রাজনীতি
তৃণমূলের আবেদনের ভিত্তিতেই প্রয়াগরাজে গনহত্যার তদন্তে নামল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

রাজীব দত্ত : তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ এবং আবেদনের ভিত্তিতেই উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে দু’বছরের শিশু সহ একই পরিবারের ৫ জনকে খুন ও পুরিয়ে মারার ঘটনায় তদন্ত শুরু করতে চলেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গোটা ঘটনার তীব্র নিন্দা করার পাশাপাশি, দোলা সেনের নেতৃত্বে তৃণমূলের এক প্রতিনিধি দল গোটা বিষয়টি তদন্তের জন্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল। সেখানে যোগী রাজ্যের পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানোর পাশাপাশি গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখতে লিখিতভাবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানায় তৃণমূলের প্রতিনিধি দল।
সেই আবেদনটি গ্রহণ করেছিল ন্যাশনাল হিউম্যান রাইটস কমিশন। এবার সেই আবেদনের ভিত্তিতেই বিষয়টি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার প্রক্রিয়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন শুরু করতে চলেছে বলে জানা গিয়েছে।
উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজের থরবই থানার খেবরাজপুরে দুই বছরের এক শিশুসহ একই পরিবারের ৫ জনকে পাথর মেরে খুন করে মৃতদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ৫ মৃতের মধ্যে ছিলেন এক বৃদ্ধ দম্পতি, তাঁদের মেয়ে পুত্রবধূ এবং নাতনি। মৃতরা হলেন, রামকুমার যাদব (৫৫), তাঁর স্ত্রী কুসুম দেবী (৫২), মেয়ে মনীষা (২৫), পুত্রবধূ সবিতা (২৭) এবং নাতনি মীনাক্ষী (২)। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছিলেন, ওই দিন সকালে হঠাৎই রামকুমার যাদবের বাড়ি থেকে ধোঁয়া বের হতে দেখেন তাঁরা। গিয়ে দেখেন, বাড়ি জ্বলছে। কিন্তু ভেতরে ঢুকেই সকলে আঁতকে ওঠেন। একটি ঘরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে এবং একটি ঘরের মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে পাঁচটি রক্তাক্ত মৃতদেহ। তবে ঘরের এক কোণে থেকে রামকুমারের পাঁচ বছরের নাতনিকে উদ্ধার করা হয়। কারা, কী কারণে একই পরিবারের পাঁচ সদস্যকে নৃশংসভাবে খুন করল! আর কেনই বা পাঁচ বছরের নাতনিকে ছেড়ে দিল, সেই রহস্য এখনও উদ্ধার হয়নি।
তার উত্তর খুঁজতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। গত ১৬ এপ্রিল এই প্রয়াগরাজের নবাবগঞ্জের খাগলপুর গ্রাম থেকে একই পরিবারের পাঁচ জনের দেহ উদ্ধার হয়েছিল। এক মহিলা এবং তাঁর তিন মেয়েকে গলা টিপে খুন করার অভিযোগ ওঠে। এবং ঝুলন্ত অবস্থায় মহিলার স্বামীর দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনায় চার জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এক সপ্তাহর মধ্যেই আবারও যোগী রাজ্যে একই পরিবারে পাঁচ সদস্যকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। এই ঘটনা নিয়ে তৃণমূল উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ সহ বিজেপি কে তীব্র আক্রমণ করার পাশাপাশি সিবিআই তদন্তের দাবি জানায়। এবং রাজ্যসভার সাংসদ দোলা সেনের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দলকে সম্প্রতি ঘটনার বিষয়ে বিস্তারিত জানতে সেখানে পাঠায় তৃণমূল। কিন্তু তাদের মাঝপথেই আটকে দেয় উত্তর প্রদেশ পুলিশ। তারপরই গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তৃণমূলের পক্ষ থেকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের কাছে আবেদন জানানো হয়।