প্রায় ৫০০ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবে মেতেছে পঁচেটগড়!
Connect with us

বাংলার খবর

প্রায় ৫০০ বছরের পুরানো ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবে মেতেছে পঁচেটগড়!

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাস উৎসবকে ঘিরে মেতে উঠেছে পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুর সহ বিভিন্ন এলাকা। তার মধ্যে বিখ্যাত পঁচেটগড়ের রাস উৎসব। প্রায় ৫০০ বছরের পুরানো পঁচেটগড় রাজবাড়ির ঐতিহ্যবাহি এই রাস উৎসব।

ইতিহাস বলছে, একসময় এই রাস উৎসবের জাঁকজমক দুর্গোৎসবের চেয়ে কোনও অংশে কম ছিল না। রাজপরিবারের বর্তমান বংশধরদের দাবি, ওড়িশার আটঘর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন বাড়ির আদি পুরুষ কালামুরারি দাস মহাপাত্র। জগন্নাথ দেবের সামনে নিত্যদিন সঙ্গীত পরিবেশন করতেন তিনি। তাঁর সেই সঙ্গীতেই মুগ্ধ হয়ে রাজা তাঁকে মন্দির পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছিলেন। মন্দিরের পাশে পেয়েছিলেন জমি। পরবর্তী সময় মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের নজরে পড়ে যান। তাঁকে বাংলা, বিহার ও তাম্রলিপ্ত বন্দর পরিচালনার দায়িত্ব দেন মোঘল সম্রাট। কাজটি তিনি সূচারুভাবে করেন এবং পটাশপুর এলাকার খাঁড়ে বিশাল গড় নির্মাণ করেন। পরবর্তী সময়ে উদ্ধার হয় শিবলিঙ্গ।

শিবলিঙ্গের চারপাশে বেনারস থেকে আনা আরও চারটি শিবলিঙ্গ বসানো হয়। ঐ শিবলিঙ্গ দিয়েই কালামুরারি দাস মহাপাত্র তৈরি করেন পঞ্চেশ্বর মন্দির। ধীরে ধীরে পঞ্চেশ্বর নামটি প্রচার হতে থাকে। এখানেই তিনি তৈরি করেন পঁচেটগড় রাজবাড়ি। শ্রী চৈতন্যদেব যখন পটাশপুর হয়ে পুরী গিয়েছিলেন তখন জমিদার বাড়ির সদস্যরা শৈব থেকে বৈষ্ণব ধর্মে দীক্ষা নেন। পরে জমিদার বাড়ির কুলদেবতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন কিশোররাই জিউ। যাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর কার্ত্তিক পূর্নিমা থেকে শুরু হয় রাস উৎসব। পঁচেটগড় রাজবাড়ির রাস উৎসব এখন সর্বসাধারণের উৎসব। এই উৎসব ধর্ম, সংস্কৃতি ও সামাজিক ঐক্যের এক অপার মিলন ক্ষেত্র। প্রতিবছর এই উৎসব উপলক্ষে মেলায় শুধু জেলা নয়, জেলা ছাড়িয়ে পাশ্ববর্তী রাজ্য ওড়িশা থেকেও হাজার হাজার মানুষ ভিড় জমান।

Advertisement

রাস উৎসবে প্রতি সন্ধ্যায় কিশোররাই সহ কুড়িজন মহাপ্রভু বিগ্রহ মঞ্চে থাকেন। তবে রাতে ফের মূল মন্দিরে ফিরে আসেন কিশোররাই। আগামী ২৩ নভেম্বর দধি উৎসবের দিন প্রতিবারের মতোই ভোর থেকে রাত এগারোটা পর্যন্ত রাস মঞ্চে থাকবেন কিশোররাই জিউ। মেলা শুর হয়েছে শুক্রবার থেকে। চলবে ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত। প্রশাসনের অনুমতিক্রমে দশদিনের মেলায় ভিড় আটকাতে পর্যাপ্ত পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তায় গোটা মেলাচত্বরে লাগানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এবছর মেলা হলেও সবটাই হবে কভিড বিধি মেনে। এবারও বসছে না সঙ্গীতের আসর। গেটের মধ্যে থাকছে স্যানিটাইজেশনের ব্যবস্থা। থাকছে মাস্ক বিতরণের ব্যবস্থাও।

Continue Reading
Advertisement