বাংলার খবর
বাঁকুড়ায় যুব তৃণমূল নেতাকে খুনের হুমকি দিয়ে পড়ল মাও পোস্টার!

বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: রাজ্যে আবারও পড়ল মাওবাদী পোস্টার। এবার স্থানীয় তৃণমূল নেতাকে খুনের হুমকি দিয়ে লেখা মাওবাদী পোস্টার ঘিরে রীতিমতো চাঞ্চল্য ছড়াল বাঁকুড়ার ছাতনা থানার কেন্দুয়া গ্রামে। রবিবার সকালে গ্রামের রাস্তায় ইটের গাদায় দু’টি পোস্টার দেখতে পান স্থানীয়রা।
পোস্টার দু’টিতে স্থানীয় যুব তৃণমূল নেতা জয়ন্ত দাসকে হুমকি দিয়ে লেখা রয়েছে, ‘জয়ন্ত দাস তোর দিন শেষ। তুই মরবি।’ সাদা কাগজের উপর লাল কালিতে লেখা এই পোস্টারের নিচে লেখা রয়েছে মাওবাদী। পোস্টার দু’টি নজরে আসতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনায় নিরাপত্তা চেয়ে ছাতনা থানার পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই যুব তৃণমূল নেতা। যদিও প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ ও স্থানীয়দের বেশিরভাগই মনে করছেন এই পোস্টারের সঙ্গে মাওবাদীদের কোনও যোগ নেই। স্থানীয় রাজনৈতিক বা পারিবারিক শত্রুতার জেরে মাওবাদীদের নাম করে কেউ এই পোস্টার দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। রাজ্যে বর্তমানে মাওবাদীদের কোনও অস্তিত্ব নেই বলেই দাবি করে আসছে রাজ্য সরকার। কিন্তু হামেশাই জঙ্গলমহল, বাঁকুড়া, মেদিনীপুর, পুরুলিয়ার বিভিন্ন এলাকায় মাওবাদীদের পোস্টার উদ্ধার হচ্ছে। যদিও প্রতিটি ক্ষেত্রেই তদন্তের পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, মাওবাদী নয়, স্থানীয় দুষ্কৃতিরাই মাওবাদীদের নাম করে পোস্টার দিয়েছে। কিন্তু সেই দাবি যে ভুল, তা সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের দেওয়া রিপোর্টে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্য পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের পক্ষ থেকে রাজ্যের সমস্ত প্রশাসনিক বিভাগকে একটি রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্টে পরিষ্কার করে বলা হয়েছে, জঙ্গলমহলে মাওবাদীরা আবারও সক্রিয় হয়ে উঠেছে। শুধু তাই নয়, কলকাতাতেও বাড়ছে মাও সক্রিয়তা! কলকাতার নোনাডাঙ্গা অঞ্চলেও মাওবাদীদের সক্রিয়তা রয়েছে বলেও বিস্ফোরক তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে ওই রিপোর্টে। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, রাজ্যে নাশকতার ছক কষছে মাওবাদীরা। পাশের সমস্ত রাজ্যগুলো থেকে প্রচুর পরিমাণে গোলাবারুদ, অত্যাধুনিক অস্ত্র এবং বিস্ফোরক রাজ্যে জমা করছে মাওবাদীরা। তারমধ্যে ইম্প্রভাইজ এক্সপ্লোসিভ ডিভাইস রয়েছে। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তাও কঠোর করা হচ্ছে। সামনেই রাজ্যে পৌর নির্বাচন। তাই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার কথা রয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। গোয়েন্দা বিভাগের এই রিপোর্টের পরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আটোসাঁটো করা হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। এর মধ্যেই আবারও বাঁকুড়ায় মাওবাদীদের নাম করে পোস্টার পড়ায় রাজ্যে মাও সক্রিয়তা নিয়ে জল্পনা বেড়ে গেল।