ভোট আসে ভোট যায়, অসহায় মানসিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধার দুয়ারে পৌঁছায় না রেশন-বার্ধক্যভাতা
Connect with us

বাংলার খবর

ভোট আসে ভোট যায়, অসহায় মানসিক প্রতিবন্ধী বৃদ্ধার দুয়ারে পৌঁছায় না রেশন-বার্ধক্যভাতা

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দরিদ্র পরিবার, বৃদ্ধা মা মানসিক ভারসাম্যহীন, ছেলে মেয়ে মানসিক প্রতিবন্ধী। বাঁচতে হবে তবু মানসিক প্রতিবন্ধকতাকে জীবনের সঙ্গী করেই রান্নাবান্না সহ সংসারের কাজ করে চলেছে নন্দ পরিবারের অসহায় তিন সদস্য। স্বাভাবিক মানুষের মতো জীবনযাপন চলাফেরা হারিয়ে গিয়েছে জীবন থেকে। চলাফেরা করতে গেলেই বার বার পড়ে যায়, কোনও রকম কোনও কিছুকে অবলম্বন‌ করে উঠে দাঁড়ায় ছেলে সুজয়।

বয়স বেড়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধ মা সহ ছেলে-মেয়ে হারিয়েছে শারীরিক সক্ষমতা। পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ার নস্করদিঘী গ্রামের নন্দ পরিবারে মঞ্জরী দেবীর আর তেমন কেউ নেই রোজগার করে সংসার প্রতিপালন করার মতো। এমনিতেই সামান্য সরকারের দেওয়া রেশনটাও বাড়ি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ারও মতো কেউ নেই। তার উপর তিন চার মাস আগে আঁধার কার্ড থাকা সত্ত্বেও আঙ্গুলের টিপছাপ না মেলায় সেই থেকে রেশন সামগ্রী থেকে বঞ্চিত।

দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু হলেও তাঁদের দুয়ারে পৌঁছয়নি চাল ডাল। তারপর থেকে স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধানকে জানিয়েও কোনও সহযোগিতা পাইনি বলে অভিযোগ। ভোট এলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যায়, কিন্তু ভোটে জয়ী হওয়ার পরে প্রতিশ্রুতি রাখেনি নেতা নেত্রীরা, ঘুরেও তাকায়নি ওই অসহায় পরিবারের দিকে। স্বাভাবিক মানুষের মতো তাঁদের জীবন থেকে হারিয়েছে স্বাভাবিক ছন্দ। ৬৯বছর বয়সী মঞ্জরী নন্দ মানসিক বিধ্বস্ত হয়ে কথা বলার মতো ক্ষমতা হারিয়েছেন।  তাঁর মেয়ে প্রতিমাও মানসিক প্রতিবন্ধী। তবু মানসিক প্রতিবন্ধী দুই ছেলে মেয়েকে নিয়ে কোনও প্রকারে সংসার আগলে রেখে চলেছেন অসহায় বৃদ্ধা মা।

Advertisement

আরও পড়ুন: মর্মান্তিক পথদুর্ঘটনায় মৃত ২ ছাত্র , আহত ১

আর এরই  মাঝে যেন গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়ে দাঁড়িয়েছে সংসারের অনটন। দীর্ঘ পাঁচ মাসেরও বেশি সময় সরকারের রেশন দ্রব্য থেকে বঞ্চিত হয়ে রয়েছে ওই অসহায় পরিবার। রেশনের চাল ডাল কিছুই পাচ্ছেন না তাঁরা। রাজ্য সরকারের দুয়ারে রেশন প্রক্রিয়া চালু করলেও অসহায় নন্দ পরিবারের বাড়িতে কেন রেশন পৌঁছয়নি তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। তাঁর ওপর বৃদ্ধা মঞ্জরী নন্দ বার্ধক্যভাতা থেকেও বঞ্চিত এমনটাই অভিযোগ পরিবারের। তবে এই অবস্থায় কিছু জমানো টাকা রয়েছে, তাতেই কোনও রকম খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে হচ্ছে ওই পরিবারকে। প্রতিবেশিরা বাজার হাট করে নিয়ে এসে তাঁদের হাতে তুলে দেন।

প্রতিবেশীদের সহযোগিতায় দুবেলা দুমুঠো খেয়ে পরে বেঁচে রয়েছে ওই পরিবার। জানা গিয়েছে, একসময় আই সি ডি এসে অন্যের পরিবর্তে রান্না করতেন মঞ্জরী দেবী, করোনাকালে তা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর থেকে কাজ খোয়া যায় তাঁর। জমি বিক্রি করেই একসময় ছোট্ট ইটের বাড়ি তুলেছিলেন, তাতেই দিনযাপন করে চলেছেন অসহায় পরিবারটি। দুবার ব্রেনস্ট্রোক হওয়ার পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন বৃদ্ধা মঞ্জরী নন্দ। আজ আশ্রয়ের মতো ঘর আছে কিন্ত খাবার নেই। অন্যের বাড়ি থেকে ধার করে চাল ফুটিয়ে ভাত রান্না করে মেয়ে প্রতিমা। আর এভাবেই অন্যের দয়ায় বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাঁদের। তবুও মুখ ফিরে চাইনি প্রতিশ্রুতিমান নেতামন্ত্রীরা। 

Advertisement

আরও পড়ুন: স্বপ্নের বাইক কিনতে তিন বস্তা ১ টাকার কয়েন নিয়ে শোরুমে হাজির যুবক, তারপর যা হল…

 রাজ্য সরকারের কাছে তাঁদের কাতর আর্তনাদ,  সরকার যাতে তাঁদের পাশে থাকেন, এবং রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকারের রেশন তাঁদের বাড়িতে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। তবে তাঁরা হয়তো খেয়ে পরে বেঁচে থাকতে পারবেন। অসহায় বৃদ্ধাকে তাঁর দুরাবস্থার কথা জানতে চাওয়া হলে তিনি ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন, কথা ঠিক মতো বলতে না পারলেও কোনও প্রকার বুঝে নিতে হয়েছে তিনি সরকারি সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত, পাশে নেই রাজ্য সরকার। 

Advertisement