দেশের খবর
স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া সহবাস কি অপরাধ, মামলা গড়াল সুপ্রিম কোর্টে
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া সহবাস কী অপরাধ? দিল্লি হাইকোর্টের দুই বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে দায়ের হওয়া এই মামলায় দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়লেন আদালতের দুই বিচারপতি রাজীব শাখধের এবং সি.হরিশঙ্কর।
জানা গিয়েছে, আদালতে দায়ের হওয়া ওই মামলায় দুই বিচারপতিই নির্দিষ্ট কোনও মীমাংসায় আসতে পারেননি। যারফলে মামলা এবার গড়াল সুপ্রিম কোর্টে। এবার শীর্ষ আদালতের তিন বিচারপতির বেঞ্চ ঠিক করবে বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া সহবাস অপরাধ কি অপরাধ নয়।
বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধমূলক কিনা সেই প্রশ্ন নিয়ে দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি রাজীব শাকধের (Justice Shakdher) এবং বিচারপতি হরিশঙ্করের (Justice Shankar)বেঞ্চে দায়ের হয়েছিল মামলা। জমা পড়েছিল একাধিক পিটিশন। সেই পিটিশনগুলির শুনানি শেষে একই সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি দুই বিচারপতি।
আরও পড়ুন: অতিমারির মাঝেই চোখ রাঙাচ্ছে টম্যাটো ফ্লু, আক্রান্ত ৮০
জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে প্রথম ফাইল হওয়া পিটিশনেই প্রশ্ন উঠেছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ধারা নিয়ে। IPC 375 ধারার সেকশন ২ অনুযায়ী ১৮ বছরের উর্ধ্বে কোনও মহিলার সঙ্গে তাঁর স্বামী সম্মতি ছাড়া, বলপূর্বক সঙ্গমে লিপ্ত হলে তাতে ধর্ষণের ধারা লাগু হয় না। একমাত্র নাবালিকার সঙ্গে বিবাহের পর শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হলে ধর্ষণের অভিযোগ অভিযুক্ত হবে স্বামী।
এই আইনকে চ্যালেঞ্জ করে মামলার শুনানিতে বিচারপতি রাজীব শাকধের জানান, স্ত্রীর সম্মতি ছাড়া বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধের মধ্যেই পড়ে। কারণ, এতে একজন নারীর ভাবাবেগ-অনুভূতিতে আঘাত করা হয়। যা তাঁর কাছে লজ্জাজনক। এই ধরণের ঘটনায় নারীর নিজের জীবনের অধিকারও লঙ্ঘিত হচ্ছে। যা সংবিধানের ১৪,১৯ এবং ২১-এর পরিপন্থী।
যদিও বিচারপতি রাজীব শাকধেরের এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত প্রকাশ করতে পারেননি তাঁর সহকর্মী তথা বিচারপতি হরিশঙ্কর। তিনি বলেন, ”আমি এর মধ্যে এমন কিছু দেখছি না যা অনুচ্ছেদ ১৪,১৯ এবং ২১-এর পরিপন্থী। এটা স্পষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়।”
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় নয়, রাস্তায় নেমে আন্দোলনের বার্তা অভিষেকের
এই প্রসঙ্গে বিচারপতি হরিশঙ্কর সেকশন ৩৭৬বি ও ১৯৮বির কথা তুলে ধরেন। এরপরই আদালত জানায়, মীমাংসা পেতে মামলাকারীরা সু্প্রিম কোর্টে যেতে পারেন। এখন দেখার বৈবাহিক সম্পর্কে স্ত্রীর অসম্মতিতে শারীরিক মিলন অপরাধ কিনা? তা বলবে শীর্ষ আদালত।
এদিকে এই মামলার রায় নিয়ে দ্বিমত ঘোষণা হতেই সোশ্যাল মিডিয়াজুড়েও দেখা গিয়েছে ভিন্ন প্রতিক্রিয়া।
Disagree with the split verdict given by Justice Hari Shankar refusing to criminalise marital rape. Right to say “no”,women’s right to her own body, right to live with dignity under Art21 of Constitution is higher than “institution of marriage”.Hope Supreme Court ensures justice.
— Jaiveer Shergill (@JaiveerShergill) May 12, 2022
এই বিষয়ে কংগ্রেস নেতা জয়বীর শেরগিল টুইট করে বলেন, “বিচারপতি হরিশঙ্কর বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধীকরণ করতে অস্বীকার করে দেওয়া বিভক্ত রায়ের সঙ্গে একমত নন। শারীরিক মিলনে স্ত্রীর “না” বলার অধিকার, নিজের শরীরের প্রতি নারীর অধিকার, সংবিধানের ২১অনুচ্ছেদে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচার অধিকার “বিবাহ নামক প্রতিষ্ঠান” থেকে অনেক উচ্চতর। আশা করি সুপ্রিম কোর্ট ন্যায়বিচার নিশ্চিত করবে।”