Nitish Kumar : স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী হবার ? দলবদলে রেকর্ড বিহারীবাবুর
Connect with us

রাজনীতি

Nitish Kumar : স্বপ্ন প্রধানমন্ত্রী হবার ? দলবদলে রেকর্ড বিহারীবাবুর

Rate this post

নিউজ ডেস্ক : বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার (Nitish Kumar) পুনারায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে গতকাল ইস্তফা দিলেন। কিন্তু গোটা গঠনায়  তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে রাজনৈতিক মহলে! ভারতীয় জনতা পার্টি মানে বিজেপি তো বটেই, বলতে গেলে ঘরোয়া ভাবে আরজেডি-কংগ্রেস এমনকি বিরোধী বাম দলগুলির নেতারাও বলছেন, যে ভাবে বিগত কয়েক বছরে নীতীশ ডিগবাজি খেয়ে দল বদল করেছেন, তাতে আসন্ন আগামী লোকসভা বা ২০২৫ সালের বিহার রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনের পূর্বেই তিনি যে ফের অবস্থান পরিবর্তন করবেন কি না! এমন নিশ্চয়তা কিন্তু নেই!

রাজরণে পটু নীতীশ আগে যখন বিহারের লালু যাদবের পরিবারতন্ত্রের অবসান ঘটিয়ে প্রথম বার মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন । জেডিইউয়ের (JDU)  নেতাকে  দীর্ঘদিন ব্যাপক ঘনিষ্ঠ ভাবে দেখেছেন আরজেডি (RJD) নেতা শিবানন্দ তিওয়ারি। এরপর বর্ষীয়ান ওই নেতার কথায়, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হলেও, নীতীশের গোড়া থেকেই পাখির চোখ ছিল প্রধানমন্ত্রিত্ব নেবার।’’ তাই বোঝা যায়  বিজেপির মতো দলের সঙ্গে জোট করেও নিজের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তি বজায় রাখার প্রশ্নে প্রথম থেকেই বিশেষ ভাবে যত্নবান ছিলেন নীতীশ কুমার। যেই কারণে একাধিক বার তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতৃত্বের সঙ্গে মনোমালিন্যের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল তবে  তাতেও সংখ্যালঘুদের পাশ থেকে সরে আসেননি রাজরণে পটু নীতীশ।

বহু রাজনীতিবিদদের মতে, নীতীশের প্রথম এনডিএ-র সঙ্গ ত্যাগও ছিলো সেই প্রধানমন্ত্রিত্বের আসন। ইতিহাস বলে ২০১৩ সালে, তার পরের বছর হতে যাওয়া লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি নরেন্দ্র মোদীকে প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার পর প্রথম বার এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসেন নীতীশ কুমার। সেই সময়ে তাঁর লক্ষ্য ছিল, যদি ভোটের পরে অ-কংগ্রেসি দলগুলি ভাল ফল করে আর সেই জোটের নেতা হিসেবে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে প্রধানমন্ত্রিত্বের দাবি জানাবেন। কিন্তু ২০১৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে এনডিএ মনোনীত মোদীর বিপুল ভোটে জয় মূলত নীতীশের পরিকল্পনায় জল ঢেলে দেয়। উল্টে বিহারে ৪০টি লোকসভা আসনের মধ্যে মাত্র দু’টি আসন পায় নীতীশের দল। তখন বাস্তব পরিস্থিতি বুঝতে পেরে চটপট এনডিএ-তে ফিরে যেতে বাধ্য হন নীতীশ।

Advertisement

ফের আসছে লোকসভা নির্বাচন। বিহারে যদি বিজেপির সঙ্গে জোট বজায় থাকতো তাহলে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নীতীশই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী থাকতেন। কিন্তু সে ক্ষেত্রে তাঁর প্রধানমন্ত্রীর পদপ্রার্থী হওয়ার স্বপ্ন যে অধরাই থেকে যেত। এছাড়া যে ভাবে নিজের রাজ্যেই কুর্মি ও ওবিসি সংখ্যালঘু ভোট নীতীশের পিছন থেকে সরে গিয়েছে তা থেকে একটি বিষয় একদম স্পষ্ট যে, আগামী দিনে বিহারে জেডিইউয়ের পক্ষে একক সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হওয়াটাও অসম্ভব। অন্যদিকে রাজ্যে ক্রমশ শক্তি বাড়াচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। নীতীশ বিলক্ষণ বুঝতে পারছেন, যে আগামী দিনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার লক্ষ্যে মূল লড়াইটি হবে বিজেপি ও আরজেডির মধ্যে তাই বিহারে তৃতীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে জেডিইউ আত্মপ্রকাশ করলে, সেখানে নীতীশের রাজনৈতিক জীবন কার্যত গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নেওয়া ছাড়া অন্য উপায় থাকবেনা তাঁর।

আর সেই ঝড় আটকাতেই পরিকল্পিত পদক্ষেপ করেছেন নীতীশ, এমনটাই বলছে রাজনীতিবিদরা । জেডিইউ নেতৃত্বের মতে, নীতীশের লক্ষ্যই থাকবে, ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিরোধী শিবিরের প্রধান মুখ হিসেবে নিজেকে তুলে ধরা। আর সেই কারণে এনডিএ ছেড়ে ইউপিএ-র সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তিনি। গতকাল আরজেডি লালুপুত্র তেজস্বী যাদব কে নীতীশ যে প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে ২০২৪ সাল পর্যন্ত তিনি বিহারের মুখ্যমন্ত্রী থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন। নীতীশ চান, শেষের এক বছর মুখ্যমন্ত্রী হোক তেজস্বী যাদব, যাতে তরুণ ওই নেতার নেতৃত্বে ২০২৫ সালের বিধানসভা নির্বাচন লড়তে পারে মহাজোট।

রাজনায়ক নীতীশের এনডিএ ছেড়ে বেরিয়ে আসাকে কংগ্রেস নেতৃত্ব স্বাগত জানিয়েছেন। তবে জেডিইউ নেতার ক্রমাগত পক্ষ বদলের প্রবণতা দেখে আসন্ন নির্বাচনগুলির আগে তাঁরা যে পুরোপুরি নিশ্চিন্ত তা কিন্তু হতে পারছেন না, ঘরোয়া ভাবে তা বলেই দিলেন কংগ্রেসের এক নেতা। জল্পনায় ইন্ধন জুগিয়ে বিহার বিজেপির নেতা রাধামোহন সিংহের মন্তব্য, ‘‘স্বার্থের সংঘাত হতে দিন। ফের নীতীশের ডিগবাজি খেতে দেখবেন।’’

Advertisement

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google NewsTwitter এবং Instagram পেজ)

Continue Reading
Advertisement
Click to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *