মহানগর
প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে অক্সিজেন ছাড়াই ধৌলাগিরি জয় করলেন চন্দননগরের পিয়ালী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : প্রথম ভারতীয় মহিলা হিসেবে অক্সিজেন সিলিন্ডার ছাড়াই ধৌলাগিরি শৃঙ্গ জয় করলেন হুগলির চন্দননগরের পিয়ালী বসাক। এর আগে ২০১৮ সালে মানাসুলু জয় করেছিলেন পেশায় শিক্ষিকা পিয়ালী। তার আগে এভারেস্টের খুব কাছে পৌঁছেও ফিরে আসতে হয়েছিল তাঁকে। সেই থেকেই তাঁর জেদ চেপে যায়। গত ৫ সেপ্টেম্বর চন্দননগর থেকে মিথিলা এক্সপ্রেসে রকসৌল পৌঁছে সেখান থেকে নেপাল যান পিয়ালী।
সাধারণত আট হাজার মিটার উচ্চতায় উঠতে অক্সিজেনের সাহায্য লাগে। কিন্তু শুক্রবার সকালে এক এজেন্সির সহায়তায় অক্সিজেন ছাড়াই ধৌলাগিরি শৃঙ্গ (৮১৬৭ মিটার) জয় করেন চন্দননগরের এই পর্বতারোহী। পিয়ালী ছাড়াও আরও দুই ভারতীয় ও চার শেরপা এই অভিযানে ছিলেন। সকলে অক্সিজেন নিয়ে এই অভিযান করলেও একমাত্র চন্দননগরের পিয়ালী অক্সিজেন ছাড়া এই শৃঙ্গ জয় করেন। এই অভিযানে তিনি অক্সিজেন ছাড়াই উঠবেন, তা তাঁর পরিবারও জানতো না। মেয়ের এই অভিযানের সাফল্যে উচ্ছোসিত পিয়ালীর পরিবার। পিয়ালী ২০১৪ সালে শিক্ষকতার চাকরি পান। বর্তমানে তিনি চন্দননগর কানাইলাল বিদ্যামন্দিরের শিক্ষিকা। তাঁর এই সাফল্যে তাঁর সহকর্মী থেকে শুভাকাঙ্ক্ষীরা সকলেই খুশি। বরাবরই শান্ত প্রকৃতির মেয়ে পিয়ালী। তবে পাহাড়ের প্রতি ছোট থেকেই একটা আলাদা ভালোবাসা ছিল তাঁর। সেই ভালোবাসাই তাঁকে বারবার টেনে নিয়ে গিয়েছে বিভিন্ন শৃঙ্গ জয়ের দুঃসাহসী অভিযানে।
হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছেন। আর্থিক প্রতিকূলতাকে ছাপিয়েই তিনি বারবার ছুটে গিয়েছেন বিভিন্ন শৃঙ্গ জয় করতে। এই শৃঙ্গ জয় করার জন্য বহু অর্থ প্রয়োজন। তবে সেই রকম কোনও স্পন্সর বা সরকারি সহায়তা না পেয়ে লক্ষাধিক টাকা ঋণ করতে হয় তাঁকে। তাঁর বোন তমালী বসাক নিজেও আর্টিফিশিয়াল রক ক্লাইম্বিংয়ের কোচ। তবে তিনি কোনদিন অভিযানে যাননি। তাই দিদির এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত তমালী। তিনি জানিয়েছেন, ‘দিদি ছোট থেকেই খুব শান্ত প্রকৃতির। ছোট থেকেই ওর পাহাড়ে যাওয়ার নেশা ছিল। ছোটবেলায় আমরা বাবা-মায়ের সঙ্গে অনেকবার পাহাড়ে বেড়াতে গিয়েছি। সেখান থেকেই পাহাড়ের প্রতি আমাদের ভালো লাগা শুরু। সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় রক ক্লাইম্বিং কোর্স করে। হিমালয়ান মাউন্টেনিয়ারিং ইনস্টিটিউট থেকে প্রশিক্ষণও নিয়েছে দিদি। তার পর থেকেই দিদি অভিযানে বেরোতে শুরু করেছে। ওর এই সাফল্যে আমরা সকলেই খুশি এবং গর্বিত।