বাংলার খবর
সরানো হল পাভলভের সুপারকে, দায়িত্বে ন্যাশনাল মেডিক্যালের সুপার
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: বেনিয়মের অভিযোগে শোকজের উত্তর দিলেন পাভলভ মানসিক হাসপাতালের সুপার গণেশ প্রসাদ। মঙ্গলবার শোকজের দু’পাতার উত্তর দিয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনা নিয়ে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনে তলব করা হয়েছিল। সেইমতো তিনি স্বাস্থ্য ভবনে উপস্থিত হয়েছিলেন। সূত্রের খবর, পাভলভ হাসপাতাল সম্পর্কে ওঠা যাবতীয় অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁর থেকে যে যে প্রশ্নের উত্তর চাওয়া হয়েছিল, তা তিনি শোকজের জবাবে ঠিকঠাক দিয়েছেন কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। স্বাস্থ্য সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, পাভলভ হাসপাতালে পরিস্থিতি নিয়ে মঙ্গলবার স্বাস্থ্য ভবনে বৈঠক হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যে আরও একটি বৈঠক হবে। প্রয়োজনে আবারও ডাকা হতে পারে সুপার গণেশ প্রসাদকে।
সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার পাভলভের সুপারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা এবং স্বাস্থ্য সচিব। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগে তিনি অস্বীকার করেছেন বলে জানা গিয়েছে। তারপরই সুপারের পদ থেকে গণেশ প্রসাদকে সরিয়ে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, পাভলভ হাসপাতালের সুপারের দায়িত্ব সামলাবেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের সুপার। এবং হাসপাতালে অ্যাকাউন্টস বিভাগ দেখবেন ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজের অর্থ বিভাগ। তবে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে কিনা, তা ঠিক করবে রাজ্য সরকার।
গত এপ্রিল মাসে স্বাস্থ্যভবনের মানসিক স্বাস্থ্য বিভাগের কর্তারা পরির্দশন করেন রাজ্যে উপরের সারিতে থাকা এই পাভলভ মানসিক হাসপাতাল। সেই রিপোর্টে উঠে আসে ভয়ঙ্কর তথ্য। তারপরই পাভলভের সুপার গণেশ প্রসাদকে শোকজ করেন ডিরেক্টর অব পাবলিক হেলথ। গণেশ প্রসাদের থেকে জানতে চাওয়া হয়, এত বেনিয়ম ধরা পরার পরও কেন তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না?
শিউরে ওঠার মতো সেই রিপোর্টে বলা হয়েছিল, হাসপাতালের অন্ধকার, স্যাঁতসেঁতে, নোংরা দু’টি ঘরে ১৩ জন মহিলা আবাসিককে তালাবন্দি করে রাখা হয়েছিল। একটি ঘরে ৯ জন এবং অন্য ঘরে ৪ জনকে রাখা হয়েছিল। সেই ঘরগুলোর যত্রতত্র ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিল ভাঙা লোহার ধারালো টুকরো। আবাসিকদের সারা শরীরে নাকি ছিল ক্ষতচিহ্ন। সেদিকে নাকি ভ্রক্ষেপও ছিল না চিকিৎসক, নার্স এবং সুপারের। খাবারের গুণমানও খারাপ ছিল। আবাসিকদের অপরিষ্কার পাত্রে অস্বাস্থ্যকর, খাবার দেওয়া হতো বলেও অভিযোগ করা হয়।
এব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি হাসপাতালের কর্মীরা। উল্টে একে অপরের বিরুদ্ধে দোষারোপ করেন। স্বাস্থ্য ভবনের আধিকারিদের প্রশ্নের উত্তরে হাসপাতালের এক নার্সিং স্টাফ জানান, চিকিৎসকদের পরামর্শেই আবাসিকদের তালাবন্দি করে রাখা হয়েছে। যদিও লিখিত কোনও প্রমাণ পাভলভ কর্তৃপক্ষ দেখাতে পারেননি স্বাস্থ্যকর্তাদের। সুপার কর্মীসংখ্যা কম থাকার অজুহাতে দেন।