দেশের খবর
গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধের আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্যে ঊর্ধ্বমুখী করোনা এবং ওমিক্রন সংক্রমণে লাগাম টানতে সোমবার থেকে আগামী ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত জারি হয়েছে করোনার কড়া বিধি-নিষেধ। স্কুল-কলেজ সহ সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ৫০ শতাংশ লোক নিয়ে সরকারি-বেসরকারি অফিস চলবে। রাত ১০ টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত জারি থাকবে নৈশ কারফিউ।
বন্ধ থাকবে সমস্ত বিনোদন পার্ক, পর্যটনকেন্দ্র, চিড়িয়াখানা। ৫০ শতাংশ লোক নিয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকবে রেস্তোরাঁ, শপিং মল, বাজার, থিয়েটার ও সিনেমা হল। লোকাল ট্রেন চলাচলের সময় সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়েছে। প্রথমে সন্ধে সাতটা পর্যন্ত বলা হলেও পরে রাত দশটা পর্যন্ত লোকাল ট্রেন চালানোর কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। সামাজিক, ধর্মীয়, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বিবাহ অনুষ্ঠান, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় উপস্থিতির সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে নবান্নের জারি করা নির্দেশিকায় স্পষ্ট করে কিছু বলা হয়নি। তাই এই বছরের গঙ্গাসাগর মেলা বন্ধ করার আবেদন জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা হল। সোমবার এই মামলা দায়ের করলেন পেশায় চিকিৎসক অভিনন্দন মন্ডল। মামলাকারীর অভিযোগ, গঙ্গাসাগর মেলা উপলক্ষে রাজ্যে প্রায় ৩০ লক্ষেরও বেশি পুণ্যার্থী ভিড় করেন।
বর্তমান পরিস্থিতিতে তা খুবই উদ্বেগজনক। মেলা হলে সমস্ত স্বাস্থ্যবিধি শিকেয় উঠবে। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় সাধারণ মানুষের কী অসহায় অবস্থা হয়েছিল, চিকিৎসক হওয়ায় তিনি তা খুব কাছ থেকেই দেখেছেন। তাই চিকিৎসক হিসেবে তিনি কখনওই চান না, গঙ্গাসাগর মেলার জন্য আবার সেই পরিস্থিতি ফিরে আসুক। আগামী ৫ জানুয়ারি প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হতে পারে বলে জানিয়েছেন মামলাকারীর আইনজীবী সূর্যনীল দাস। প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার গঙ্গাসাগর থেকে ফেরার আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, বিহার, উত্তরপ্রদেশ সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে অসংখ্য মানুষ গঙ্গাসাগরে আসবেন। মেলায় আসা মানুষদের রাজ্য সরকার কোনভাবেই বাধা দিতে পারবে না।
পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী এও জানিয়েছিলেন, যাঁরা মেলায় আসবেন তাঁদের কোভিড বিধি মেনে চলতে হবে। রাজ্যের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে তারপরই মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, এটা সম্পূর্ণ মানুষের ব্যাপার। যাঁরা মনে করবেন আসবেন, যারা মনে করবেন আসবেন না। রাজ্য সরকার কাউকে আটকাবে না। এবং মেলাও বন্ধ হচ্ছে না। যদিও তার দু’দিন পরই রাজ্যে জারি করা হয়েছে করোনার কড়া বিধি নিষেধ। সরকার রাজ্যের বর্তমান করোনা পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। সবকিছু পর্যালোচনা করেই মেলা নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু তার আগেই বিষয়টা পৌঁছে গেল হাইকোর্টে।