বাংলার খবর
কংক্রিটের দুর্গা প্রতিমা বানিয়ে মুশকিলে পড়ে গিয়েছেন বালুরঘাটের নিতাই দাস!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দুর্গার মৃন্ময়ী মূর্তি দেখতেই আপামর বাঙালি অভ্যস্ত। কিন্তু খড়, মাটি দিয়ে তৈরি মৃণ্ময়ী মূর্তির বদলে লোহা, বালি, সিমেন্ট দিয়ে তৈরি কংক্রিটের দুর্গা মূর্তি বানিয়ে তাক লাগালেন বালুরঘাট ব্লকের ডাংগি এলাকার এক বাসিন্দা। পেশায় রাজমিস্ত্রি নিতাই দাস ছোটবেলা থেকেই আঁকায় পারদর্শী। আর্থিক অনটনের কারণে ছোটবেলায় তাঁকে পড়াশোনা ছেড়ে রাজমিস্ত্রির কাজে লেগে পড়তে হয়। অল্পবিস্তর পড়াশোনার ফাঁকে তিনি যেটুকু আঁকা শিখেছিলেন সেই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়েই বিভিন্ন সময় নিতাই বানিয়েছেন বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তি।
এবার তিনি লোহা, সিমেন্ট, বালি দিয়ে আস্ত দেবী দুর্গার প্রতিমা বানিয়ে তাক লাগালেন। জানা গিয়েছে, এক ব্যক্তি দুর্গা মূর্তি বানিয়ে দেওয়ার আবদার জানালে এই মূর্তিটি বানিয়েছেন নিতাই। এরপরে অনেকেই মূর্তি দেখে খুশি হয়ে মূর্তি কিনতে চাইছেন। আর এই নিয়েই প্রতিমা শিল্পী বেশ মুশকিলে পড়েছেন। এই কংক্রিটের প্রতিমার দাম কত হওয়া উচিত তিনি বুঝতে পারছেন না। তাই তিনি ঠিক করেছেন যিনি তাঁকে বেশি দাম দেবেন তাঁকেই তিনি মূর্তিটি বিক্রি করবেন। কাজ থেকে ফিরে রাত বারোটা অবধি কাজ করে ১০-১২ দিনের মধ্যে নিতাই এই মূর্তিটি বানিয়েছেন। আর এই কাজে তাঁকে সাহায্য করেছেন তাঁর স্ত্রী। স্বামীর হাতে তৈরি এই মূর্তি দেখে খুশি স্ত্রী। মূর্তিটি তৈরি করতে নিতাই ব্যবহার করেছেন বালি, সিমেন্ট ও লোহার রড। যা তাঁর বাড়িতেই ছিল। এই কারণে এই মূর্তির সঠিক দাম তিনি এখনও নির্ধারণ করতে পারেননি। নিতাই বলেছেন, ‘ছোটবেলায় পড়াশোনার মাঝে আঁকতাম।
অভাবের সংসারে বেশি দূর পড়াশোনা করতে পারিনি। তাই রাজমিস্ত্রির কাজে লেগে পড়ি। আমার আঁকা দেখে এক পরিচিত একটি হনুমানের মূর্তি বানানোর জন্য আমাকে বলেছিল। অনেক সাহস নিয়ে মূর্তিটা বানিয়েছিলাম। সেটা দেখে সকলেরই পছন্দ হয়। তাতে অনেকটা সাহস পাই। তারপর অনেক দেব-দেবীর মূর্তি বানিয়েছে। সেই দেখেই আমাকে একজন এই কংক্রিটের দুর্গা মূর্তি বানাতে বলে। কাজ থেকে ফিরে রাত পর্যন্ত এই মূর্তি বানাতাম। সেই কারণেই ১০-১২ দিন লেগে গেল মূর্তিটা বানাতে। সারাদিন কাজ করলে তিন-চার দিনের মধ্যেই আমি এইরকম মূর্তি বানিয়ে ফেলতে পারি। বাড়িতেই সিমেন্ট বালি ছিল। তাই এই মূর্তি বানাতে বেশি খরচ হয়নি। তাই কত দাম নেওয়া উচিত সেটা বুঝতে পারছি না। এখন অনেকেই এই মূর্তিটা চাইছে। তাই বেশি দাম যে দেবে তাকে এই মূর্তিটা দিয়ে দেবো। ভবিষ্যতে আরও এই ধরনের মূর্তি বানানোর ইচ্ছা আছে।’