হাওড়াতে সম্প্রীতির ছবি, প্রৌঢ়ের সৎকারে এগিয়ে এলেন সংখ্যালঘু প্রতিবেশীরা
Connect with us

বাংলার খবর

হাওড়াতে সম্প্রীতির ছবি, প্রৌঢ়ের সৎকারে এগিয়ে এলেন সংখ্যালঘু প্রতিবেশীরা

Raju Dhara

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বিজেবপির প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যে যখন উত্তাল গোটা দেশ, তখন সম্পূর্ণ ভিন্ন ছবি দেখা গেল হাওড়ার সাঁকরাইলে। টাকার অভাবে যখন এক প্রৌঢ়ের সৎকার করতে পারছিল না তাঁর পরিবার, তখন এগিয়ে এলেন সংখ্যালঘু প্রতিবেশীরা। শেষ পর্যন্ত তাঁদের সহযোগিতাতেই শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়া সাঁকরাইলের সর্দার পাড়ায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এলাকার বাসিন্দা বছর পঁচাত্তরের সন্তোষ কর্মকার দীর্ঘদিন ধরেই হৃদযন্ত্র ও শ্বাসকষ্ট সমস্যাজনিত অসুখে ভুগছিলেন। গত মঙ্গলবার তিনি হঠাৎই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রতিবেশী সোহরাব আলি ও মোস্তাক আলিদের সাহায্য তাঁকে কলকাতার এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এমনকি অসুস্থ ওই প্রৌঢ়কে হাসপাতালে রক্তও দিয়েছিলেন মোস্তাক নামে এক প্রতিবেশী। কিন্তু তারপরও সন্তোষ কর্মকারকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। গত বৃহস্পতিবারই তিনি প্রয়াত হন। বাবার চিকিৎসার খরচ যোগাতে গিয়ে প্রায় সর্বস্বান্ত হয়ে পড়েন ছেলে মাধব কর্মকার। এতটাই খারাপ অবস্থা হয় যে বাবার সৎকার করার অর্থ টুকুও ছিল না তাঁর কাছে।

এই খবর জানাজানি হতেই মাধবকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেন মোস্তাক, ফিরোজ, আসাদুলের মতো পাড়ার ছেলেরা। তাঁরাই নিজেরা অর্থ জোগাড় করে সন্তোষ কর্মকার সৎকারের জন্য বাঁশ, খই, ধূপ, মালা, নামাবলী কেনেন। শুধু তাই নয়, বাঁশ কেটে খাট তৈরি করার পাশাপাশি তাঁরাই কাঁধে করে সন্তোষবাবুর দেহ নিয়ে যান শ্মশানে। তবে গোটা বিষয়টা নিয়ে খুব একটা মাতামাতি করতে রাজি নন সর্দার পাড়ার সংখ্যালঘু যুবকরা। তাঁরা বলছিলেন, ‘আমাদের পাড়ায় দুই-চার ঘর হিন্দু পরিবার রয়েছে। আমরা সবাই প্রত্যেকে প্রত্যেকের বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়ি। আমরা সকলেই প্রতিবেশী। ছোট থেকেই একে অপরকে সাহায্য করতে দেখেই আমরা বড় হয়েছি। একজন প্রতিবেশী বিপদে পড়েছেন। তখন কি হাত-পা গুটিয়ে বসে থাকা যায়! বেশ কিছুদিন ধরেই একটি বিষয়কে নিয়ে গোটা দেশে অশান্তি চলছে। কিন্তু তার প্রভাব আমরা আমাদের পাড়ায় পড়তে দিইনি। আর দেবওনা।’

Advertisement

সর্দার পাড়ার প্রতিবেশীদের এই উদ্যোগ দেখে খুশি হাওড়ার পুলিশও। নূপুর শর্মার বিতর্কিত মন্তব্যকে ঘিরে রণক্ষেত্রর চেহারা নিয়েছিল এই হাওড়ারই একাধিক এলাকা। শান্তি বজায় রাখার পাশাপাশি সম্প্রীতির বার্তা দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এবার সেই সম্প্রীতির ছবিই দেখা গেল কিছুদিন আগেই উত্তাল হয়ে ওঠা হাওড়াতেই।

Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.