পিএসি চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা মুকুল রায়ের, এখনও পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেননি স্পিকার

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: সোমবার আচমকাই বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির (পিএসি) চেয়ারম্যানের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন মুকুল রায়। গত শুক্রবারই পিএসি-এর চেয়ারম্যান পদে মুকুল রায়ের মেয়াদ আরও এক বছর বৃদ্ধি করার কথা ঘোষণা করেছিলেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তার তিনদিনের মাথাতেই পদত্যাগ করলেন তিনি। জানা গিয়েছে, স্পিকারকে ইমেইল করেই মুকুল রায় তাঁর পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণেই তাঁর এই ইস্তফা বলে জানিয়েছেন মুকুল রায়।

তবে মুকুল রায়ের ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা হবে কিনা, তা নিয়ে এখনও তিনি সিদ্ধান্ত নেননি বলেই জানিয়েছেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই সঙ্গে তিনি ইস্তফাপত্র এখনও পাননি বলেই দাবি করেছেন। স্পিকার বলেছেন, ‘এই বিষয়ে আমার কাছে এখনও অবধি কোনও খবর আসেনি। আমার সচিবালয়ে এসে থাকতে পারে। যদি এসে থাকে, তবে তা এখনও আমার কাছে পৌঁছয়নি। এলে দেখব, চিঠিতে কী রয়েছে। পদত্যাগপত্র আইনমাফিক দেওয়া হয়েছে কি না, তা দেখা হবে। আইনমাফিক দেওয়া হলে তবেই তা গ্রহণ করব। নইলে নয়।’

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন মুকুল রায়। এরপর ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে কৃষ্ণনগর উত্তর কেন্দ্র থেকে বিজেপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হয়ে বিধায়ক হন তিনি। তারপরই গত বছরের ১১ জুলাই বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে ফেরেন মুকুল। তারপরই মুকুলকে বিধানসভার পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান পদে মনোনীত করে শাসকদল। মুকুল রায়কে পিএসি-র চেয়ারম্যান করা নিয়ে আপত্তি জানায় বিজেপি। সাধারণত বিধানসভার রীতি অনুযায়ী পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটির চেয়ারম্যান বিরোধী দল থেকেই হয়ে থাকেন। কিন্তু মুকুল রায় তৃণমূলে যোগ দেওয়ায় বিজেপি দাবি করে, বিরোধী দল থেকেই পিএসি চেয়ারম্যান করা হোক। কিন্তু, শাসক দল দাবি করে যে মুকুল রায় বিজেপিরই বিধায়ক।

এরপরই মুকুল রায়রায়ের বিধায়ক পদ খারিজের আবেদন করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। মামলা গড়ায় কলকাতা হাইকোর্ট পর্যন্ত। কিন্তু কিছুদিন আগেই সেই মামলার চূড়ান্ত রায় দিতে গিয়ে স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন, মুকুল রায় বিজেপিতেই আছেন। তাঁর দলত্যাগের কোনও নির্দিষ্ট প্রমাণ নেই। তারপরই, গত শুক্রবার স্পিকার বিধানসভার ৪১ কমিটির মেয়াদ আরও এক বছর বাড়িয়ে দেন। তার মধ্যে পাবলিক অ্যাকাউন্টস কমিটিও ছিল। কিন্তু তার তিন দিনের মাথাতেই সেই কমিটির চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করলেন মুকুল রায়। এবার এই কমিটির চেয়ারম্যান শাসক না বিরোধী দল থেকে হয়, সেই দিকেই এখন তাকিয়ে রয়েছে গোটা রাজ্যের রাজনৈতিক মহল।