দ্বারকেশ্বরের জলে প্লাবিত আরামবাগের বিস্তীর্ণ এলাকা, উদ্ধারকাজে নেমেছে এনডিআরএফ ও সেনা
Connect with us

বাংলার খবর

দ্বারকেশ্বরের জলে প্লাবিত আরামবাগের বিস্তীর্ণ এলাকা, উদ্ধারকাজে নেমেছে এনডিআরএফ ও সেনা

Published

on

Rate this post

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : গত কয়েকদিনের প্রবল বৃষ্টি এবং ডিভিসি জল ছাড়ার কারণে দ্বারকেশ্বর নদের জল উপচে আবার কোথাও বাঁধ ভেঙ্গে গোটা আরামবাগ শহর কার্যত জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। শহরের ১৯ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৬ টি ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়ে পড়েছে। প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার মানুষকে ২৫টি ত্রান শিবিরে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রায় পাঁচ হাজারের মতো মাটির বাড়ি ভেঙ্গে গিয়েছে। ত্রাণ না মেলারও অভিযোগ উঠেছে। বন্যা দুর্গতদের অভিযোগ, কোনও ত্রাণ সামগ্রী তারা ঠিক মতো পাচ্ছেন না। বহু বাড়িতে জল ঢুকে গিয়েছে।

যদিও ত্রাণ না পাওয়ার অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন পুর প্রশাসক। শুকনো খাবার, রান্না করা খাবার, ত্রাণ সামগ্রী ও দশ হাজার জলের পাউচ প্যাক দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুরপ্রশাসক স্বপন নন্দী। দ্বারকেশ্বরের জল রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে বইতে শুরু করেছে। আরামবাগ-বর্ধমান, আরামবাগ-মেদিনীপুর, আরামবাগ-বাঁকুড়া, আরামবাগ-কলকাতা, আরামবাগ-বন্দর রাজ্য সড়কের ওপর দিয়ে জল বইছে। ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থাও বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। আরামবাগ শহরে নামানো হয়েছে এনডিআরএফ- এর টিম। তারা স্পীড বোটে করে বিভিন্ন জলমগ্ন ওয়ার্ডে গিয়ে দুর্গত ও জলবন্দী মানুষের কাছে খাবার, ত্রান সামগ্রী, জল পৌঁছে দিচ্ছে। যদিও এখনও পরিস্থিতির কোনও উন্নতি হয়নি। জল যন্ত্রণায় জন-জীবন পুরোপুরি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিপদসীমার উপর দিয়ে বইছে রূপনারায়ণ ও দামোদর জলও ৷ জলের তলায় চলে গিয়েছে আরামবাগের কালিপুর মনসাতলা , দৌলতপুর পল্লীশ্রী মোড়। অন্যদিকে খানাকুলের ধান্যঘড়ি, পানশিউলি, বন্দর ঠাকুরানিচক-সহ একাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়ে পড়েছে ৷

আরামবাগ ও খানাকুলেও বন্যা দুর্গতেদের উদ্ধারের জন্য নামানো হয়েছে এনডিআরএফ ও সেনা। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রূপনারায়ণ ও দ্বারকেশ্বর নদীর বাঁধ ভেঙে যাওয়ায় জল ঢুকে পড়েছে নদী তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকায়। জলের তলায় চলে গিয়েছে পাঁচশো কাঁচা বাড়ি ও পঞ্চাশটি পাকা বাড়ি। ফলে কয়েক হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছেন। ঘরবাড়ি ছেড়ে রাস্তায় ত্রিপল টাঙিয়ে আশ্রয় নিয়েছে বহু মানুষ। আরামবাগের পল্লীশ্রী মোড়ের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমেও জল ঢুকে যাওয়ায় রোগীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। বন্যার কারণে সমস্ত বিদ্যুৎ পরিষেবা বন্ধ রাখা হয়েছে।
জানা গিয়েছে, আরামবাগ, পুড়শুড়া, খানাকুলের প্রায় ২০০ টি গ্রাম জলের তলায়। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ধান্যঘড়ি গ্রাম পঞ্চায়েত, কিশোরপুর ২ নম্বর পঞ্চায়েত।

Advertisement

সালেপুর এক নম্বর পঞ্চায়েত এলাকায় বাঁধ ভেঙে প্রচুর বাড়ি ও ফসলের জমি জলে তলিয়ে গেছে ৷ অন্যদিকে, আরামবাগ-তারকেশ্বর সড়কে জল উঠে যাওয়ায় যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আরামবাগ বন্দর রোডেও এক কোমর জল। দামোদরের জলে ভেসে গিয়েছে তারকেশ্বর ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা। কেশবচক, সন্তোষপুর, তালপুর এবং চাঁপাডাঙ্গা পঞ্চায়েত এলাকার নিম্ন দামোদর এলাকও প্লাবিত হয়ে গিয়েছে।

বৃহস্পতিবার রাতে থেকেই এই পঞ্চায়েত এলাকার গ্রাম গুলিতে হুহু করে জল ঢুকতে থাকে। শুক্রবার বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শনে যান পঞ্চায়েত সমিতির প্রতিনিধিরা। তারকেশ্বরের কেশব চক গ্রাম পঞ্চায়েতের পূর্ব কারারিয়ার গ্রামে কয়েক হাজার মানুষ জলবন্দি হয়ে পড়েছেন। সেই ভাবে উদ্ধারের কোনও উদ্যাগই প্রশাসন নেয়নি। সকাল থেকে খাবারের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এমনকী এই এলাকায় কোনও আশ্রয় শিবিরও খোলা হয়নি এখনও। জলের তোড়ে বেশ কিছু কাঁচা বাড়ি ভেঙে পড়েছে। গৃহহীনরা আশ্রয় নিয়েছে নদীর বাঁধে। ডিভিসি যদি আরও জল ছাড়ে তাহলে বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠার আশঙ্কায় দিন কাটছে আরামবাগ, খানাকুলবাসীর।

Advertisement
Continue Reading
Advertisement
Ads Blocker Image Powered by Code Help Pro

Ads Blocker Detected!!!

We have detected that you are using extensions to block ads. Please support us by disabling these ads blocker.