বাংলার খবর
দেশকে ‘এজেন্সি রুল’ থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে স্বায়ত্তশাসনের দাবি মমতার
বেঙ্গল এক্সপ্রেস নিউজ: দেশে এজেন্সি রুল চলছে। তাই ইডি, সিবিআই-এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকো স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার দাবি তুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সোমবার নবান্নে সাংবাদিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই রাজনৈতিক স্বার্থে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করছে দেশের সরকার।
সোমবার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘বিরোধী রাজ্যগুলোকে অপদস্থ করছে কেন্দ্রীয় সরকার। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এজেন্সিগুলোকে দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। সব এজেন্সিগুলোকে ব্যবহার করে তুঘলকি কায়দায় সরকার চালাতে চাইছে কেন্দ্র।’ এরপরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে নাম না করে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, ‘সব এজেন্সি খারাপ নয়। ওদের সঠিকভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না। কারণ, দেশের স্বায়ত্তশাসন দুজনের হাতে রয়েছে। এরকম নিকৃষ্টমানের রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ হিটলার, মুসোলিনি, স্তালিনও করেননি। আমি দেশকে ভালোবাসি। ওরা দেশকে বিক্রি করে দিচ্ছে। যা চলছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। ক্ষমতায় এসে এভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা উচিত নয়। এজেন্সিগুলোকে নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে দিতে হবে। দেশকে এজেন্সি রুলের হাত থেকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়া হোক। কেন্দ্র শুধু ওদের বেতন দিক। এজেন্সি রুলের হাত থেকে দেশ এবং দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে সাহিত্য শাসন দেওয়া খুবই দরকার। এজেন্সিগুলোকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই জোর করে ব্যবহার করা হচ্ছে। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে স্বায়ত্তশাসন দেওয়ার দাবি দেশের মধ্যে আমিই প্রথম তুললাম।’ এরপরই লালু প্রসাদ যাদবের প্রসঙ্গ টেনে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে আক্রমণ করে বলেন, ‘লালু প্রসাদ যাদব এত দিন জেলে ছিলেন। জেল থেকে ফেরার পরই তাঁর বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়। সামনে বিহারের নির্বাচন রয়েছে। নির্বাচন এলেই ওরা এসব করে। কজন বিজেপি নেতাকে দুর্নীতি করার জন্য গ্রেফতার করা হয়েছে?’
ইডি, সিবিআই, এনআইএ- এর মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার রাজ্যকে অপদস্থ করার চেষ্টা করছে বলে বরাবরই অভিযোগ করে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার সঙ্গে লেনদেন, গরু ও কয়লা পাচার, ভোট পরবর্তী হিংসা, বগটুইই, হাঁসখালি হত্যা, এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতির মতো একাধিক মামলার তদন্ত করছে ইডি ও সিবিআই। সেই সমস্ত মামলায় সস্ত্রীক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পরেশ অধিকারী, অনুব্রত মণ্ডলের মতো হেভিওয়েট নেতাদের তলব করে জিজ্ঞাসাবাদ চালাচ্ছে সিবিআই, ইডি। যার ফলে অস্বস্তি বেড়েছে রাজ্য সরকার ও শাসক দলের। সেই কারণেই কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলোকে অপব্যবহারের অভিযোগ তুলে সোমবার আরও একবার বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সুর চড়ালেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।