বাংলার খবর
কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে সরব হয়ে বিজেপি নেতাদের জেলে পোরার নিদান মমতার
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে গোটা দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে সবুজ ঝড় দেখা গেল পুরুলিয়া এসে থমকে গিয়েছিল তৃণমূলের জয়যাত্রা। লোকসভা হাতছাড়া হওয়ার পর, গত বিধানসভা নির্বাচনে পুরুলিয়ার ন’টি কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিতেছিল তৃণমূল। ৬টি আসনে জয়লাভ করেছিল বিজেপি। রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পর গতকাল অর্থাৎ সোমবারই পুরুলিয়ায় প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপর মঙ্গলবার পুরুলিয়ায় দলীয় কর্মীসভায় যোগ দিয়েই রাজ্য ও কেন্দ্রীয় বিজেপির বিরুদ্ধে সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সেই আক্রমণ থেকে বাদ পড়েনি কেন্দ্রের মোদি সরকার, বঙ্গ বিজেপি, পুরুলিয়ার স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ এবং বিরোধীরাও। ১০০ দিনের টাকা নিয়ে কেন্দ্রীয় বঞ্চনা বিরুদ্ধে রীতিমতো হুঁশিয়ারি সুরে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘নয় গরিবদের টাকা দাও, না হলে বিজেপি সরকার বিদায় নাও।’
পুরুলিয়ায় লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ফল ভালো হওয়ায় এদিন বক্তব্যের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় বিজেপিকেই আক্রমণ করে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী। ভোট এলেই মোদি সরকার প্রতিশ্রুতিতে ভরিয়ে দেয়, ভোটের পর কাউকে খুঁজেও পাওয়া যায় না বলে তোপ দাগলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তাঁর হুঙ্কার, ইডি-সিবিআই দেখিয়ে তাঁকে ভয় দেখানো যাবে না। ১০০ দিনের টাকা না দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে আক্রমণ করে তিনি বলেন, ‘মোদি সরকার ভেজাল সরকার। ভোট এলে উজালা, ভোট কাটলে ঘোটালা। আমাদের টাকা তুলে নিয়ে যাচ্ছে বিজেপি সরকার। গ্রামের মানুষ ১০০ দিনের কাজ করে। আমাদের টাকা এখান থেকে তুলে নিয়ে যায়। কারণ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কেন্দ্রের। সেই ৪০ শতাংশ টাকার মধ্যে ১০০ দিনের টাকা রয়েছে। বিজেপি সরকার ডিসেম্বর মাস থেকে ১০০ দিনের টাকা দিচ্ছে না। হয় গরিবদের টাকা দাও, নয় বিজেপি সরকার বিদায় নাও।’ ১০০ দিনের টাকা না পেলে দলীয় কর্মীদের ৫-৬ জুন থেকে ব্লকে ব্লকে মিটিং করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।
এদিন, ইডি-সিবিআই নিয়েও কেন্দ্রকে নিশানা করেন মুখ্যমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে তাঁকে ভয় দেখানো যাবে না বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। সেই সঙ্গে নোটবন্দিকে কেন্দ্রের সবথেকে বড় দুর্নীতি বলে আখ্যা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। গত সোমবার শ্যামনগরে ইডি ও সিবিআইয়-এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সেই সুরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন বলেছেন, ‘কেন্দ্রীয় সংস্থা দিয়ে বারবার ভয় দেখানো হচ্ছে। ওরা ঠিক করেছে ঘরে ঘরে সিবিআই পাঠাবে। আমি কিন্তু কাউকে ভয় পাই না। কখনও লালু প্রসাদ যাদবের বাড়িতে কেন্দ্রীয় এজেন্সি পাঠানো হচ্ছে, কখনও হেমন্ত সোরেনের বাড়িতে যাচ্ছে সিবিআই। কিন্তু বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে কেউ কোনও কথা বলছে না। বিজেপির মন্ত্রীদের ঘরে ঘরে সিবিআই-এর যাওয়া উচিত। কারও বুকে পাটা নেই প্রতিবাদ করার। আমার হিম্মত আছে কারণ পুরুলিয়া আমাকে লড়াই করতে শিখিয়েছে। বিজেপি নেতাদের গ্রেফতার করা উচিত। সবকটাকে জেলে পুরুক সিবিআই।’