বাংলার খবর
চৈত্রের শেষে চড়ক পুজোয় মাতোয়াড়া বাংলা, জানুন এই পুজোর অজানা ইতিহাস

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: চৈত্র মাসের শেষ দিনে চড়ক পুজোয় মেতে উঠেছেন গ্রাম বাংলার মানুষেরা। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই স্কুল পড়ুয়া। এই চড়ক পুজো উপলক্ষে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা কালী, শিব, পার্বতী সহ বিভিন্ন দেবদেবী সাজে ঘুরে ঘুরে গাজন নাচে মেতে ওঠেন।
চড়ক পুজোর জন্য বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাল, ডাল ও অর্থ সংগ্রহ করা হয়। সংগ্রহ করা চাল-ডাল সবকিছুই পুজোর কাজে লাগানো হয়। বিভিন্ন দেবদেবীর বেশে সেজে গাজন নাচতে তাঁদের খুব ভালো লাগে বলে জানিয়েছে কম বয়সী ওই পড়ুয়ারা। যদিও চৈত্র মাসের শেষদিনে এই চড়ক পুজো করা নিয়ে হিন্দু সমাজে নানা মতভেদ রয়েছে।
আরও পড়ুন: সন্তানের মঙ্গল কামনায় নীলের পুজো, তারকেশ্বর মন্দিরে ভক্তদের ঢল
কথিত আছে ১৪৮৫ সালে সুন্দরানন্দ ঠাকুর নামে এক রাজা এই চড়ক পুজোর প্রচলন করেন। রাজপরিবারের পুজো হলেও এটি কখনও রাজবাড়িতে হত না। এটি ছিল হিন্দু সমাজের প্রচলিত এক লোকসংস্কৃতি। এই পুজো ঘিরে আজও সমান উন্মাদনা রয়েছে বাংলার গ্রামীণ মানুষদের মধ্যে। সাধারণত নীলপুজোর পরদিন অর্থাৎ শেষ চৈত্রের দিনে এই চড়ক পুজো করা হয়। এই পুজো ঘিরে নানা খেলা দেখানো হয়, আবার মেলার আয়োজনও করা হয়।
আরও পড়ুন: দেউচা পাঁচামি আন্দোলনের জট কাটাতে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপের দাবি আন্দোলনকারীদের
তবে বাংলার বিভিন্ন জেলায় এই পুজো বিভিন্ন নামে যেমন, গম্ভীরা পুজো, শিবের গাজন, নীল পুজো, চড়ক পুজো বলেও পরিচিত। এই পুজোর আগের দিন চড়ক গাছকে পরিস্কার করা হয়। জল ভর্তি একটা পাত্রে শিবের প্রতীক শিবলিঙ্গ রাখা হয়। এই প্রতীক শিব ‘বুড়ো শিব’ নামেও পরিচিত। কথিত আছে এই পুজোর পৌরোহিত্য করেন পতিত ব্রাহ্মণেরা।
এই পুজোর বিশেষ কিছু রীতি রয়েছে, কুমিরের পুজো, জ্বলন্ত ছাইয়ের ওপর হাঁটা, কাঁটা, ছুরি বা ধারালো কিছুর ওপর লাফানো, শিবের বিয়ে,অগ্নিনৃত্য ইত্যাদি এই পুজোর বিশেষ অঙ্গ হিসাবে মনে করা হয়। যদিও বর্তমানে এই সব ঝুঁকিপূর্ণ নিয়ম অনেকটাই কমে গিয়েছে।