Uncategorized
আইআইটি-তে ৫৮ র্যাঙ্ক করা কৃতি ছাত্রের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি বা আইআইটি-র প্রবেশিকা পরীক্ষা ‘জ্যাম’-এ সারা দেশের মধ্যে ৫৮ র্যাঙ্ক করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তবুও মন ভালো নেই উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের উদয়পুরের কৃতি ছাত্র অমিত দেবনাথের। বাড়ির ছেলের এই সাফল্যে উচ্ছ্বসিত হওয়ার পরিবর্তে দেবনাথ পরিবারের মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ে। পরিবারে একমাত্র উপার্জনকারী বাবার স্বল্প আয়ে দু’বেলা অন্ন জোগাতেই হিমশিম খাচ্ছে পরিবার। সেখানে আইআইটিতে পড়ার বিশাল খরচ জোগানোটা এক প্রকার অসম্ভবই হয়ে পড়েছিল।
অমিতের বাবা বাবলু দেবনাথ হাটে ছাতা বিক্রি করে সংসার চালান। লকডাউনের পর আগের মতো ব্যবসা না থাকায় টান পড়েছে রোজগারে। ছাতা বিক্রির টাকায় সংসার চললেও, সেই টাকায় মেধাবী ছেলের পড়াশোনার খরচ চালাবেন কী করে, তা নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন অমিতের বাবা-মা। মোট ছ’টা সেমিস্টার। প্রত্যেক সেমিস্টারের জন্য খরচ ৪০ হাজার টাকা করে। দরকার প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা। বাধ্য হয়ে বাড়ি বন্ধক রেখে ছেলের পড়ার খরচ যোগানোর চিন্তাভাবনা করে পরিবার। কিন্তু সেই খবর পেয়েই অমিতের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী। সোমবার উদয়পেরের বাড়িতে গিয়ে অমিতের হাতে এক লক্ষ টাকার চেক তুলে দিলেন তিনি। সেইসঙ্গে প্রতি বছরে এক লক্ষ টাকা করে, তিন বছরে মোট তিন লক্ষ টাকা দিয়ে অমিতের পড়াশোনার সমস্ত খরচ বহন করার আশ্বাসও দিয়েছেন। সেইসঙ্গে ভবিষ্যতে অমিত যেন আরও সাফল্য পায়, সেই আশীর্বাদও করেছেন তিনি।
আরও পড়ুন – আনিস খান হত্যাকাণ্ডে রাজ্যের রিপোর্ট নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি আইনজীবীর
রায়গঞ্জের বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণী বলেছেন, ‘প্রথমেই এই অসাধারণ ফল করার জন্য আমি অমিত দেবনাথকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। আইআইটি-তে গোটা দেশের মধ্যে ৫৮ র্যাঙ্ক করে অমিত শুধু রায়গঞ্জ নয়, গোটা উত্তর দিনাজপুর জেলাকে গর্বিত করেছে।আমি জানতে পারি আর্থিক অনটনের জন্য আগামী দিনে ওর পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু অসুবিধা ছিল। ছ’টা সেমিস্টার। প্রত্যেক সেমিস্টারের জন্য জন্য যে খরচ, তা আমি দেব। প্রত্যেক বছর এক লক্ষ টাকা করে, তিন বছরে মোট তিন লক্ষ টাকা ওকে দেব। যাতে ওর পড়াশুনোয় কোনও অসুবিধা না হয়। এবার আর বাড়ি বন্ধক রাখতে হবে না। অমিত ভবিষ্যতে ভালো চাকরি পেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয় আরও বড় বাড়ি বানাবে।’ বিধায়কের কাছ থেকে সাহায্য পেয়ে স্বপ্ন পূরণ হতে চলায় স্বাভাবতই খুশি অমিত। তিনি বলেছেন, ‘মাননীয় বিধায়ক আমার বাড়িতে এসেছিলেন। উনি আমার পড়াশোনার সমস্ত খরচ বহন করবেন বলে জানিয়েছেন। এর জন্য আমি তাঁর কাছে চির কৃতজ্ঞ থাকব।
আরও পড়ুন – সোশ্যাল মিডিয়ায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে পোস্ট, পুলিশের জালে যুবক
বাড়ি বন্ধক রেখে আর ছেলের স্বপ্ন পূরণ করতে না হওয়ায় স্বভাবতই খুশি অমিতের পরিবার। অনেকটাই দুশ্চিন্তামুক্ত হলেন বলে জানিয়েছেন অমিতের মা অদিতি দেবনাথ। কৃতী ছাত্রের মা বলেছেন, ‘বিধায়ক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ায় আমার ছেলে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে। এতে আমরা খুবই খুশি। অনেকটাই দুশ্চিন্তা মুক্ত হলাম। আমরা ওঁনার কাছে চির কৃতজ্ঞ।’ আইআইটি-তে সারাদেশের মধ্যে ৫৮ র্যাঙ্ক করেও অর্থের অভাবে রীতিমতো হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন অমিত ও তাঁর পরিবার। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে বিধায়কের পাশে দাঁড়ানোটা অমিতের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিল, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিধায়ক হওয়ার আগে থেকেই সামাজসেবামূলক নানান কাজ করে চলেছেন কৃষ্ণ কল্যাণী। রায়গঞ্জবাসীর কোনও সমস্যার কথা শুনলেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াটা যেন অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন তিনি। দুঃস্থ মানুষদের জন্য প্রতিদিন রায়গঞ্জের বিভিন্ন প্রান্তে রুটি-সব্জী বিলি, অসহায় মানুষদের গৃহনির্মাণ, শীতবস্ত্র বিলি, করোনাকালে এলাকাবাসীর মধ্যে ফল বিতরণ-সহ একাধিক মানবিক উদ্যোগ নিয়েছেন। এবার অমিতের স্বপ্নপূরণে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে তা আরও একবার প্রমান করলেন রায়গঞ্জের বিধায়ক।