দেশের খবর
যশবন্তকে নিয়ে কোনও বিরূপ মন্তব্য নয়, আলিমুদ্দিনকে কড়া বার্তা একে গোপালন ভবনের

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী নিয়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে বিশেষ বার্তা পাঠালো একে গোপালন ভবন। মঙ্গলবারই মুম্বইয়ে এনসিপি প্রধান শরদ পাওয়ারের নেতৃত্বে বৈঠকে বসেছিল ১৮ বিরোধী দলের নেতৃত্ব। সেখানেই বিরোধী জোটের রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হিসেবে যশবন্ত সিনহার নাম চূড়ান্ত চূড়ান্ত হয়। বাম, কংগ্রেস, আরজেডি-সহ সমস্ত বিরোধী দল যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করায় একটু বেশিই সতর্ক কেন্দ্রীয় সিপিআইএম নেতৃত্ব। সেই কারণেই বঙ্গ সিপিআইএম কে প্রার্থী নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বলার নির্দেশ পাঠিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। জানা গিয়েছে, মঙ্গলবারই একে গোপালন ভবন থেকে এই নির্দেশ এসে পৌঁছেছে আলিমুদ্দিনে।
সিপিআইএম সূত্রে খবর, সেই নির্দেশ নাকি বলা হয়েছে, দিল্লি থেকে সাম্প্রদায়িক বিজেপিকে মুছে দিতে যখন সমস্ত বিরোধীদল একজোট হয়েছে, তখন রাজ্য সিপিআইএম যেন রাষ্ট্রপতি প্রার্থী নিয়ে ভিন্ন পথে না হাঁটে। নির্দল প্রার্থী যশবন্ত সিনহাকে সমর্থন করছে পার্টি। প্রাক্তন তৃণমূল নেতা যশবন্তের বিরুদ্ধে কিছু বিরূপ মন্তব্য করা যাবে না। কারণ গত সপ্তাহে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বৈঠক ডেকেছিলেন তাতে সিপিআইএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি আগেই প্রতিনিধি পাঠানোর কথা ঘোষণা করে দেওয়ায় যথেষ্ট ক্ষুব্ধ হয়েছিল আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তবে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বে নির্দেশে পৌঁছানোর পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী নিয়ে যথেষ্টই সুর নরম বঙ্গ সিপিআইএমের। এই ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হলে পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী জানিয়েছেন, এটা সম্পূর্ণ কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সিদ্ধান্ত। তাই এই ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করা তাঁদের উচিত হবে না।
রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী জোটের প্রার্থী নিয়ে আলোচনা করতে গত ১৬ জুন দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে সমস্ত বিরোধী দলগুলোকে নিয়ে বৈঠক ডেকেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই বৈঠকে সিপিআইএম এবং সিপিআই কেও আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আমন্ত্রণ পাওয়ার পর সীতারাম ইয়েচুরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেন, বঠকে তাঁদের দলের প্রতিনিধি উপস্থিত থাকবেন। আর তাতেই ক্ষুব্ধ হন আলিমুদ্দিন স্ট্রিটের নেতারা। বঙ্গ সিপিআইএমের ক্ষোভ, তাদের সঙ্গে কোনও আলোচনা না করেই কেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকা বৈঠকে প্রতিনিধি পাঠানোর কথা আগাম জানিয়ে দেওয়া হল। যদিও সিপিআইএম সূত্রে খবর, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সীতারাম ইয়েচুরি কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং সেখানকার রাজ্য সম্পাদক কোডিয়ারি বালকৃষ্ণনের সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। তারপরই ওই বৈঠকে পার্টির প্রতিনিধি হিসেবে রাজ্যসভার নেতা এলমারাম করিমকে পাঠানোর কথা ঘোষণা করেন ইয়েচুরি।
বঙ্গ সিপিএমের অভিযোগ, রাজ্যে তাদের অন্যতম প্রতিপক্ষ তৃণমূল। তাই তৃণমূলের একজন রাষ্ট্রপতি প্রার্থী হওয়ায় তাদের আপত্তি। যদিও সিপিআইএম কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দাবি, যেহেতু যশবন্ত সিনহা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেই প্রার্থী হয়েছেন, তাই তিনি এখন কোনও দলের সদস্য নন। তাঁকে সমর্থন জানাতে পার্টির কোনও অসুবিধা নেই। তাই এই নিয়ে যাতে দলের পশ্চিমবঙ্গ শাখা বিরূপ কোনও মন্তব্য না করে, তাই আগে থেকেই সতর্কবার্তা পাঠিয়ে দিল একে গোপালন ভবন।