বাংলার খবর
মধ্যযুগিও বর্বরতা, দুই বিবাহিত মহিলার সঙ্গে বিয়ে বিজেপির কিষাণ মোর্চার সভাপতির!
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: ‘রক্ষকই ভক্ষক’! মধ্যযুগিও বর্বরতার সাক্ষী থাকলো খেঁজুরি। বিজেপির কিষাণ মোর্চার সভাপতি মানস কামিলার সঙ্গে দুই মহিলার বিয়ে দিল গ্রামবাসীরা! আর এই নিয়ে শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক তরজাও। অভিযোগের তীর তৃণমূলের দিকে। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।
পুরোহিতের মন্ত্র, উলুধ্বনি, বাজনা সহযোগে বাজি ফাটিয়ে, মিষ্টি বিতরণ করে রীতিমতো ধুমধাম করে বিয়ে দেওয়া হল বিজেপি কিষান মোর্চার সভাপতিকে। মানস কামিলার বাড়ি পূর্ব মেদিনীপুর জেলার খেঁজুরি থানার বাঁশগড়া গ্রামে। বাড়ি থেকে কিছু দূরে পাশের গ্রাম খেঁজুরির দেখালি বাজারে মানস কামিলার নিজের সোনার দোকান রয়েছে। প্রায় ২০ বছর ধরে সোনার ব্যবসা করছেন ওই দেখালি বাজারে।
অভিযোগ, গত ৩০ জুন রাতে মানস কামিলা ও তাঁর আত্মীয় দুই মহিলা সহ তিনজনকে নগ্ন করে মারধর করে চুল কেটে নেন। তারই প্রতিবাদে ওই দুই মহিলার সঙ্গে মানস কামিলার দেখালি বাজারের কালী মন্দিরে বাজনা বাজিয়ে, পুরোহিত, নাপিত ডেকে গ্রামবাসীদের সামনেই বিয়ে দেওয়া হয়। পরে সকালে ভ্যান রিক্সায় সবাইকে চাপিয়ে বাজনা বাজিয়ে, বাজী ফাটিয়ে, মিষ্টি বিতরণ করে আম-কাঠাল সহকারে গ্রামে ঘোরানো হয়। অভিযোগ, তৃনমূল বুথ সভাপতি নিখিল পয়রার নেতৃত্বে এই ঘটনা ঘটেছে।
আক্রান্ত তিন জনকে উদ্ধার করে তমলুক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পাল্টা অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা নিখিল পয়রাকে বিজেপির লোক-জন ব্যাপক মারধর করে বলে অভিযোগ। নিখিল পয়রাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কাঁথির দারুয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে এলাকা ছাড়া অভিযুক্ত তৃণমূল নেতার সঙ্গীরা। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার আভিযোগ তুলেছেন দুই নির্যাতিতা মহিলা সহ মানস কামিলা। খেঁজুরি থানায় অভিযোগ করলেও থানা কোনও বেবস্থা নেয়নি বলেই দাবি তাঁদের। ওই তিন জন নির্যাতিতা কাঁথি আদালতে অভিযোগ দায়ের করেছেন।
যদিও এলাকার তৃণমূল অঞ্চল সভাপতি আলাপন দাস দাবি করেছেন, ‘এই ঘটনার সঙ্গে তৃণমূল কোনও ভাবেই জড়িত নয়। সোনার দোকানি মানস কামিলাকে দুই মহিলার সঙ্গে আপত্তি কর অবস্থায় গ্রামবাসীরা ধরে ফেলেন। তারপরে গ্রামবাসীরাই দেখালি বাজারে কালী মন্দিরে বিয়ে দিয়ে দেয়।’ আলাপন দাস আরও আভিযোগ করেন, ‘এই সমস্ত কু-কর্ম থেকে বিরত থাকতে মানস কামিলাকে এর আগেও অনেকবার সাবধান করেছিলেন। কিন্তু মানস কামিলা তা শোনেননি। তাই গ্রামবাসীরা ওই দুই মহিলার সঙ্গে তাঁর শারিরীক সম্পর্ক চলাকালীন ধরে ফেলে। তারপরে গ্রামবাসীরাই বিয়ে দেয়।’
ওই দুই বিবাহিতা মহিলা বর্তমানে দেখালি গ্রাম ছাড়া। দুই মহিলা বাপের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। নির্যাতিতা দুই মহিলা আগে থেকেই বিবাহিতা। তাঁদের স্বামীও রয়েছেন। নির্যাতিতা দুই মহিলার নাম পার্বতী আরি ও মঞ্জু মুখাল। এই ঘটনায় এলাকায় রীতিমতো চাঞ্চল্যে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলেছে উভয় পক্ষই।