প্রতিদিন বসছে হাট, ধ্বংসের পথে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি বন
Connect with us

ভাইরাল

প্রতিদিন বসছে হাট, ধ্বংসের পথে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি বন

Published

on

সোনাঝুরি বন আজ বিপন্ন, হাটের নামে প্রাকৃতিক শোষণ

শুক্র বা শনিবার নয়, এখন প্রতিদিনই বসছে হাট। অথচ, এক সময় শুধু শনিবারেই শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি বনে বসত হাট। সে হাট ছিল স্থানীয় শিল্পীদের নিজ হাতে তৈরি সামগ্রীর এক মিলনক্ষেত্র। এখন সেই সোনাঝুরি বনজুড়ে প্রতিদিনের ভিড়, হাজার হাজার মানুষ, শত শত দোকান ও গাড়ির চাপে প্রকৃতি আজ দমবন্ধ অবস্থায়

‘রেড আর্থ ফরেস্ট’ নামে খ্যাত লালমাটির এই বনাঞ্চল এক সময় ছিল শান্তিনিকেতনের অন্যতম প্রাকৃতিক আকর্ষণ। কিন্তু এখন তা বিপদের মুখে। এই বিপর্যয়ের প্রেক্ষিতে জাতীয় পরিবেশ আদালত (NGT) নির্দেশ দিয়েছে—বনে সমস্ত নির্মাণকার্য অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। একইসঙ্গে, অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে চার সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা চেয়েছে আদালত

কেন এই পরিস্থিতি?

এই বিষয়ে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তাঁর দাবি, বীরভূম বনবিভাগের নিজস্ব সাইনবোর্ডেই লেখা রয়েছে— “সোনাঝুরি একটি বনভূমি। এখানে সাধারণ মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ।” কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, প্রতিদিন সেখানে বসছে হাট, গজিয়ে উঠছে দোকানপাট ও খাবারের স্টল।

শুরুর দিনগুলোতে ছিল শুধুই স্থানীয় শিল্পীদের হাতে তৈরি পোশাক ও শিল্পপণ্যের বিকিকিনি। পর্যটকের আগমন বাড়তেই ধীরে ধীরে ভিড়ও বাড়ে, সঙ্গে বাড়ে বাণিজ্য। এখন হাটে পাওয়া যাচ্ছে খাবার, প্লাস্টিক পণ্য, এমনকি গ্যাস বা কাঠ জ্বালিয়ে রান্না করা খাবার। যার ফলে বনের পরিবেশে তৈরি হয়েছে ভয়াবহ দূষণ ও অগোছালোতা

Advertisement

আরও পড়ুন – দিঘার জগন্নাথ মন্দির নিয়ে প্রশ্নের মুখে রাজ্য, জনস্বার্থ মামলার অনুমতি দিল হাইকোর্ট

হোটেল-রিসোর্ট বনাঞ্চলে!

সুভাষ দত্তের সবচেয়ে বড় অভিযোগ—বনের গা ঘেঁষে এবং আংশিক বনভূমির মধ্যেও তৈরি হচ্ছে হোটেল ও রিসোর্ট। কীভাবে এসব নির্মাণের অনুমতি মিলছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। আদালতও জানতে চেয়েছে—এই সমস্ত হোটেল কীভাবে ভূগর্ভস্থ জল পাম্প করে ব্যবহার করছে? যদি বৈধ অনুমতি না থাকে, তাহলে প্রশাসন কোনও পদক্ষেপ নিচ্ছে না কেন?

বর্জ্য সমস্যা ও পরিবেশ বিপর্যয়

বনের মধ্যে হাট বসানোর ফলে প্রতিদিন জমছে বিপুল পরিমাণ প্লাস্টিক, থার্মোকল এবং অন্যান্য পরিবেশ-অবক্ষয়ী বস্তু। এই বর্জ্য অপসারণের কোনও সুসংগঠিত ব্যবস্থা নেই। হোটেলগুলোরও নেই কঠিন বা তরল বর্জ্য নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা।

হাটে আসা পর্যটকদের গাড়ি বনের মধ্যেই পার্ক করানো হচ্ছে, যার ফলে গাছপালা ও মৃত্তিকায় ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ছে। গাড়ির ধোঁয়া, শব্দ দূষণ এবং মানুষের অবাধ বিচরণের ফলে বনের বাস্তুতন্ত্র আজ বিপর্যস্ত

Advertisement

আরও পড়ুন – পহেলগাম হামলায় জড়িত জঙ্গিদের খোঁজ দিলেই ২০ লক্ষ টাকার পুরস্কার, বড় পদক্ষেপ পুলিশের

 আদালতের অবস্থান

NGT-এর পূর্বাঞ্চলীয় বেঞ্চ, বিচারপতি বি অমিত স্থালেকর এবং পরিবেশ বিশেষজ্ঞ অরুণকুমার ভার্মা নির্দেশ দিয়েছেন, পরিবেশকর্মীর অভিযোগের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ চার সপ্তাহের মধ্যে লিখিত জবাব দেবে। এরপর মামলার পরবর্তী শুনানিতে আদালত নির্দেশ দেবে।

Dwip Narayan Chakraborty is a dedicated journalist, digital content creator, and web strategist at Bengal Xpress. With a strong background in web design, digital marketing, and news media, he crafts compelling regional and national stories that inform, engage, and inspire. Dwip brings a unique blend of technical expertise and editorial vision, ensuring Bengal Xpress remains at the forefront of digital journalism in West Bengal. When he's not writing or managing the site, he's exploring new tools to innovate online news delivery.

Continue Reading
Advertisement