বাংলার খবর
গড়িয়াহাটে জোড়া খুনের কিনারা করে ফেলল পুলিশ, ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজতে পরিচারিকা মিঠু

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ : গড়িয়াহাটের কাঁকুলিয়া রোডের জোড়া খুনের ঘটনার কিনারা করে ফেলল কলকাতা পুলিশ। বৃহস্পতিবার কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র নিজেই এই কথা জানিয়েছেন। তবে খুনের রহস্য উন্মোচন হলেও এখনও সব অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। এই ঘটনায় গতকালই ডায়মন্ড হারবার থেকে মিঠু হালদার বলে এক মহিলাকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। ওই মহিলা খুন হওয়া কর্পোরেট কর্তা সুবীর চাকীর গড়িয়াহাটের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন।
মিঠু হালদারকে বৃহস্পতিবার ১৪ দিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুবীর চাকী এবং তাঁর গাড়ির চালক রবীন মন্ডল খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হলেন এই মিঠু হালদারের বড় ছেলে ভিকি। এই ভিকি এবং খুনের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত তাঁর তিন-চার জন বন্ধুর খোঁজ করছে পুলিশ। গতকাল ডায়মন্ড হারবার থেকে মিঠুকে গ্রেফতার করে লালবাজারে নিয়ে এসে জিজ্ঞাসাবাদের পরই জোড়া খুনের কিনারা করে ফেলে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মিঠু এবং তাঁর ছেলে ভিকি জমির দালালি করতেন। এইসব করেই বেশ কিছু টাকা জমিয়েছিলেন ভিকি। আর সেই টাকা দিয়েই সুবীর চাকীর গড়িয়াহাটের বাড়িটি কিনতে আগ্রহী হয়েছিলেন। কিন্তু সুবীরবাবু দেড় কোটি টাকা দাম চাওয়ায় পিছিয়ে আসেন ভিকি।
এরপরই সুবীরবাবুর থেকে টাকা হাতানোর পরিকল্পনা শুরু করেন। সেই কারণেই কলকাতায় একটি সিকিউরিটি গার্ডের চাকরি নিয়ে থাকতে শুরু করেন ভিকি। পুলিশের অনুমান খুনের দিন ভিকি ও তাঁর তিন-চারজন বন্ধু মিলে সুবীর বাবুকে পরিচয় লুকিয়ে ফোন করে বাড়িটি দেখতে আসার কথা বলেন। সেই কারণেই সুবীরবাবু সেই দিন বাড়িতে গিয়েছিলেন। কিন্তু সুবীরবাবু ভিকিকে চিনে ফেলেছিলেন। সেই কারণেই সদলবলে সুবীরবাবুকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি আঘাত করে ভিকি ও তার দলবল। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে তিনতলার ঘর থেকে রবীন মন্ডল নেমে এলে তাঁকেও খুন করে তারা। এরপরই বালিগঞ্জ স্টেশনে অপেক্ষারত মিঠু হালদারকে রক্তাক্ত জামা-কাপড় দিয়ে ভিকি তাঁর কর্মস্থলে চলে যায়। সেই জামা-কাপড় নিয়ে ট্রেনে করে ডায়মন্ডহারবার ফিরে যান মিঠু। সেই কারণেই তদন্তে নেমে পুলিশের কুকুর বালিগঞ্জ স্টেশন অবধি পৌঁছে গিয়েছিল। কিন্তু গত সোমবার সেই রক্তাক্ত জামা-কাপড় মিঠুকে কাচতে দেখে ফেলেন তাঁর বাড়িওয়ালা।
সেই সময় তাঁর সন্দেহ হয়। মিঠুকে জিজ্ঞেস করে জানতে পারেন, একটা দুর্ঘটনায় জামাকাপড়ে রক্ত লেগে গিয়েছে। কিন্তু তাতেই সন্দেহ হয় বাড়ির মালিকের। ঘটনাচক্রে এর পরেই বুধবার মিঠুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মিঠুকে কলকাতায় নিয়ে এসে জেরা করার পরে তদন্তকারীরা বুঝতে পারেন, তিনিই খুনি-দলের অন্যতম পাণ্ডা। এর পরেই একের পর এক তথ্য জানতে পারেন গোয়েন্দারা। গোয়েন্দা সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভাব্য বিভিন্ন কারণকে বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজনদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। তাঁরা ঘটনার সময় কোথায় ছিলেন, তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী দল।