বাংলার খবর
পুরভোটের দিনই নজিরবিহীনভাবে বিধানসভা অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা রাজ্যপালের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্য সরকারের সঙ্গে রাজ্যপালের সংঘাত নতুন কিছু নয়। গত বিধানসভা নির্বাচনের পর তা নতুন আকার নেয়। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘাত আগেই চরমে পৌঁছে ছিল। এবার একেবারে পুরভোটের দিন ফের শিরোনামে রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর।
বিধানসভা অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেদিলেন রাজ্যপাল। সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী বিধানসভার অধিবেশন ‘প্রোরোগ’ করলেন তিনি। সাম্প্রতিক অতীতে দেশের কোনও রাজ্যেই প্রোরোগের নজির নেই। এর ফলে পরবর্তী অধিবেশন রাজ্যপালকেই ডাকতে হবে।শনিবার টুইট করে রাজ্যপাল লেখেন, সংবিধানের ১৭৪ নম্বর ধারার উপধারা ২-এর অধীনে ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে স্থগিত থাকছে রাজ্য বিধানসভার অধিবেশন।’ এই ধরণের নির্দেশিকা জারি করে পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা অধিবেশন স্থগিত রাখার ঘটনা এর আগে কখনও ঘটেনি। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য-রাজ্যপাল সংঘাত নতুন পর্যায়ে পৌঁছল, তাতে কোনও সন্দেহ নেই। রাজ্যপালের এই ঘোষণা ঘিরে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কারণ, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর রাজ্য বিধানসভার দু’টি অধিবেশন হয়েছে। একটি বাজেট অধিবেশন ও অন্যটি শীতকালীন অধিবেশন। গত ১৭ নভেম্বর ছিল শীতকালীন অধিবেশনের শেষ দিন।
সেদিন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য মুলতুবি করে দেন। ফলে পরের অধিবেশন ডাকতে পরিষদীয় দফতরের আর রাজ্যপালের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু সংসদীয় রীতি অনুযায়ী বাজেট অধিবেশন শুরু করতে রাজ্যের ক্ষেত্রে রাজ্যপালের অনুমোদনের প্রয়োজন হয়। কেন্দ্রের ক্ষেত্রে অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি। বাজেট অধিবেশন শুরুই হয় রাজ্যপাল বা রাষ্ট্রপতির সিদ্ধান্ত নিয়ে। শীতকালীন অধিবেশন শেষ হলেই পরিষদীয় দফতর সেই অধিবশনের সমস্ত নথি পাঠিয়ে দেয় রাজভবনে। রাজ্যপাল তাতে সই করেন। তারপর পরবর্তীতে একই পদ্ধতিতে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়। গত বছরের ১৭ নভেম্বর শীতকালীন অধিবেশন শেষ হয়ে গেলেও, এত দিন সেই ফাইল রাজভবনে পাঠানো হয়নি বলে জানা গিয়েছে।
সূত্রের খবর, পরিষদীয় দফতর থেকে ১০ ফেব্রুয়ারি সেই ফাইল রাজভবনে পাঠানো হয়। এবং ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সেই ফাইলে স্বাক্ষর করে অধিবেশনের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন রাজ্যপাল। রাজ্য মন্ত্রীসভার সঙ্গে আলোচনা করেই রাজ্যপাল এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলেই সূত্রের খবর। তবে রাজ্যপাল টুইট করে গোটা বিষয়টি জানানোয় অসন্তোষ প্রকাশ করেছে রাজ্যের শাসক দল। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘এই ধরনের ঘটনা অভিপ্রেত নয়। এমন কোনও প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত রাজ্যপাল টুইট করে জানাতে পারেন না।’ রাজনৈতিক মহলের ধারণা, রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যেভাবে প্রতিক্ষেত্রে রাজ্যপালের বিরুদ্ধে অসত্য তথ্য তুলে ধরার অভিযোগ করা হয়েছে, তাই এই সিদ্ধান্তের কথা টুইট করে সকলকে জানিয়ে কৌশলী পদক্ষেপ নিয়েছেন রাজ্যপাল।