আন্তর্জাতিক
বৃহৎ শিল্পপতিদের ঘাড়ে চাপাল সুপার ট্যাক্স, অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বড় ঘোষণা পাক প্রধানমন্ত্রীর
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: মুদ্রাস্ফীতি, ঋন ও রুগ্ন অর্থনীতিতে দীর্ঘদিন ধরেই জর্জরিত পাকিস্তান। তার সঙ্গে রাজনৈতিক অস্থিরতা তো রয়েছেই। কিছুদিন আগেই ইমরান খানকে সরিয়ে দিয়ে পাকিস্তানের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন শাহবাজ শরিফ। আর দায়িত্ব নেওয়ার পরই পাকিস্তানের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে বড়সড় সিদ্ধান্ত নিলেন শরিফ। এবার দেশের বৃহৎ শিল্পপতিদের উপর ‘সুপার ট্যাক্স’ চাপালো পাকিস্তান সরকার। এবার থেকে পাকিস্তানে বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোকে দিতে হবে ১০ শতাংশ করে সুপার ট্যাক্স। এই করের আওতায় পড়তে চলেছে ইস্পাত, সিমেন্ট, চিনি, সার, তেল, গ্যাস, তরল প্রাকৃতিক গ্যাস, ব্যাঙ্ক, গাড়ি, সিগারেটের মতো বড় সংস্থাগুলো। শনিবার পাকিস্তানের সংসদে এই কথা জানিয়েছেন দেশের অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল।
দেশের বৃহৎ শিল্পপতিদের উপর ১০ শতাংশ করে সুপার ট্যাক্স বসানোর কথা শুক্রবারই ঘোষণা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। মুদ্রাস্ফীতি কমাতে এবং দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতেই পাক সরকার এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন শরিফ। দেউলিয়া হওয়ার হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে এর থেকে ভালো উপায় আর নেই বলেও জাতির উদ্দেশে ভাষণে দাবি করেছেন তিনি। দেশকে অর্থনৈতিকভাবে চাঙ্গা করতে বড় লোকদের জন্যও নতুন কর কাঠামো ঘোষণা করেছে পাক সরকার। সেই করের নাম দেওয়া হয়েছে ‘দারিদ্র বিমোচন কর’। যাদের বার্ষিক আয় ১৫ কোটি টাকার বেশি, তাদের এক শতাংশ বেশি এবং যাদের আয় বার্ষিক ৩০ কোটি টাকার বেশি, তাদের ৪ শতাংশ করে বেশি কর দিতে হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শরিফ।
অর্থমন্ত্রী মিফতাহ ইসমাইল দাবি করেছেন, গত ইমরান খান সরকারের বাজেটে ঘাটতি মেটাতেই নতুন এই কর কাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ঋণে জর্জরিত পাকিস্তান। বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্থাগুলো পাকিস্তানকে আর্থিক সাহায্য করা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই নতুন করে ঋণ পেতে সরকারি ব্যয় কমানোর পাশাপাশি বাজেটে ঘাটতি মেটানোর পরামর্শ দিয়েছে ইন্টারন্যাশনাল মানিটারি ফান্ড। সেইমতো ইতিমধ্যেই সরকারি ব্যয় সংকোচ একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে বর্তমান পাক সরকার। এবার বাজেটে ঘাটতি কমাতে নতুন কর কাঠামো তৈরি করলেন শরিফ।
যদিও নতুন এই কর কাঠামো ঘোষণা হতেই পাকিস্তানের শেয়ারবাজারে বিপুল ধ্বস নেমেছে। সূচক নেমে যায় ৫ শতাংশের নিচে। কর কাঠামোয় আমূল সংস্কারের ফলেই শেয়ারবাজারে এই ধ্বস নেমেছে বলেই মনে করছে অর্থনৈতিক মহল। তাদের দাবি এরফলে সরকারের উপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা কমে যাচ্ছে। শরিফ সরকারের এই কর কাঠামো সংস্কার পাকিস্তানের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে পারে কিনা সেটাই এখন দেখার।