ধরাধামে শিব, কালী, পার্বতী! গাজনে হৈ-হৈ রব বাংলায়
Connect with us

বাংলার খবর

ধরাধামে শিব, কালী, পার্বতী! গাজনে হৈ-হৈ রব বাংলায়

Parama Majumder

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দিনে-দুপুরে এই ধরাধামে শিব, কালী, পার্বতী! রাস্তায় কখনও কালী কখনও বা পার্বতীর সঙ্গে নাচছেন মহাদেব। কখনও বা খড়গ হাতে রণংদেহী মূর্তি ধারণ করছেন মা কালী। প্রলয়নাচনে ক্লান্ত হয়ে পড়ে একটু সাইকেলও চড়ে নিচ্ছেন।

চড়ক পুজো উপলক্ষে এমনই দৃশ্য দেখা গেল জলপাইগুড়িতে। চৈত্র সংক্রান্তিতে চড়ক পুজোয় এলাকার স্কুল পড়ুয়ারা কালী, শিব, পার্বতী সহ বিভিন্ন দেবদেবী সেজে রাস্তায় ঘুরে ঘুরে গাজন নাচে মেতে উঠেছে। সেই সঙ্গে চড়ক পুজোর জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল ও অর্থ সংগ্রহও চলছে। সংগ্রহ করা সবকিছু‌ দিয়েই হবে পুজো। এই ভাবে সেজে রাস্তায় ঘুরে সকলকে আনন্দ দেওয়াটা বেশ উপভোগ করে এলাকার শিব, কালী, পার্বতীরা।

গাজন উৎসবটি মূলত মহাদেবকে তুষ্ট করতেই করা হয়। ‘গাজন’ শব্দটির উৎপত্তি গর্জন থেকে ৷ অনেকে মনে করেন সন্ন্যাসীদের হুঙ্কার রব শিবসাধনায় গাজন রূপেই প্রচলিত। ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণের প্রকৃতিখণ্ড অনুযায়ী চৈত্র কিংবা মাঘ মাসে এক-সাত দশ-পনেরো কিংবা তিরিশ দিন হাতে বেতের লাঠি নিয়ে শিবব্রতী হয়ে নৃত্য ইত্যাদি করলে মানুষের শিবলোক প্রাপ্ত হয়।

Advertisement

আরও পড়ুন: পয়লা বৈশাখের আগে সুখবর, সকলের জন্য খুলে গেল ভারত-বাংলাদেশের দরজা

পুরাণের এই উল্লেখ চড়ক কিংবা গাজন উৎসব রূপে পালিত হয়। গাজন উৎসবের মূল তিনটি অংশ হল ঘাট-সন্ন্যাস, নীলব্রত ও চড়ক। গ্রামবাংলায় আজও দেখা যায় গাজনের সেই বৈচিত্রপূর্ণ ছবি। বহুকাল ধরেই এই রীতি চলে আসছে। গ্রাম বাংলায় এই পুজো ডেল পুজো নামেও পরিচিত। এই পুজোর পরেই নাকি হয় চড়ক পুজো। এমনই মত গ্রামের প্রবীণদের।

কেউ সোজা করে রাখা পেরেকে শুয়ে আছেন,কারো জিভ এফোর ওফোর করে বেরিয়ে গেছে বর্ষা আবার কারো বা গাল ফুটো করে ঢোকানো লোহার শিক।ব্যাথা যন্ত্রনা ভুলে শিব সাধনায় মেতেছে আরামবাগের মানুষ।স্থনীয় শিব মন্দিরে সকাল থেকে গাজন দেখতে ভীর উপচে পরে।
গাজন বা চড়ক উৎসব হল বাংলার লোকো উৎসব।

Advertisement

প্রাচীন কাল থেকে যা চলে আসছে।তবে কালের নিয়মে অনেক জায়গায় এই গাজন হয় বন্ধ হয়ে গেছে না হলে কলেবরে ছোটো হয়েছে। আরামবাবে প্রাচীন রীতি এখনো মেনে চলেছেন গ্রামের মানুষ।আরামবাগ বাতানল ও মইগ্রামে চড়ক উপলক্ষে গ্রাম প্রদক্ষিন করেন চৈত্র মাসে সন্ন্যাস নেওয়া শিবের উপাসকরা।

আরও পড়ুন: চৈত্রের শেষে চড়ক পুজোয় মাতোয়াড়া বাংলা, জানুন এই পুজোর অজানা ইতিহাস

চড়ক উপলক্ষে মেলা বসে আর চৈত্র অবসানে গ্রাম ঘুরে পুজো দেওয়া হয় গ্রামের শিব মন্দিরে।আট থেকে আশি মহিলারাও এই গাজনে সামিল হন।গাজনের উদ্যোক্তা সুজয় চক্রবর্তী বলেন,”পূর্বপুরুষরা এই গাজন উৎসব শুরু করেছিলেন।কবে তা ঠিক জানা নেই। তবে গত ২৯ বছর ধরে আমি গাজন করে আসছি।গত কুড়ি বছর আগেও এত জাঁক ছিল না।শিবের মহিমার জন্য এখন হয়ত এত জাঁক জমক করে হচ্ছে।আতশবাজি পোড়ান থেকে পালাগান সবই হয় গাজন উপলক্ষে।বিকালে হয় চড়ক।যেখানে অনেক উঁচু থেকে ধারালো কাটারি বা ত্রিশূলের উপর ঝাঁপ মারে সন্ন্যাসীরা।তাই একে ঝাঁপানও বলা হয়।” 

Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.