বাংলার খবর
জমিজটে আটকে বিদ্যুতের তার, দশ বছর ধরে বিদ্যুৎহীন ১৬ পরিবার

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বিদ্যুৎ নেই বাড়িতে। ল্যাম্পের আলোয় পড়াশোনা চলে পান্ডুয়ার বেড়েলা গয়লা পুকুর পাড়ার বাসিন্দাদের। বহু চেষ্টাতেও পৌঁছয়নি বিদ্যুৎ। এলাকার মোট ১৬টি পরিবার বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছেন দিনের পর দিন।
জানা গিয়েছে, বছর দশেক আগে পান্ডুয়ার বেড়েলা কোচমালি গ্রাম পঞ্চায়েতের গয়লা পুকুর পাড়ায় জমি কিনে বাড়ি করেন কয়েকটি পরিবার। তাঁদের পর আরও কয়েকটি পরিবার বসবাস শুরু করেন সেখানে। সেই সময় যার মাধ্যমে জমি কিনেছিলেন পরিবারগুলি, সে জানিয়েছিল জল-বিদ্যুতের কোনও অসুবিধা হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় অন্য চিত্র। বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে গেলে একটি ট্রান্সফরমার বসানোর প্রয়োজন। এছাড়াও যে জমির উপর দিয়ে বিদ্যুতের তার আসবে তা অন্য লোকের জমি।
এদিকে বিদ্যুৎহীন ওই পরিবারগুলি নিজেদের মধ্যে ট্রান্সফরমার কেনার টাকার ব্যবস্থা করে ফেলেন। বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার জন্য মিটার বসানোর জায়গাও তৈরি। কিন্তু, যে জমির উপর দিয়ে তার আসবে সেই জমি নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদ। যারফলে এখনও পর্যন্ত বিদ্যুৎ আর পৌঁছয়নি ভুক্তভোগী ঐ বাড়িগুলিতে। যারফলে প্রবল গরম হোক কিংবা অন্য সময় কষ্টের মধ্যে দিন কাটাতে বাধ্য হচ্ছেন গয়লা পাড়ার ১৬টি পরিবার।
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ‘রিসর্ট রাজনীতি’ বিতর্ক, টুইটে খোঁচা অভিষেকের
শুধু তাই নয়, ওই পরিবারের ছেলে-মেয়েদের পড়াশুনা চলছে লম্প বা মোমবাতির আলোয়। পাখা নেই তাই দিনের গরম থেকে বাঁচতে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের আম বাগানই এখন তাদের ভরসা। গ্রামবাসীরা জানান, পঞ্চায়েত থেকে জেলা পরিষদ বিদ্যুৎ দফতর সব জায়গায় ঘুরেও কোনও লাভ হয়নি। অথচ গয়লা পাড়ার এক পাশে রাস্তার ধারে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। বিদ্যুৎ কবে আসবে তার নিশ্চয়তা না থাকায় কয়েকটি পরিবার সোলার বিদ্যুৎ এর ব্যবস্থা বসিয়েছে বাড়িতে। কিন্তু তাতেও সমাধান কিছু হয়নি।
এখন কবে বিদ্যুৎ পৌঁছবে সেই আশাতেই দিন গুনছে পরিবারগুলি। তাঁদের অভিযোগ, রাত হলেই বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড়ের উপদ্রব বাড়ে, রয়েছে অন্ধকারে সাপের ভয়। স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্য নিমাই সরকার জানান, জায়গার সমস্যার থাকায় এতদিন বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি। বিদ্যুতের অভাবে সমস্যায় পড়তে হয় এলাকার বাসিন্দাদের। রাস্তা নিয়ে দুই পরিবারের বিবাদ রয়েছে।
পান্ডুয়া পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ অসিত চট্টোপাধ্যায় বলেন, ”ওরা আমাদের বিষয়টি জানিয়েছে। ওখানে জমিজট এমনভাবে পাকিয়ে আছে যে সেটা কিছুতেই খোলা যাচ্ছে না। যে কারণে পরিবারগুলি বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। আমরা চেষ্টা করছি প্রশাসনিকভাবে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টা মেটাতে, যাতে পরিবারগুলি বিদ্যুৎ পায়”।
আরও পড়ুন: একুশে জুলাইয়ে বিশেষ উদ্যোগ, নেতা-নেত্রীদের জন্য বিশেষ ড্রেস কোড
অভিযোগ পেয়ে, দু’দিন আগে জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সঞ্জয় দাস ও বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিকরা এলাকা পরিদর্শন করেন। বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ জানান, জায়গা নিয়ে একটা সমস্যা আছে। কিছু গাছপালাও আছে। তবে বিদ্যুৎ দিতে কোনও অসুবিধা হবে না। দফতরের সঙ্গে কথা হয়েছে শীঘ্রই একটা ব্যবস্থা করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাঁরা।