাতালের অধ্যক্ষ চিকিৎসক সুবিকাশ বিশ্বাস জানিয়েছেন, এই ধরনের কৃমির চিকিৎসার ওষুধ শুধুমাত্র ইউরোপের দেশ গুলোতেই পাওয়া যায়। তবে ভারতে এর বিকল্প ওষুধ পাওয়া যায়। সেই ওষুধই দেওয়া হচ্ছে ওই মহিলাকে।
তিনি বলেছেন, ‘রোগীর পিত্তনালীতে যে ধরনের কৃমি পাওয়া গিয়েছে, তা আমাদের দেশ এবং রাজ্যে বিরল৷ পিত্তনালীর মধ্যে ছ’টি বিশেষ ধরনের কৃমি পাওয়া গিয়েছে৷ কৃমি গুলো অনেকটা ছোট পাতার মতো দেখতে। এই প্রজাতির কৃমির নাম ফ্যাসিওলা হেপাটিকা৷ তবে অস্ত্রোপচারটা বিরল নয়৷ সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ছ’টি কৃমিই জ্যান্ত ছিল৷ এই কৃমির জন্যই ইনফেকশন হয়ে রোগীর পিত্তনালী শুকিয়ে গিয়েছিল৷ তবে এর চিকিৎসা আছে৷ আমরা রোগীকে কৃমিনাশক ওষুধ দেব৷ যদিও এই কৃমির চিকিৎসার জন্য নির্দিষ্ট ওষুধটি আমাদের দেশে পাওয়া যায় না৷ ইউরোপিয়ান দেশগুলোতেই পাওয়া যায়৷ তবে এর বিকল্প ওষুধ আমাদের দেশে পাওয়া যায়৷ সেগুলোই দেওয়া হবে রোগীকে।’ বিনা খরচে সরকারি হাসপাতালে এই বিরল অস্ত্রোপচার হওয়ায় এবং রোগী সুস্থ থাকায় খুশি রোগীর পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু নদিয়ার এই মহিলার শরীরে বিরল প্রজাতির এই কৃমি কী করে বাসা বাঁধল, তা এখনও বুঝে উঠতে পারছেন না চিকিৎসকরা।