বাংলার খবর
ময়নাগুড়িতে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ, মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৯, আহত ৩৬

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: শুক্রবার সকালেই ময়নাগুড়িতে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করলেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণ। বৃহস্পতিবার মাঝরাতে হাওড়ায় পৌঁছে সেখান থেকেই বিশেষ ট্রেনে শুক্রবার সকালে দোমহনিতে পৌঁছে ট্রলিতে চেপে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘খুবই দুঃখজনক ঘটনা। উদ্ধারকাজ শেষ হয়েছে।
আমি পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছি। দুর্ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’রেলমন্ত্রীর আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি গোটা বিষয়টির ওপর নজর রাখছেন। তিনি প্রতিনিয়ত খোঁজখবর নিচ্ছেন।’ একইসঙ্গে হতাহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তাঁর সঙ্গে দুর্ঘটনাস্থলে রয়েছেন রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ রেলের উচ্চপদস্থ কর্তারা। এদিন সকালেই দুর্ঘটনাস্থলে যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জন বারলা। দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন তিনি। আহতদের দেখতে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে যান রেলমন্ত্রী। সেখানে আহতদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি চিকিৎসা সংক্রান্ত খোঁজখবর নেন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে। বৃহস্পতিবার ময়নাগুড়ি-দোমহনি স্টেশনের মাঝে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটে। বিকানের থেকে গুয়াহাটি যাওয়ার সময় আপ বিকানের-পাটনা-গুয়াহাটি এক্সপ্রেস (১৫৬৩৩) লাইনচ্যুত হয়।
ঘটনায় ১২টি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। তার মতে আটটি বগি সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ট্রেনে ১ হাজার ৫৩ জনের মতো যাত্রী ছিলেন। এবং অস্থায়ী কামরায় ৫৭৫ জন যাত্রী ছিলেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। আহত হয়েছেন বহু যাত্রী। গুরুতর আহত অবস্থায় এখনও পর্যন্ত ৩৬ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ৬ জন যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক। উদ্ধারকাজ শুরু করেছে রেল কর্তৃপক্ষ, বিএসএফ, সশস্ত্র সীমা বল-এর জওয়ানরা।। বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীও ঘটনাস্থলে রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে ময়নাগুড়ি গ্রামীণ হাসপাতাল এবং জলপাইগুড়ি সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে বেশ কয়েকজনকে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে। কী কারণে এই দুর্ঘটনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়।
দুর্ঘটনায় উচ্চপর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রেল। ইঞ্জিনে ত্রুটির কারণেই দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে জানিয়েছেন রেলমন্ত্রী। তবে কেন অত্যাধুনিক কোচ ব্যবহার করা হয়নি এবং দেরিতে হাইড্রোলিক ক্রেন এসেছে কেন, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। শুক্রবার সকাল থেকেই হাইড্রোলিক ক্রেনের মাধ্যমে উল্টে যাওয়া রেলের কামরাগুলোকে সরানোর কাজ শুরু হয়েছে। লাইন অনেকটাই পরিষ্কার করা হয়ে গিয়েছে। কামরার ভিতর আর কোনও যাত্রী আটকে নেই এবং উদ্ধারকার্য শেষ হয়েছে বলে রেলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
ট্রেন থেকে উদ্ধার হওয়া যে সমস্ত যাত্রীর বাড়ি আলিপুরদুয়ার, কোচবিহারে, তাঁদের উত্তরবঙ্গ পরিবহণ নিগম (এনবিএসটিসি)-এর বাসে করে বাড়ি পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। কয়েকজন যাত্রীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে ময়নাগুড়ি শহরের বিএড কলেজ ও এক ধর্মশালায়। আপাতত সেখানেই তাঁরা থাকবেন। একটু সুস্থ হলে তাঁদের বাড়ি ফেরার ব্যবস্থা করবে প্রশাসন। এনবিএসটিসির চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায় জানিয়েছেন, অন্তত ৩৫টি বাসে আড়াইশো থেকে তিনশো যাত্রীকে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে বাড়িতে কিংবা নিকটবর্তী স্টেশনে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে।